শ্রেণিকক্ষে লোহালক্কড়ের ব্যবসা

নিজস্ব প্রতিবেদক |

পুরান ঢাকার নয়াবাজার এলাকার ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হাম্মাদিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের দুটি কক্ষে পাঠদানের বদলে চলছে লোহার দরজা-জানালা বিক্রির কারবার। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ রীতিমতো চুক্তি করে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে এ সুযোগ করে দিয়েছে। করোনাকালে সশরীরে পাঠদান বন্ধ থাকার সময়ে এই চুক্তি হয়। এখন সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠদান শুরু হলেও সেখানে ব্যবসায়িক কার্যক্রম বন্ধ হয়নি। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দাবি করছে, কক্ষ দুটিতে পাঠদান করা হতো না, পরিত্যক্ত ছিল। তবে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালনা পর্ষদের সাবেক কর্মকর্তা এবং শিক্ষার্থীরা বলছেন, করোনার আগেও সেখানে পাঠদান হয়েছে। এখনও রয়েছে ব্ল্যাকবোর্ড।

সংশ্নিষ্টরা জানান, এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে তিন বছরের জন্য চুক্তি করে অগ্রিম ছয় লাখ টাকা নিয়েছে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। আর প্রতি মাসে ভাড়া নেওয়া হচ্ছে ২৫ হাজার টাকা। গত ৫ জুলাই স্বাক্ষরিত চুক্তিপত্রটি কার্যকর হয়েছে ১ আগস্ট থেকে। সেটির একটি অনুলিপি রয়েছে। তাতে দেখা যায়, ২০২৪ সালের ৩০ জুলাই পর্যন্ত চুক্তিটি বলবৎ থাকবে। ভাড়াটে বিদ্যুৎ ব্যবহার করতে পারবেন, তবে তাকেই বিল দিতে হবে। কিন্তু গ্যাস-পানি ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।

সরেজমিন দেখা যায়, নয়াবাজারের ২ নম্বর হার্নি স্ট্রিটে হাম্মাদিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের একটি প্রবেশপথ। বিদ্যালয়ের এক পাশের রাস্তা লাগোয়া দুটি কক্ষ লোহালক্কড়ের দোকান হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে। এ জন্য দেয়াল ভেঙে দরজাও বানিয়ে দেওয়া হয়েছে। ভেতরে ঢুকে দেখা গেল, নানারকম লোহা-স্টিলের দরজা বানিয়ে রাখা হয়েছে। কর্মরতরা জানালেন, দুই মাস আগে তারা কক্ষ দুটি ভাড়া নিয়েছেন। আগে এখানে স্কুলের পাঠদান হতো।

এ ব্যাপারে বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি আহসানুল কবীর ওরফে প্রিন্স রবিন বলেন, এসব কক্ষে কোনো শ্রেণির পাঠদান হতো না। আগে একসময় এটি গুদাম ছিল। সর্বশেষ পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়েছিল। বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির দুই কর্মচারী সেখানে থাকতেন। করোনাকালে বিদ্যালয়ের আয় কমে যাওয়ায় শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা বকেয়া পড়ে। সেই অবস্থা কাটিয়ে উঠতে কক্ষ ভাড়া দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।

অবশ্য বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ সেলিম বলেন, বিদ্যালয়ের কোনো পরিত্যক্ত কক্ষ ছিল না। কোনো কক্ষ আগে গুদাম হিসেবে ভাড়াও দেওয়া হয়নি।

বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সাবেক কার্যনির্বাহী সদস্য সালেহ আহমেদ ভূঁইয়া বলেন, ওই দুটি কক্ষে প্রভাতি শিফটে দ্বিতীয় শ্রেণি ও দিবা শিফটে ষষ্ঠ শ্রেণির 'ডি' শাখার ক্লাস হতো। পাশাপাশি বিদ্যালয়ের পাঠদানের পর পড়ালেখায় দুর্বল শিক্ষার্থীদের জন্য বিনামূল্যে বিশেষ কোচিং করানো হতো। কখনোই ওগুলো পরিত্যক্ত বা গুদাম ছিল না। পরে একটি কক্ষে একজন কেরানি থাকতে শুরু করেছিলেন।

বিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র ইমরান হোসেন জন বলেন, ওই কক্ষ দুটি বরাবর শ্রেণিকক্ষ হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসছিল। এটি কখনও গুদাম বা পরিত্যক্ত ছিল বলে মনে পড়ে না।

বিদ্যালয়টির সপ্তম শ্রেণির এক ছাত্র জানায়, করোনার ছুটি শুরুর আগে সেখানে শিশু শ্রেণির ক্লাস এবং বিদ্যালয়ের সময়ের পর দুপুর ২টা থেকে কোচিং করানো হতো।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
দেড় মাস পর ক্লাসে ফিরছেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা, স্থগিত পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা - dainik shiksha দেড় মাস পর ক্লাসে ফিরছেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা, স্থগিত পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলের সংখ্যা বাড়াতে চায় সরকার - dainik shiksha অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলের সংখ্যা বাড়াতে চায় সরকার চাকরির বয়স নিয়ে শিক্ষামন্ত্রীর চিঠির পর সমাবেশের ডাক দিলো ৩৫ প্রত্যাশীরা - dainik shiksha চাকরির বয়স নিয়ে শিক্ষামন্ত্রীর চিঠির পর সমাবেশের ডাক দিলো ৩৫ প্রত্যাশীরা স্কুলে গ্রীষ্মের ছুটি কি এপ্রিলে এগিয়ে আনা দরকার? - dainik shiksha স্কুলে গ্রীষ্মের ছুটি কি এপ্রিলে এগিয়ে আনা দরকার? কলেজের শিক্ষকদের ডিজিটাল বদলির আবেদন শুরু রোববার - dainik shiksha কলেজের শিক্ষকদের ডিজিটাল বদলির আবেদন শুরু রোববার বুটেক্সের প্রথম সমাবর্তন ৭ সেপ্টেম্বর - dainik shiksha বুটেক্সের প্রথম সমাবর্তন ৭ সেপ্টেম্বর শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি: শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি: শিক্ষা মন্ত্রণালয় দুর্যোগে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছুটিতে বিশেষ কমিটি গঠনে নীতিমালা হবে: শিক্ষামন্ত্রী - dainik shiksha দুর্যোগে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছুটিতে বিশেষ কমিটি গঠনে নীতিমালা হবে: শিক্ষামন্ত্রী দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0026490688323975