শ্রেষ্ঠ প্রতিষ্ঠান প্রধান-শিক্ষক বরখাস্ত

দৈনিকশিক্ষা প্রতিবেদক |

জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা সপ্তাহ পদক বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেনের কাছ থেকে পদক গ্রহণে `অস্বীকৃতি' জানানো ও `বিশৃঙ্খলা' সৃষ্টির অভিযোগে তিনজন শিক্ষককে বরখাস্ত করা হয়েছে। তাদের মধ্যে জাতীয় পর্যায়ের শ্রেষ্ঠ নির্বাচিত হওয়া প্রধান শিক্ষক ও শ্রেষ্ঠ সহকারী শিক্ষক রয়েছেন।  তবে, তাদের বিরুদ্ধে ওঠা সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তারা। সহকর্মীদের দাবি এই তিনজন খুবই ভালো শিক্ষক। 

তিন শিক্ষক হলেন, রাজধানীর মোহাম্মদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক খায়রুন নাহার লিপি, রাজবাড়ির বালিয়াকান্দি উপজেলার স্বাবলম্বী ইসলামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শহিদুল ইসলাম এবং জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার হিন্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. মাহবুবুর রহমান। ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দের জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা সপ্তাহ পদক প্রতিযোগিতায় প্রধান শিক্ষক মো. শহিদুল ইসলাম জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষক খায়রুন নাহার লিপি শ্রেষ্ঠ সহকারী শিক্ষক নির্বাচিত হয়েছিলেন। 

মো. শহিদুল ইসলাম ও খায়রুন নাহার লিপি

বৃহস্পতিবার ওই তিন শিক্ষককে বরখাস্ত করে আলাদা আদেশ জারি করে ঢাকা, রাজবাড়ী ও জয়পুরহাট জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস। 

ঢাকার জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আবদুল আজিজ দৈনিক শিক্ষাডটকমকে সহকারী শিক্ষক খায়রুন নাহার লিপিকে সাময়িক বরখাস্ত করার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, সহকারী শিক্ষিকা খায়রুন নাহার লিপি জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা সপ্তাহ পদক বিতরণ অনুষ্ঠানে গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মহোদয়ের কাছ থেকে পদক গ্রহণে অস্বীকৃতি জানিয়ে ‘মিডিয়ায়’ সাক্ষাৎকার দেন ও অন্যদের সাক্ষাৎকার দিতে তিনি উৎসাহিত করে অনুষ্ঠানের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছিলেন। তিনি ওই অনুষ্ঠানের মহড়ায়ও তিনি বিশৃঙ্খলা করেছিলেন। যা সরকারি কর্মচারী শৃঙ্খলা ও আচরণ পরিপন্থি। তাই সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা-২০১৮ এর ১২ (১) ধারা মোতাবেক তাকে সরকারি চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। বরখাস্তকালীন সময়ে তিনি খোরাকী ভাতা পাবেন। 

বালিয়াকান্দির উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আশরাফুল হক প্রধান শিক্ষক মো. শহিদুল ইসলামকে বরখাস্ত করার বিষয়টি নিশ্চিত করে দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, বালিয়াকান্দি উপজেলার স্বাবলম্বী ইসলামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শহিদুল ইসলামকে বরখাস্ত আদেশ বৃহস্পতিবার বিকেলে পেয়েছি। জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা সপ্তাহ পদক বিতরণ অনুষ্ঠানে গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রীর কাছ থেকে সনদ গ্রহণে অস্বীকৃতি জানিয়ে মিডিয়ায় সাক্ষাৎকার দেয়ার অভিযোগ রাজবাড়ী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস তাকে বরখাস্ত করেছেন। 

এদিকে বরখাস্ত হওয়ার শিক্ষক মো. মাহবুবুর রহমান নিজেই সাময়িক বরখাস্তের বিষয়টি দৈনিক শিক্ষাডটকমকে নিশ্চিত করেছেন। 

এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে চাইলে শ্রেষ্ঠ সহকারী শিক্ষিকা খায়রুন নাহার লিপি দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, করোনার আগে প্রতি বছর জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা সপ্তাহ পদক শ্রেষ্ঠ শিক্ষকদের হাতে তুলে দিতেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আমাদেরও প্রত্যাশা ছিলো মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে পদক নেবো। কিন্তু আমরা জানতে পারলাম গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মহোদয় আমাদের পদক তুলে দেবেন। আমরা সানন্দে পদক নিয়েছি। এ জন্য মন খারাপও করিনি। তবে, এক সহকর্মী অনুষ্ঠান স্থলে ভিডিও করলে সেখানে বলেছিলাম, প্রতাশা ছিলো মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে পদক নেবো।  তিনি সাংবাদিক নন। 

তিনি আরো বলেন, আমরা প্রতিমন্ত্রী মহোদয়ের হাত থেকে পদক নিতে অস্বীকৃতি জানাইনি। আনন্দের সঙ্গে পদক গ্রহণ করেছি। কিন্তু জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস পদক নিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে সাক্ষাৎকার দিয়েছি বলে আদেশে উল্লেখ করেছে। এটা মিথ্যা। আমি প্রত্যাশার কথা জানিয়েছি, পদক নিতে অস্বীকৃতি জানাইনি। বরখাস্তের আগে তাকে শোকজ বা কৈফয়ত তলব করা হয়নি বলেও দাবি করেন এ শিক্ষিকা।

এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে শ্রেষ্ঠ প্রধান শিক্ষক মো. শহিদুল ইসলামের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তা সম্ভব হয়নি। একাধিকবার চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

শিক্ষক মো. মাহবুবুর রহমান দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, জয়পুরহাট জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস থেকে আমাকে বরখাস্ত করে আদেশ জারি করা হয়েছে। আদেশটি পেয়েছি। আসলে আমি ওই দিন নিজ উৎসাহে প্রতিষ্ঠান থেকে ছুটি নিয়ে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা পদক অনুষ্ঠানে গিয়েছিলাম। সেখানে শিক্ষার্থীরা বলছিলেন তারা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পদক নিতে চান। তাদের বক্তব্য আমি ভিডিও করি। পরে ওই ভিডিওতে বক্তব্য দেয়া কয়েকজন শিক্ষক আমার কাছ থেকে ভিডিও ক্লিপটি নেন। পদক পাওয়া শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশা ছিলো মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পদক নেয়ার। তারা এ বিষয়েই কথা বলেছেন ও আমি তা ভিডিও করেছিলাম। ভিডিও করলেই কি সাংবাদিক হওয়া যায়? 

শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক শিক্ষার ইউটিউব চ্যানেলের সাথেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।

দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল  SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
সরকার পরিচালনায় ভুলত্রুটি থাকলে ধরিয়ে দিন, সম্পাদকদের ড. ইউনূস - dainik shiksha সরকার পরিচালনায় ভুলত্রুটি থাকলে ধরিয়ে দিন, সম্পাদকদের ড. ইউনূস এইচএসসি ফল তৈরি: পরীক্ষার্থীদের প্রয়োজনীয় তথ্য চেয়েছে বোর্ড - dainik shiksha এইচএসসি ফল তৈরি: পরীক্ষার্থীদের প্রয়োজনীয় তথ্য চেয়েছে বোর্ড শিক্ষকদের পদত্যাগে বাধ্য ও হেনস্তা নয়: শিক্ষা উপদেষ্টা - dainik shiksha শিক্ষকদের পদত্যাগে বাধ্য ও হেনস্তা নয়: শিক্ষা উপদেষ্টা স্কুল-কলেজ শিক্ষকদের আগস্ট মাসের এমপিওর চেক ছাড় - dainik shiksha স্কুল-কলেজ শিক্ষকদের আগস্ট মাসের এমপিওর চেক ছাড় এনটিআরসিএর চেয়ারম্যান পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের ডিজি হলেন - dainik shiksha এনটিআরসিএর চেয়ারম্যান পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের ডিজি হলেন ছাত্রী হয়রানির অভিযোগ, উত্তরা ইউনিভার্সিটি উত্তপ্ত - dainik shiksha ছাত্রী হয়রানির অভিযোগ, উত্তরা ইউনিভার্সিটি উত্তপ্ত ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের হাত ভাঙলেন বরখাস্ত প্রধান শিক্ষক - dainik shiksha ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের হাত ভাঙলেন বরখাস্ত প্রধান শিক্ষক সাংবাদিক নিপীড়নের আইনগুলো এখনই বাদ দেয়ার প্রস্তাব - dainik shiksha সাংবাদিক নিপীড়নের আইনগুলো এখনই বাদ দেয়ার প্রস্তাব মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার চলতি দায়িত্ব দিতে আবেদন আহ্বান - dainik shiksha মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার চলতি দায়িত্ব দিতে আবেদন আহ্বান শিরীন শারমিনের পদত্যাগে স্পিকার পদে কি শূন্যতা তৈরি হলো - dainik shiksha শিরীন শারমিনের পদত্যাগে স্পিকার পদে কি শূন্যতা তৈরি হলো দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.00301194190979