শ্রেষ্ঠ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধানের মুকুট মীরপুর বাংলা উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল খোশনবীশের। আর জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ ২০১৯-এ মিরপুর এলকার শ্রেষ্ঠ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মীরপুর বাংলা উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়। প্রতিষ্ঠানটির সব জটিলতা দূর করে মিরপুর থানার সেরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মর্যাদায় নিয়ে এসেছেন অধ্যক্ষ খোশনবীশ। স্থানীয় সাংসদ ইলিয়াস মোল্লা ও তাঁর পরিবারবর্গের প্রত্যক্ষ ভূমিকায় করোনা মহামরির মধ্যেও নিয়মিত বেতন-ভাতা পরিশোধ করা হচ্ছে শিক্ষক-কর্মচারীদের।
যোগদানের অল্পদিনের মধ্যেই শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মন জয় করেছেন অধ্যক্ষ খোশনবীশ। সহজেই শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের আপন করে নিতে পেরেছেন তিনি। প্রতিষ্ঠানটি নিয়ে অনেক আলোচনা সমালোচনা থাকলেও দায়িত্ব নেয়ার বছর খানেকের মধ্যেই বেশিরভাগ সমস্য সমাধানের উদ্যোগ নিয়েছেন অধ্যক্ষ। নিজ দক্ষতায় বহুভাগে বিভক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের ঐক্যবদ্ধ করেছেন। উন্নয়ন করেছেন পাঠদানেরও। তাই, মিথুন বিশ্বাস নামের দশম শ্রেণির একজন শিক্ষার্থী থানার সেরা ছাত্রের মর্যাদায় ভূষিত হয়েছেন।
অধ্যক্ষ খোশনবীশ দায়িত্ব নেয়ার পর প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী সংখ্যাও বেড়েছে, বেড়েছে প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার মান এবং অবকাঠামোরও উন্নয়ন হয়েছে। দীর্ঘদিনের অবহেলিত এ প্রতিষ্ঠানটি এমপিওভুক্ত হয়েছে। পূরণ হয়েছে শিক্ষকদের স্বপ্ন। দীর্ঘদিনের দূর হয়েছে শিক্ষকদের চাকরি নিয়ে অনিশ্চয়তা।
অধ্যক্ষ মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল খোশনবীশ দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, ‘এটা টিম ওয়ার্ক আমি টিমের ক্যাপ্টেন। সব ক্যাপ্টেন ইচ্ছে করলেই তো একাই গোল করতে পারেন না। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এটা করতে হয়। প্রশাসনকে সব সময় নিরপেক্ষ থাকতে হয়। আগে যারা ছিলেন বিভাজনের নীতি গ্রহণ করেছিলেন। এক পক্ষকে হাতে রেখে অপর পক্ষকে শাসন করতে চাইতেন, ফলে জটিলতা তৈরি হতো। যে পক্ষ বঞ্চিত হতো তারা ক্ষুব্ধ হয়ে কিছু করতো যা আপাতদৃষ্টিতে প্রতিষ্ঠানের ভাবমূর্তি নষ্ট করতো ‘
শিক্ষকদের ভেদাভেদ দূর করার ম্যাজিক নিয়ে প্রশ্ন করা হলে অধ্যক্ষ খোশনবীশ বলেন, ‘বয়সে যারা সিনিয়র তাদের আমি সম্মান করি আর তারা আমার পদমর্যাদার সম্মান করেন। এখন পারস্পরিক স্নেহ ও শ্রদ্ধাবোধের জায়গা থেকে স্ব-স্ব দায়িত্ব পালন করছি।’
নিজ সহকর্মীদের প্রশংসা করে অধ্যক্ষ আরও বলেন, সবাই এখন প্রতিষ্ঠানের পক্ষে কাজ করে যাচ্ছে। আমার শিক্ষক পরিবারের প্রত্যেক সদস্যই অত্যন্ত দক্ষ ও যোগ্য। এখানে যারা কাজ করছেন তারা অনেকেই প্রতিষ্ঠান প্রধান হওয়ার যোগ্যতা রাখেন। এখানে বইয়ের লেখক আছেন, কলাম লেখক আছেন যারা নিয়মিত পত্র-পত্রিকায়, ম্যাগাজিনে লেখেন তাদের সবাইকে নিয়েই আমি এগিয়ে যাচ্ছি। শ্রেষ্ঠ শিক্ষকরা হৃদয় দিয়ে পড়ান। তারা বিশ্বজোড়া পাঠশালার ছাত্র, শ্রেণিকক্ষে বসেই বিশ্ব ভ্রমণ করাতে সিদ্ধ হস্ত তারা। মোমবাতির মতো নিজেকে জ্বালিয়ে অন্যকে পথ দেখান তারা। তারাই আমার শিক্ষক, আমি তাদের নিয়ে গর্বিত। কলেজ এতদিন অবহেলিত ছিল এখন এমপিওভুক্ত হয়েছে, শিক্ষকদের বেতন কাঠামোসহ আনুষঙ্গিক অনেক বিষয়ে আগের তুলনায় উন্নতি হয়েছে।
করোনার দুঃসময়ের বিষয়ে তিনি বলেন, আমাদের জানামতে অনেক প্রতিষ্ঠান শিক্ষকদের মাসিক বেতন নিয়মিত দিতে পারছে না। কিন্তু মীরপুর উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয় শত প্রতিকূলতার মধ্যেও প্রতিমাসের এক তারিখেই শিক্ষকদের বেতন ভাতা পরিশোধ করেছে। যা অত্যন্ত কঠিন কাজ ছিল। এ কারণেই শিক্ষক কর্মচারীরা খুশি মনে নিয়মিত রুটিন অনুযায়ী অনলাইনে ক্লাস চালিয়ে যাচ্ছেন।