কৃষিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, জাতীয় সংসদ বা মন্ত্রিপরিষদে আলোচনা ছাড়াই নতুন শিক্ষাক্রম প্রবর্তন হয়েছে। জানি না এর পরিণতি কী। হেসেখেলে পড়াশোনা, পরীক্ষা দিতে হবে না।
গত মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর কাকরাইলে ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ মিলনায়তনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮তম শাহাদাতবার্ষিকী ও শোক দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি (বিটিএ) আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
এ সময় জাতি এই শিক্ষাব্যবস্থা থেকে বেরিয়ে আসবে বলে আশা প্রকাশ করে এ বিষয়ে সর্বস্তরের শিক্ষকদের সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানান কৃষিমন্ত্রী।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত শিক্ষকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনারা শিক্ষক, এতো আপনাদের সাহস, এতো আপনারা হাঙ্গার স্ট্রাইক করেন, এটি নিয়ে আপনারা তো একটি ওয়ার্কশপও করলেন না। একটি আলোচনা সভা বা কর্মশালাও করলেন না। কেনো করলেন না? এ শিক্ষা ব্যবস্থা সঠিক কি না?
তিনি বলেন, আমরা একটি কথা শুনছি, ছেলেমেয়েদের যদি জিজ্ঞেস করা হয়, তোমরা পড়াশোনা করো না কেনো? তারা উত্তরে বলে, আমাদের পরীক্ষা নাই। জানি না এর পরিণতি কী। নিশ্চয় এটি নিয়ে আলোচনা হবে। জাতিও এর থেকে বেরিয়ে আসবে।
ড. আব্দুর রাজ্জাক আরো বলেন, ময়মনসিংহের বিদ্যাময়ী স্কুলের একজন প্রধান শিক্ষিকা বেশ কয়েকবার ভালো শিক্ষক হিসেবে পুরস্কার পেয়েছেন। তাকে আমি একবার আমার নিজ জেলা টাঙ্গাইলে একটি আলোচনা সভায় নিয়ে গিয়েছিলাম। ওই আলোচনা সভায় টাঙ্গাইলের বিভিন্ন ভালো স্কুল-কলেজের শিক্ষকদেরও নিয়ে এসেছিলাম শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে আলোচনার জন্য। বিদ্যাময়ী স্কুলের ওই প্রধান শিক্ষক বললেন, সৃজনশীল শিক্ষা দেশের সর্বনাশ করেছে।
শিক্ষাব্যবস্থার মাধ্যমে কীভাবে সুনাগরিক গড়ে তোলা যায় সে বিষয়ে শিক্ষকরা জোরালোভাবে কথা বলেন না কেনো সে প্রশ্নও করেন কৃষিমন্ত্রী।
শিক্ষকদের পক্ষ থেকে তোলা শিক্ষাব্যবস্থা জাতীয়করণের দাবির বিষয়ে তিনি বলেন, আমি সিনিয়র মিনিস্টার ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য, তবে আমি আপনাদের বলতে পারবো না যে আপনাদের এ দাবি দাওয়াগুলো আমি পূরণ করে দেবো। তবে, এটি আমি বলতে পারি, আমাদের শিক্ষকদের জীবনজীবিকা সুন্দর ও মর্যাদাপূর্ণ করার জন্য অবশ্যই সব সুবিধা দিতে হবে। সেটি সব স্কুলেই সমমানের হওয়া দরকার। সেখানে বৈষম্য থাকবে সেটি হতে পারে না। আমাদের নানা ধরনের শিক্ষা রয়েছে, এটি দুঃখজনক। অনেক ত্যাগের বিনিময়ে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে এদেশে স্বাধীনতা এসেছিলো। সেই দেশে শিক্ষাব্যবস্থার এতো বৈষম্য।
‘বঙ্গবন্ধুর শিক্ষা দর্শন’ শীর্ষক এদিনের আলোচনা সভায় প্রধান আলোচক ছিলেন সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ারম্যান কবির বিন আনোয়ার। অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য ও কবি অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ। বিটিএ সভাপতি মো. বজলুর রহমান মিয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিটিএর সাধারণ সম্পাদক শেখ কাওছার আহমেদ।