সংসদে সাবেক শিক্ষামন্ত্রীর বিচার চাইলেন কামাল মজুমদার

দৈনিক শিক্ষাডটকম প্রতিবেদক |

দৈনিক শিক্ষাডটকম প্রতিবেদক : সদ্য সাবেক শিক্ষামন্ত্রী ড. দীপু মনির বিরুদ্ধে মিরপুরের মনিপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজ ধ্বংসের অভিযোগ তুলেছেন সাবেক শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার। আর এ জন্য ঢাকা-১৫ আসন থেকে নির্বাচিত আওয়ামী লীগের এই সংসদ সদস্য ডা. দীপু মনির বিচারও দাবি করেছেন।  

বুধবার সংসদের বৈঠকে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি একথা বলেন। এর আগে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের বৈঠক শুরু হয়।

সাবেক শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বর্তমান মন্ত্রিসভায় সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়েছেন। তবে কামাল মজুমদার তাঁর বক্তব্যে সাবেক শিক্ষামন্ত্রী উল্লেখ করলেও ডা. দীপু মনির নাম উল্লেখ করেননি। গত সেপ্টেম্বরে মনিপুর উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের অধ্যক্ষ মো. ফরহাদ হোসেনকে অবৈধ ঘোষণা করে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের তদন্ত কমিটি।

তিনি দুই বছরের বেশি সময় ধরে অবৈধভাবে অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করছিলেন উল্লেখ করে কমিটির প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২০ খ্রিষ্টাব্দের ২ জুলাই বয়স ৬০ বছর হওয়ার পরও তার চাকরির মেয়াদ তিন বছর বাড়ায় গভর্নিং বডি। এরপর পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তরেরও তদন্তে ফরহাদ হোসেনের নিয়োগ বিধিসম্মত না হওয়ার কথা জানানো হয়। এ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়ার মধ্যেই বিষয়টি উচ্চ আদালতে গড়ায়। পরে আদালতের নির্দেশে গত বছরের ২৭ ফেব্রুয়ারি প্রতিষ্ঠানের সিনিয়র শিক্ষক মো. জাকির হোসেনকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দিতে নির্দেশ দেয় মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)। তবে পরিচালনা কমিটি কার্যকর ব্যবস্থা না নিলে ৬ মার্চ প্রতিষ্ঠানটির মূল বালিকা বিদ্যালয় ক্যাম্পাসে যান জাকির হোসেন। তখন দুই পক্ষের রেষারেষিতে অচলাবস্থা তৈরি হয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটিতে। বিষয়টি নিয়ে সংবাদ সম্মেলনও করেছিলেন তৎকালীন শিল্প প্রতিমন্ত্রী ও স্থানীয় সংসদ সদস্য কামাল আহমেদ মজুমদার।

বুধবার সংসদের বৈঠকে কামাল আহমেদ মজুমদার বলেন, তাঁর নির্বাচনী এলাকা (মিরপুর-কাফরুল) অসংখ্য জামায়াতের নেতাকর্মী বসবাস করে। ইতোমধ্যে জামায়াতের আমীর (শফিকুর রহমান চৌধুরী) প্রার্থী হয়েছিলেন (২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের নির্বাচনে)। সেখানের একমাত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মনিপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজ, সেটি এখন ধ্বংসের মুখে পতিত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর দিকনির্দেশনায় স্কুলটি পরিচালিত হয়ে আসছিল। হঠাৎ করে সাবেক শিক্ষামন্ত্রী ও ঢাকার ডিসির কারসাজিতে জামায়াতকে ক্ষমতায় বসিয়ে তাঁর গড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি গত শিক্ষাবর্ষে পরীক্ষার ফলাফল বিপর্যয় হয়েছে। ২ হাজার ৩০০ ছেলেমেয়ে ফেল করেছে। আগের বছরের থেকে এক হাজার ২০০ ছেলে মেয়ে জিপিএ-৫ কম পেয়েছে।

  

কামাল আহমেদ অভিযোগ করে বলেন, ‘প্রধান শিক্ষক জামায়াতের...তাকে ক্ষমতায় বসানো হয়েছে। সে প্যারালাইসিসে ভুগছে, সে কথা বলতে পারে না। শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে বারবার বলার পরেও তাকে এখনো সরানো হয় নাই। কোর্টের পর কোর্ট মামলা তারা করছে, স্কুলটাকে ধ্বংসের মুখোমুখি তারা নিয়ে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান, স্কুলটাকে আপনি রক্ষা করুন। আপনার বরাদ্দ দেওয়া জমিতে আমি তিলে তিলে এ স্কুলটি গড়ে তুলেছি। এটি নন এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ট্রাস্টের মাধ্যমে পরিচালিত হয়। আমি জানি না, কী কারণে সাবেক শিক্ষামন্ত্রীর কুনজর পড়েছে স্কুলটির ওপর। আমি তাঁরও বিচার চাই।’ 

রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে জাসদের সদস্য রেজাউল করিম তানসেন বলেন, বিএনপি–জামায়াত অস্বাভাবিক সরকার আনতে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন ভণ্ডুল করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিল। নির্বাচনের মধ্য দিয়ে দেশের সংবিধান সমুন্নত হয়েছে। বিএনপি–জামায়াত পরাজিত হয়েছে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে দেশি–বিদেশি ষড়যন্ত্র ছিল। ৭ জানুয়ারি সুন্দর চমৎকার একটি নির্বাচন হয়েছে। অন্যান্য নির্বাচনের তুলনায় সহিংসতা হয়নি বললেই চলে। এই নির্বাচনে ৪২ শতাংশ ভোট পড়েছে। অনেকে প্রশ্ন তোলার অপচেষ্টা চালায়। তিনি রোমানিয়া, বুলগেরিয়া, হংকং, আয়ারল্যন্ড ও পর্তুগালের ভোটের হার তুলে ধরেন। এসব দেশে ভোটের হার ছিল ৪৪ শতাংশের নিচে। সেখানে নির্বাচন প্রতিহত করার ঘোষণা ছিল না। কেউ নির্বাচন বর্জন করেনি।

হাছান মাহমুদ বলেন, নির্বাচন শেষে বিশ্ববাসী কী বলে তা দেখার জন্য নির্বাচন বর্জনকারীরা উন্মুখ হয়ে ছিল। এখন পর্যন্ত ৭৮টি দেশের সরকার–রাষ্ট্রপ্রধান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। এই সরকারের সঙ্গে কাজ করার অভিপ্রায় জানিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিয়ে বলেছেন, এই সরকারের সঙ্গে তারা নতুন পর্যায় শুরু করতে চায়। যুক্তরাজ্য প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানিয়েছে। যারা নির্বাচন বর্জন করেছিল এ ধরনের আনন্দ বার্তা অভিনন্দনের জোয়ার দেখে তাদের মুখ ফ্যাকাসে হয়ে পড়ে। তারা আবোল-তাবোল বকতে শুরু করে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শিক্ষার্থীদের জন্য পাঠ্যবইয়ের সংশোধনী প্রকাশ - dainik shiksha শিক্ষার্থীদের জন্য পাঠ্যবইয়ের সংশোধনী প্রকাশ কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে কলেজ পরিচালনা পর্ষদ থেকে ঘুষে অভিযুক্ত সাংবাদিককে বাদ দেওয়ার দাবি - dainik shiksha কলেজ পরিচালনা পর্ষদ থেকে ঘুষে অভিযুক্ত সাংবাদিককে বাদ দেওয়ার দাবি কলেজ কমিটির সভাপতির যোগ্যতা এইচএসসি, গেজেট জারি - dainik shiksha কলেজ কমিটির সভাপতির যোগ্যতা এইচএসসি, গেজেট জারি নিজের শিক্ষককে নিয়ে শ্রেণিকক্ষে ঢাবি শিক্ষক, প্রশংসায় ভাসছে ফেসবুক - dainik shiksha নিজের শিক্ষককে নিয়ে শ্রেণিকক্ষে ঢাবি শিক্ষক, প্রশংসায় ভাসছে ফেসবুক মাদরাসা শিক্ষাকে বাস্তবমুখী করতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha মাদরাসা শিক্ষাকে বাস্তবমুখী করতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মদ্যপ অবস্থায় আটক শিক্ষক বরখাস্ত - dainik shiksha মদ্যপ অবস্থায় আটক শিক্ষক বরখাস্ত দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে সনদ জালিয়াতিতে শনাক্ত আরো কয়েকজন নজরদারিতে - dainik shiksha সনদ জালিয়াতিতে শনাক্ত আরো কয়েকজন নজরদারিতে শিক্ষা প্রশাসনে বড় রদবদল - dainik shiksha শিক্ষা প্রশাসনে বড় রদবদল প্রশ্নফাঁসে শিক্ষক চাই না - dainik shiksha প্রশ্নফাঁসে শিক্ষক চাই না please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0024850368499756