সিলেটের এমসি কলেজের ভাঙচুর করা ছাত্রাবাস সংস্কার করে দ্রুত খুলে দেওয়ার দাবিতে অধ্যক্ষের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন আবাসিক ছাত্রসহ কলেজের শিক্ষার্থীরা। গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত তাঁরা সেখানে অবস্থান করেন। ছাত্রাবাসের প্রয়োজনীয় সংস্কার করে দ্রুত খুলে দেওয়ার দাবিতে একটি লিখিত আবেদন অধ্যক্ষের কাছে দাখিল করে ফিরে যান তাঁরা।
১৩ জুলাই সকালে ছাত্রলীগের দুই পক্ষে বিরোধের জের ধরে এক পক্ষ ছাত্রাবাসের চারটি ব্লকের অন্তত ৪০টি কক্ষের দরজা-জানালা ভাঙচুর ও একটি ব্লকের সাতটি কক্ষ তছনছ করে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে কলেজ কর্তৃপক্ষ ওই দিনই ছাত্রাবাস অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে। ঘটনার দুই দিন পর ১৬ জুলাই কলেজের অধ্যক্ষ নিতাই চন্দ্র চন্দ বাদী হয়ে মহানগর পুলিশের শাহপরান থানায় দ্রুত বিচার আইনে মামলা করেন। মামলায় কলেজ ছাত্রলীগের একটি পক্ষের টিটু চৌধুরীসহ ৩৫ জনকে আসামি করা হয়।
ছাত্রাবাসের তত্ত্বাবধায়ক জামাল উদ্দিন বলেন, ছাত্রাবাস ভাঙচুরের ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটি বর্তমানে কাজ করছে। এ ব্যাপারে অধ্যক্ষের সঙ্গেও আলোচনা হচ্ছে। অধ্যক্ষের কার্যালয়ে শিক্ষার্থীদের অবস্থানের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, শিক্ষার্থীরা ছাত্রাবাস খুলে দেওয়ার দাবিতে লিখিত আবেদন জানিয়েছে। কিন্তু ভাঙাচোরা অবস্থার সংস্কারসহ তদন্ত কার্যক্রমের জন্য ছাত্রাবাস খোলার বিষয়টি দীর্ঘ প্রক্রিয়ার মধ্যে আছে। বিষয়টি শিক্ষার্থীদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
১৮৯২ সালে প্রতিষ্ঠিত এমসি কলেজ সিলেটের অন্যতম প্রাচীন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। নগরের টিলাগড় এলাকায় ৬০০ শতক জায়গার ওপর ১৯২০ সালে আসাম ঘরানার স্থাপত্যরীতির ছাত্রাবাস নির্মাণ করা হয়েছিল। ২০১২ সালের ৮ জুলাই ছাত্রলীগ-শিবির সংঘর্ষের জের ধরে আগুন দিয়ে পোড়ানো হয় ছাত্রাবাসের ৪২টি কক্ষ। শিক্ষামন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রীর প্রচেষ্টায় ছাত্রাবাস আগের কাঠামোয় পুনর্নির্মাণ করা হয়। ২০১৪ সালের ১৪ অক্টোবর শিক্ষামন্ত্রী পুনর্নির্মিত ছাত্রাবাস উদ্বোধন করেন। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার প্রায় পাঁচ বছর পর এবার ছাত্রলীগ নিজেদের আধিপত্য বিস্তারে ছাত্রাবাস ভাঙচুর করে বলে অভিযোগ ওঠে।