কারিগরি শিক্ষা বোর্ডসনদের কাগজ কীভাবে পায় কারবারিরা, তদন্তে নেমেছে ডিবি

দৈনিক শিক্ষাডটকম প্রতিবেদক |

দৈনিক শিক্ষাডটকম প্রতিবেদক: বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের যেসব সনদ বিক্রি করা হয়েছে, সেগুলো আসল কাগজ বলে দাবি করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। সনদের জন্য ব্যবহৃত কাগজ কীভাবে পায় চক্রের সদস্যরা তা নিয়ে তদন্তে নেমেছেন গোয়েন্দারা। তবে বোর্ডের সংশ্লিষ্টদের দাবি, টাঁকশাল থেকে নিরাপত্তা সাইন, সিরিয়ালসহ কাগজগুলো আসে বোর্ডে। এরপর সনদ শাখাসহ একাধিক শাখা ঘুরে প্রিন্ট হয়। এর আগে যত জাল সনদের কপি পাওয়া গেছে, সবগুলোর কাগজই ভুয়া, যা সময়ে সময়ে সংশ্লিষ্ট থানায় জিডি করে জমা দেওয়া হয়েছে।

আসল কাগজে সনদ ছাপিয়ে বিক্রির অভিযোগে গত ১ এপ্রিল বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের সিস্টেম অ্যানালিস্ট এ টি এম শামসুজ্জামান ও তার সহযোগী ফয়সাল হোসেনকে গ্রেপ্তার করে ডিবি। পরে গড়াই সার্ভে ইনস্টিটিউটের পরিচালক সানজিদা আক্তার ওরফে কলি, হিলফুল ফুজুল নামের কারিগরি প্রতিষ্ঠানের প্রিন্সিপাল সরদার গোলাম মোস্তফা ও যাত্রাবাড়ীর ঢাকা পলিটেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের পরিচালক মাকসুদুর রহমানকে গ্রেপ্তার করে ডিবি। তাদের জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে আসে কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানের স্ত্রী শেহেলা পারভীনের নাম। ২১ এপ্রিল গ্রেপ্তার হন তিনিও। একই দিন ওএসডি করা হয় চেয়ারম্যান আলী আকবর খানকে। দুদিনের রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে গত মঙ্গলবার আদালতে উপস্থাপন করা হলে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

নজরদারিতে আছেন সদ্য সাবেক চেয়ারম্যান আলী আকবর খান ও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মো. কেপায়েত উল্লাহ। তাদের বাইরেও কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের আরও লোকজন সনদ বাণিজ্যে জড়িত থাকার আশঙ্কা করছে ডিবি। সুরক্ষিত ফাঁকা সনদের কাগজ কীভাবে বাইরে আসত, তা খতিয়ে দেখছে তদন্ত সংশ্লিষ্টরা।

লালবাগ বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার (অতিরিক্ত ডিআইজি পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত) মশিউর রহমান বলেন, ফাঁকা সনদগুলো কোনোভাবেই সিস্টেম অ্যানালিস্টে কাছে আসার কথা নয়। সেগুলো পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকসহ অন্য দায়িত্বশীলদের কাছে সুরক্ষিত থাকবে। তবে তা চলে গেছে সিস্টেম অ্যানালিস্টের কাছে। আবার এই সিস্টেম অ্যানালিস্টই সেগুলো অফিস থেকে বাইরে নিয়ে নিজের মতো করে প্রিন্ট দিয়ে সনদের কারবার করে আসছিলেন। ফলে যাদের কাছে ফাঁকা সনদের কাগজগুলো থাকার কথা, তাদের কাছ থেকে কীভাবে বাইরে গেল, তা আমরা তদন্ত করছি।

সিস্টেম অ্যানলিস্টকে গ্রেপ্তারের পর ডিবি জানিয়েছিল, গত কয়েক বছরে তিনি ৫ হাজারের বেশি সনদ ও মার্কশিট বিক্রি করেছেন। একই সঙ্গে বোর্ডের পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে বিক্রি করা সার্টিফিকেটগুলো ওয়েবসাইটে আপলোড করতেন তিনি। ফলে যে কোনো দেশে বসেই এই ওয়েবসাইটে গিয়ে রোল নম্বর, রেজিস্ট্রেশন নম্বর দিয়ে সার্চ করলে তা সঠিক বলে প্রমাণিত হয়। এ প্রক্রিয়ায় কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের সনদ জালিয়াতির কাজ করছিল তারা।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
সফটওয়্যারে কারিগরি ত্রুটি/ ইনডেক্সধারী শিক্ষকদের তথ্য ইমেইলে আহ্বান - dainik shiksha সফটওয়্যারে কারিগরি ত্রুটি/ ইনডেক্সধারী শিক্ষকদের তথ্য ইমেইলে আহ্বান শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বৈত নীতি! - dainik shiksha শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বৈত নীতি! শিক্ষককে পিটিয়ে হ*ত্যা, চাচাতো ভাইসহ গ্রেফতার ৩ - dainik shiksha শিক্ষককে পিটিয়ে হ*ত্যা, চাচাতো ভাইসহ গ্রেফতার ৩ কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে - dainik shiksha এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে শিক্ষক কেনো বদলি চান - dainik shiksha শিক্ষক কেনো বদলি চান ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধনের লিখিত পরীক্ষা হতে পারে জুলাইয়ে - dainik shiksha ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধনের লিখিত পরীক্ষা হতে পারে জুলাইয়ে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.002964973449707