দৈনিক শিক্ষাডটকম প্রতিবেদক: বছরের পর বছর ধরে সনদ জালিয়াতির ঘটনায় জড়িত কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের আরও কয়েকজনকে শনাক্ত করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। তারা নজরদারিতে আছেন। খুব শিগগির তারা গ্রেফতার হবেন। ঘুষকাণ্ডে নাম আসা ইত্তেফাকের নিজামুল হক, সমকালের সাব্বির নেওয়াজ ও কালেরকন্ঠের শরীফুল আলম সুমন ছাড়ারও আরো কয়েকজন আছেন বলে জানা গেছে।
এদিকে জালিয়াতির মূলহোতা বোর্ডের কম্পিউটার সেলের সিস্টেম এনালিস্ট একেএম শামসুজ্জামানকে ফের রিমান্ডে আনা হবে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য। এছাড়া আরও কিছু বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বোর্ডের অপসারিত চেয়ারম্যান আলী আকবর খানকে ডাকা হবে। পাশাপাশি জালিয়াতি করে নেওয়া সনদগুলো কোথায় ব্যবহার করা হয়েছে সেগুলোর অনুসন্ধান হবে। এসব সনদ ব্যবহার করে সরকারি-বেসরকারি সেক্টরে কতজন চাকরি করছেন, কতজন দেশের বাইরে গেছেন-তাও বের করা হবে।
আরো পড়ুন: অভিযুক্ত শিক্ষা সাংবাদিকদের পক্ষে জোর তদবির
এদিকে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ তদন্তে ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছে সংস্থার নিজস্ব কমিটি। শামসুজ্জামানের দুর্নীতিসংশ্লিষ্ট
ডিবির লালবাগ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, সনদ জালিয়াতির ঘটনায় মিরপুর মডেল থানার মামলায় গ্রেফতার ৫ জন হলেন-কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের কম্পিউটার সেলের সিস্টেম এনালিস্ট জালিয়াতির মূলহোত একেএম শামসুজ্জামান, তার ব্যক্তিগত সহকারী ফয়সাল, কুষ্টিয়া গড়াই সার্ভে ইনস্টিটিউটের পরিচালক সানজিদা আক্তার কলি, কামরাঙ্গীরচর হিলফুল ফুজুল টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিএম কলেজের অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান, ঢাকা টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের পরিচালক মাকসুদুর রহমান ওরফে মামুন এবং বোর্ড চেয়ারম্যানের স্ত্রী সেহেলা পারভীন। আর খিলগাঁও থানার মামলায় গ্রেফতার ব্যক্তি হলেন কামরুল হাসান আবেদ।
তদন্তসংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, শামসুজ্জামানসহ গ্রেফতারদের জিজ্ঞাসাবাদ করে বোর্ডের পরিচালক, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ, শিক্ষক, সাংবাদিক, দুদক কর্মকর্তাসহ ৩০-৩৫ জনের নাম জানা গেছে। তাদের বিষয়ে যাচাই-বাছাই চলছে। জিজ্ঞাসাবাদে কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের আরও ৩ কর্মকর্তার নাম এসেছে। তারা হলেন-বোর্ডের সিবিএ নেতা আব্দুল বাছের, রেজিস্ট্রেশন শাখার অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রোগ্রামার মামুনুর রশীদ ও বোর্ডের উপপরীক্ষা নিয়ন্ত্রক জাকারিয়া আব্বাস। তারা নজরদারিতে আছেন। খুব শিগগির গ্রেফতার হবেন। তদন্তসংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা জানান, জালিয়াতির মূলহোতা শামসুজ্জামানকে ফের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। আজ-কালকের মধ্যে আদালতে রিমান্ডের আবেদন দাখিল হবে। তদন্তে বোর্ডের আরও যাদের নাম উঠে এসেছে এবং যাদের শনাক্ত করা গেছে তাদের সম্পর্কে বিশদ জানতে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, গ্রেফতারদের জিজ্ঞাসাবাদে নতুন অনেক তথ্য বের হয়েছে। সেগুলো যাচাই-বাছাই করতে বোর্ডের অপসারিত চেয়ারম্যান আলী আকবর খানকে ফের ডাকা হবে। জিজ্ঞাসাবাদে সদুত্তর পাওয়া না গেলে তাকে গ্রেফতার করা হতে পারে। পাশাপাশি জালিয়াতি করে সংগৃহীত সনদ ব্যবহার করে কোথায় কোথায় চাকরি করা হচ্ছে, দেশে-বিদেশে কারা উচ্চশিক্ষা বা চাকরি করছেন-সময়সাপেক্ষে সে তথ্যও খতিয়ে দেখা হবে।
এ বিষয়ে ডিবির লালবাগ বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মশিউর রহমান বলেন, শামসুজ্জামানকে নতুন করে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে আরও অনেক তথ্য পাওয়া যাবে। বিষয়টি নিয়ে খুব শিগগির ইতিবাচক কিছু বলা যাবে।