ফেনী জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার সাক্ষাৎকারসন্তানদের কেনো নটর ডেম-হলিক্রসে পড়ালাম

নিজস্ব প্রতিবেদক |

মিশনারি পরিচালিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে আদর্শ প্রতিষ্ঠান বলে মনে করেন ফেনীর জেলা শিক্ষা অফিসার কাজি সলিম উল্লাহ। শিক্ষা ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণের পাশাপাশি নিজের দুই ছেলে ও এক মেয়ের অভিজ্ঞতাও চৌকস এই শিক্ষা কর্মকর্তার এমন অভিমত গঠনের পেছনে প্রত্যক্ষভাবে কাজ করেছে। 

সম্প্রতি দৈনিক শিক্ষাডটকম ও দৈনিক আমাদের বার্তাকে দেয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে মিশনারি স্কুল-কলেজগুলোকে নিয়ে নিজের মুগ্ধতার কথা তুলে ধরেন কাজি সলিম উল্লাহ।

তিনি বলেন, মিশনারি প্রতিষ্ঠানে লেখাপড়া করে আমার সন্তানরা হাতে কলমে শিখতে পেরেছে। তাদের প্রাইভেট পড়ারও প্রয়োজন হয়নি। মিশনারি প্রতিষ্ঠানগুলো প্রমাণ করেছে, ক্লাসরুমে ভালো লেখাপড়া হলে প্রাইভেট পড়ার প্রয়োজন পড়ে না। 

কাজি সলিম উল্লাহ বলেন, বরাবরই মিশনারি স্কুলের প্রতি আমার একটা দুর্বলতা ছিলো। কারণ, মিশনারি লেখাপড়াটা আদর্শায়িত, শৃঙ্খলা, ক্লাস ইনভলভমেন্ট, কো-কারিকুলার ইনভল্ভমেন্টগুলো আমার ভালো লেগেছে। 

তিনি বলেন, তারা লেখাপড়ার পাশাপাশি সহপাঠক্রমে গুরুত্ব দেয়। বিজ্ঞান বিভাগের প্রাকটিক্যাল পুরোদমে ও সুন্দরভাবে করায়। শ্রেণিকক্ষে প্রতি সপ্তাহের পড়ানো বিষয় নিয়ে কুইজ প্রতিযোগিতা করে। যার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের জ্ঞানটা ঝালাই হয়ে যায়। এই প্রক্রিয়ার শিক্ষার্থীরা পরবর্তীতেও ভালো ফল করতে সক্ষম হয়। 

কাজি সলিম উল্লাহ জানান, তার স্ত্রী ছিলেন একটি হাইস্কুলের প্রতিষ্ঠাতা প্রধান শিক্ষিকা। তবে সন্তানদের ভালোভাবে দেখাশুনা না হওয়ায় চাকরি ছেড়ে দেন। তিনি সন্তানদের যত্ন নিয়েছেন, লেখাপড়ায় সাহায্য করেছেন। এতে করে স্বামী-স্ত্রী মিলে সন্তানদের এগিয়ে নিতে পেরেছেন। কোনো প্রাইভেট শিক্ষক ছাড়াই তাদের তিন সন্তান প্রতিটি পাবলিক পরীক্ষায় সর্বোচ্চ ফল পেয়েছেন। প্রতিটি ধাপে বৃত্তিও পেয়েছে। দুই ছেলের একজন ঢাকার সেন্ট গ্রেগরি স্কুল থেকে গোল্ডেন জিপিএ ৫ পেয়ে (সব বিষয়ে লেটার মার্কস) এসএসসি পাস করেছে। পরে দুই ছেলেই উচ্চ মাধ্যমিকে সর্বোচ্চ ফল (সব বিষয়ে লেটার মার্কস) অর্জন করেছে নটরডেম কলেজ থেকে। পরবর্তীতে তাদের একজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে, অন্যজন চট্রগ্রাম বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক শেষ করেছেন সফলতার সঙ্গে।

মেয়েকে উচ্চ মাধ্যমিকে হলি ক্রস উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে পড়ানো প্রসঙ্গে কাজি সলিম উল্লাহ জানান, তিনি চান যেখানে শিক্ষার্থীরা হাতে কলমে শিখতে পারবে, লেখাপড়ার পাশাপাশি মোরাল ডেভেলপমেন্ট হবে সেরকম প্রতিষ্ঠানে সন্তানদের পড়াতে। সে সুবাদেই তিনি হলি ক্রস উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়কে বেছে নেন।

কাজি সলিম উল্লাহর শিক্ষা নিয়ে কাজ করার আগ্রহ জন্মে শিক্ষক বাবা ও ভাইদের দেখে। প্রায় ২৯ বছর বিভিন্ন জেলায় শিক্ষা অফিসারের দায়িত্ব পালন করেছেন। চাকরি জীবনে সবার সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখেছেন। শিক্ষার গুণগত মান ধরে রেখে উৎকর্ষ সাধনেরও চেষ্টা করেছেন।

এই শিক্ষা অফিসার নিজে লেখাপড়া করেছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে। পরে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইইআর থেকে এমএড সম্পন্ন করেন।  

জীবনে চাওয়া-পাওয়া নিয়ে তিনি জানান, কর্মক্ষেত্রে সবার সেবা করতে চান, আর তার সন্তানরা যেন মানুষ হয়। সলিম উল্লাহ বলেন, আমি এবং আমার সন্তানরা জাতির জন্য কিছু করতে পারলে ছোট্ট জীবনের দায়বদ্ধতা পালনে সমর্থ হবো।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ ১২ মে - dainik shiksha এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ ১২ মে খাড়িয়া ভাষা সংরক্ষণে উদ্যোগ গ্রহণের আহবান প্রধান বিচারপতির - dainik shiksha খাড়িয়া ভাষা সংরক্ষণে উদ্যোগ গ্রহণের আহবান প্রধান বিচারপতির উপবৃত্তির সব অ্যাকাউন্ট নগদ-এ রূপান্তরের সময় বৃদ্ধি - dainik shiksha উপবৃত্তির সব অ্যাকাউন্ট নগদ-এ রূপান্তরের সময় বৃদ্ধি শিক্ষক হতে চান না শিক্ষক দম্পতিদের কৃতী সন্তানরা - dainik shiksha শিক্ষক হতে চান না শিক্ষক দম্পতিদের কৃতী সন্তানরা কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস - dainik shiksha শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0026969909667969