সব কিছুর দাম বাড়ছে ঘুষের রেটও তাই বেশি, ঝালকাঠি শিক্ষা অফিসে

মুরাদ মজুমদার, দৈনিক শিক্ষাডটকম |

মুরাদ মজুমদার, দৈনিক শিক্ষাডটকম:  বেপরোয়া ঘুষ বাণিজ্য ও অবৈধ নিয়োগ বাণিজ্যের নিরাপদ আখড়ায় পরিণত হয়েছে  ঝালকাঠি জেলা শিক্ষা অফিস। সম্প্রতি সরেজমিন পরিদর্শনে প্রতিষ্ঠানটিতে অবৈধ লেনদেনের এন্তার অভিযোগ পাওয়া গেছে। দীর্ঘদিন ধরে প্রতিষ্ঠানটি জিম্মি হয়ে রয়েছে কিছু অসাধু কর্মকর্তা ও কর্মচারীর শক্তিশালী এক সিন্ডিকেটের কব্জায়। সব জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যাওয়ার কথা বলে সম্প্রতি ঘুষের রেটও বাড়িয়ে দিয়েছেন তারা।

নতুন এমপিও বা পুরাতনদের বকেয়াসহ এমপিও নবায়নে মক্কেলদের কাছ থেকে আদায় করছেন অতিরিক্ত ঘুষ। জেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ নিয়ে এখানে অবৈধ চুক্তি ও লেনদেন হয় বলেও জোর অভিযোগ আছে।    

নাম ও পরিচয় না প্রকাশের শর্তে জেলা শিক্ষা অফিসের একাধিক কর্মচারী দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, শিক্ষকদের নতুন এমপিওর ক্ষেত্রে ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা ঘুষ লাগছে। পুরাতনদের বকেয়া আদায়ে আরো কিছু বেশি টাকা দিতে হচ্ছে। তারপর নয়ছয় বুঝিয়ে কিংবা গুরুতর সমস্যার ভীতি তৈরি করে হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে মোটা অংকের টাকা। 

এছাড়াই এই সিন্ডিকেট নিয়োগ বাণিজ্যও চালিয়ে আসছে। বিভিন্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পছন্দের প্রধান শিক্ষক, সুপার বা সহকারি প্রধান নিয়োগের ক্ষেত্রে স্কুল কমিটি বা প্রতিষ্ঠান প্রতিনিধিরা শিক্ষা অফিসে আসেন। সেখানে নিয়োগের অর্থ ভাগাভাগির চুক্তি হয়। সবপক্ষের স্বার্থ ও শর্ত মিলে গেলে পছন্দের ডিজির প্রতিনিধির মাধ্যমে নিয়োগ হয় মোটা অংকের ঘুষ দেয়া ব্যক্তির। অনেক ক্ষেত্রে এ সিন্ডিকেটের সদস্যরা নিজের আত্মীয়-স্বজনদেরও একই পন্থায় চাকরি দেন। 

শিক্ষা অফিসের এক কর্মকর্তা জানান, বিষয়গুলো গোপন রাখতে জেলা শিক্ষা অফিসে সরকারি ছুটির দিন শুক্র ও শনিবার এসব কন্ট্রাক্ট বাণিজ্য চলে। সকাল থেকে রাত অবধি মক্কেলদের সঙ্গে অবৈধ লেনদেন ও নিয়ম বহির্ভূত দাপ্তরিক কার্যক্রম হয়।

জেলা শিক্ষা অফিসে বিভিন্ন কাজে আসা কয়েকটি সূত্রের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়,  বর্তমানে দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির কথা তুলে ঘুষের রেট বাড়িয়ে দিয়েছে শিক্ষা অফিসের সিন্ডিকেট। প্রত্যেক কাজে আগের চেয়ে ২ থেকে ৫ হাজার টাকা বাড়তি লাগছে।  

 

খোঁজ নিয়ে আরও জানা গেছে, জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান খান নিজের অফিসের এসব কর্মচারীর কাছে অনেকটা জিম্মি। তিনি নিজে ইন্টারনেট ভিত্তিক দাপ্তরিক কাজে কম পারদর্শী হওয়ায় এ চক্রটির কাছে নির্ভরশীল। আর সে কারণে দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ ঘুষ বাণিজ্যকে প্রশ্রয় দিয়ে নিজেও সুবিধা নিচ্ছেন।

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে ছিদ্দিকুর রহমান বলেন, আমি এখানে সাড়ে পাঁচ বছর কাজ করছি। এখানে কোনো সিন্ডিকেট আছে বলে আমার জানা নেই। আমার অজান্তে কিছু হয়ে থাকলে সেটা বলতে পারবো না। আমি কারো কাছে জিম্মি নই। 

তবে ইন্টারনেট ভিত্তিক দাপ্তরিক কাজে কমপারদর্শী হওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে তিনি বলেন, এসব আমি জানি না। আমার লোকজনই সব করে।  

শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক শিক্ষার ইউটিউব চ্যানেলের সাথেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।

দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল  SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
তাপপ্রবাহে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা রাখার বিষয়ে নতুন নির্দেশনা - dainik shiksha তাপপ্রবাহে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা রাখার বিষয়ে নতুন নির্দেশনা জাল সনদেই সরকারকে হাইকোর্ট, নয় শিক্ষক অবশেষে ধরা - dainik shiksha জাল সনদেই সরকারকে হাইকোর্ট, নয় শিক্ষক অবশেষে ধরা মা*রা গেছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি - dainik shiksha মা*রা গেছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি ইরানের প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেবেন মোখবার - dainik shiksha ইরানের প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেবেন মোখবার এমপিওভুক্ত হচ্ছেন ৩ হাজার শিক্ষক - dainik shiksha এমপিওভুক্ত হচ্ছেন ৩ হাজার শিক্ষক কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে - dainik shiksha এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0043151378631592