সব পরীক্ষায় পাস করেও দপ্তরি পদে নিয়োগ পাচ্ছেন না আব্দুল মজিদ!

শ্রীবরদী (শেরপুর) প্রতিনিধি |

একই পদে লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা পাস করেছেন দুইজন! তাদের একজন চাকরি পেয়েছেন। অন্যজন ঘুরছেন বিদ্যালয় আর আদালতের দ্বারে দ্বারে। ঘটনাটি ঘটেছে শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলায়। ভারেরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরি কাম প্রহরী পদে লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা পাস করেও চাকরি পাচ্ছেন না আব্দুল মজিদ নামের একজন।

অভিযোগ উঠেছে, জালিয়াতির মাধ্যমে সরকারি বিধিমোতাবেক নিয়োগপ্রাপ্ত আব্দুল মজিদকে যোগদান না করিয়ে হাশেম আলী নামে একজনকে যোগদান করানো হয়েছে। তিনি উত্তোলন করছেন বেতন ভাতা। আর যোগদান করতে না পেরে চরম হতাশা আর অভাবে তাড়নায় মানবেতর জীবনযাপন করছেন আব্দুল মজিদ ও তার পরিবারের সদস্যরা। রবিবার (২৪ অক্টোবর) ভুক্তভোগীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে সরেজমিন গেলে ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতিসহ প্রশাসনের লোকজনের সঙ্গে কথা বললে ওঠে আসে এমন তথ্য।  

তথ্য সূত্র ও স্থানীয় লোকজলের অভিযোগে জানা যায়, ২০১৫ সালে ১ এপ্রিল শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলায় ২৩টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে একজন করে দপ্তরি কাম নৈশ্য প্রহরী পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেয় প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। ভারেরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দপ্তরি কাম নৈশ্য প্রহরী পদে আবেদন করেন ভারেরা গ্রামের মৃত ফজল সরকারের ছেলে আব্দুল মজিদ। লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা শেষে ২০১৭ সালের ২৭ মার্চ উপজেলার ২৩টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরি কাম নৈশ্য প্রহরী পদে নিয়োগ প্রাপ্তদের নামের তালিকা প্রকাশ করে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। ওই তালিকায় ১০ নম্বরে প্রকাশ হয় আব্দুল মজিদের নাম। তিনি পাস করেন লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা। তবে উপজেলার সকল দপ্তরি কাম প্রহরীর তালিকায় ৭৭ নম্বর নাম আসে তার। তিনি স্কুলে যোগদান করতে গেলে রহস্যজনক কারণে তাকে নিয়োগ দেয়নি কর্তৃপক্ষ। আরেকটি নিয়োগপত্রে নাম আসে আব্দুল মজিদের বিপরীতে একই গ্রামের জালু উদ্দিনের ছেলে হাসেম আলীর। তাকে দেওয়া হয় যোগদানের সুযোগ।

এদিকে, আব্দুল মজিদ স্কুলে যোগদান করতে না পেরে ২০১৭ সালে সহকারী জজ আদালতে (শ্রীবরদী) প্রধান শিক্ষক সেলিনা আক্তার গংদের বিবাদী করে একটি মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং-৯৩/২০১৭। ওই মামলায় সহকারী জজ মো. শহিদুল ইসলাম বাদী পক্ষে রায় ঘোষণা করেন। রায়ে বলা হয়, ভারেরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দপ্তরি কাম প্রহরী পদে নিয়োগপ্রাপ্তকে বিধি মোতাবেক যোগদান ও নিয়মিত বেতন ভাতা প্রদানে বিবাদী পক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হয়। 

ভুক্তভোগী আব্দুল মজিদ বলেন, তারা এ নির্দেশ উপেক্ষা করে আমাকে যোগদান না করিয়ে হাশেম আলীকে যোগদান করিয়েছে। আমি প্রায় ৭ বছর যাবত ঘুরছি। আমাকে যোগদান না দেওয়ায় আমি আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। সরকারের কাছে আমার দাবি, আমাকে যেন যোগদানের সুযোগ দেওয়া হয়। 

আবুল হাসেম বলেন, ‘নিয়োগ পেয়েই চাকরি করছি।’ তবে সকল অভিযোগ অস্বীকার করে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সেলিনা আক্তার বলেন, ‘সরকারি বিধিমোতাবেক আবুল হাশেমকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।’ 

উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা জিয়াউল হক বলেন, ‘ওই পদে মামলা চলমান। মামলা নিষ্পত্তি হলে ও মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ পেলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিবো।’


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
ঢাকার তাপমাত্রা দেখে স্কুল বন্ধের সিদ্ধান্ত নয়: শিক্ষামন্ত্রী - dainik shiksha ঢাকার তাপমাত্রা দেখে স্কুল বন্ধের সিদ্ধান্ত নয়: শিক্ষামন্ত্রী আরো ৭২ ঘণ্টার হিট অ্যালার্ট জারি - dainik shiksha আরো ৭২ ঘণ্টার হিট অ্যালার্ট জারি ফাঁস হওয়া প্রশ্নেই প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা - dainik shiksha ফাঁস হওয়া প্রশ্নেই প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা এসএসসি পরীক্ষার ফল ১০ বা ১১ মে - dainik shiksha এসএসসি পরীক্ষার ফল ১০ বা ১১ মে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে কুমিল্লায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পানি ঘণ্টা চালুর নির্দেশ - dainik shiksha কুমিল্লায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পানি ঘণ্টা চালুর নির্দেশ দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শনিবারের ছুটি বহাল থাকছে - dainik shiksha প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শনিবারের ছুটি বহাল থাকছে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0046150684356689