সব ব্যাংকের জন্য সমন্বিত প্রস্তুতি

দৈনিক শিক্ষা ডেস্ক |

stude

রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক বা বিশেষায়িত ব্যাংকের নিয়োগ প্রক্রিয়া সহজ, স্বচ্ছ করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের তত্ত্বাবধানে গঠিত হয়েছে ব্যাংকার্স সিলেকশন কমিটি বা বিএসসি। ইতিমধ্যে বিএসসি থেকে জনতা, সোনালী ও কৃষি ব্যাংকের জন্য প্রায় পাঁচ হাজার কর্মকর্তা নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছে।

রাষ্ট্রায়ত্ত জনতা ব্যাংকে চারটি পদে সব মিলিয়ে মোট ২ হাজার ২২৯ জনকে নিয়োগ দেওয়া হবে বলে বাংলাদেশ ব্যাংক বিভিন্ন পত্রিকায় ভিন্ন ভিন্ন চারটি বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানিয়েছে। এর মধ্যে ৮৩৪ জন এক্সিকিউটিভ অফিসার ছাড়াও অ্যাসিস্ট্যান্ট এক্সিকিউটিভ অফিসার (এইও) পদে ৪৬৪ জন, অ্যাসিস্ট্যান্ট এক্সিকিউটিভ অফিসার-টেলার (এইও-টেলার) পদে ৫৩৬ জন ও অ্যাসিস্ট্যান্ট এক্সিকিউটিভ অফিসার-পল্লিঋণ (এইও-আরসি) পদে ৩৯৫ জন লোক নিয়োগ দেওয়া হবে।

এ ছাড়া রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংক লিমিটেডে তিনটি পদে মোট ২ হাজার ২৭৬ জনকে নিয়োগের প্যানেল প্রস্তুতির জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক তাদের ওয়েবসাইটে ভিন্ন ভিন্ন তিনটি বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানিয়েছে। এতে অফিসার ক্যাশ পদে ৭৫৫ জন, অফিসার পদে ৮২০ জন ও সিনিয়র অফিসার পদে ৭০১ জন নিয়োগ করা হবে।

ব্যাংকার্স সিলেকশন কমিটি জানিয়েছে, চাহিদা অনুযায়ী অন্যান্য ব্যাংকের জন্যও হয়তো শিগগিরই অনুরূপ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হবে। এ ছাড়া বর্তমানে বেশ কিছু বেসরকারি ব্যাংকে নিয়োগ দেওয়ার জন্য নিয়মিতভাবে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হচ্ছে। সুতরাং ব্যাংকার হিসেবে নিজেকে দেখতে চাইলে এখন থেকেই ভালোভাবে পড়াশোনা শুরু করে দিন। সময়ের সঙ্গে যাতে সমন্বিত প্রস্তুতি নিতে পারেন, সে জন্য কিছু কৌশল অবলম্বন করতে হতে পারে।

১.
শুরুতে বিভিন্ন ব্যাংকের বিগত কয়েক বছরের প্রশ্নের ধরন দেখে ধারণা স্পষ্ট করে নিন। যেহেতু ব্যাংকে চূড়ান্ত নিয়োগের জন্য আপনাকে তিনটি ধাপ অতিক্রম করতে হবে, তাই প্রথম তিন মাসেই শক্ত ভিত তৈরি করে ফেলুন। বহুনির্বাচনি প্রশ্নোত্তরপর্ব বা এমসিকিউ আপনার জন্য যেমন টিকে থাকার লড়াই নিয়োগকর্তার কাছে, তেমনি ছেঁটে ফেলার কৌশল। তাই প্রস্তুতির ক্ষেত্রে আপনি একটু কৌশলী হলেও দোষের কিছু নেই।

২.
গুনে গুনে পাঁচটি সাদা পাতা নিন। পাঁচ পাতার প্রতি পৃষ্ঠায় আলাদাভাবে বাংলাদেশের জিডিপি, রেমিট্যান্স ও রিজার্ভ, বৈদেশিক বিনিয়োগ ও রপ্তানি আয়, কৃষি উৎপাদন ও দারিদ্র্য হ্রাস, পর্যটন বিকাশ ও পরিবেশ-সম্পর্কিত পাঁচ বছরের তথ্য লিখে রাখুন। সম্ভব হলে রেফারেন্সসহ সাল অনুযায়ী গ্রাফ বা টেবিল করে রাখতে পারেন। লিখিত পরীক্ষায় জাতীয় উন্নয়ন, অগ্রগতি ও অর্থনীতিবিষয়ক যেকোনো লেখায় ভালো নম্বর পাওয়ার জন্য এই পাঁচ পাতা হবে আপনার ‘হাতের প্যাঁচ’। এগুলো প্রিলিমিনারি ও ভাইভার জন্যও সমান গুরুত্বপূর্ণ।
৩.
পাঁচটি সাদা পাতা ভরার জন্য ভালোভাবে পত্রিকা পড়ার বিকল্প নেই। প্রতিদিন বাংলা ও ইংরেজি উভয় পত্রিকা পড়লে যেমন অনুবাদ দক্ষতা বাড়ে, তেমনি ভালো লেখার কৌশলও আয়ত্ত করা যায়। জাতীয় দৈনিকের অর্থনীতি, সাহিত্য ও প্রযুক্তি পাতা নিয়মিত পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে পারলে তা প্রস্তুতিতে সহায়ক হবে।

৪.
বিশেষ দিবস বা বিশিষ্টজনের জন্ম ও মৃত্যু দিবসের দিকে খেয়াল রাখুন। ওই দিনের দৈনিকে বিশেষ নিবন্ধ, আলোকপাত বা ক্রোড়পত্র থাকে, সংগ্রহে রাখুন। সময় করে বিস্তারিত পড়ে নিন। অনলাইনেও পড়তে পারেন। এতে সংশ্লিষ্ট বিষয় বা ব্যক্তি-সম্পর্কিত তথ্য সহজেই মনে থাকবে। যেমন কোনো কবি বা লেখকের গ্রন্থের নাম, বিজ্ঞানীর আবিষ্কারের নাম বা অবদান বারবার পড়েও মনে রাখা কঠিন কিন্তু তার ওপর আলোচনামূলক লেখা পড়ে দেখুন সহজেই মস্তিষ্কে গেঁথে যাবে।

৫.
প্রিলিমিনারি পরীক্ষার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ইংরেজি সমার্থক শব্দ বা বিপরীত শব্দ মুখস্থ করলেও ভুলে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাই বারবার পড়তে হবে। যেকোনো বই বা ইংরেজি পত্রিকা দেখে প্রতিদিন কমপক্ষে পাঁচটি নতুন শব্দ আয়ত্ত করার চেষ্টা করলে ভালো ফল পাবেন। এতে ৯০ দিনে সাড়ে ৪০০ শব্দ শেখা হয়ে যাবে।

৬.
ক্যালকুলেটর-নির্ভরতা কমিয়ে শূন্যের কোঠায় নিয়ে আসুন। ‘অঙ্কে কাঁচা’ এই অজুহাত ভুলে প্রতিদিন অঙ্ক অনুশীলন করুন, দেখবেন আয়ত্তে চলে আসবে। পরীক্ষায় আসার মতো গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়গুলো আলাদা করে যেকোনো বই থেকে প্রতিদিন নিয়ম করে অনুশীলন করলে ভয় থাকবে না। ইংরেজিতে অঙ্ক মানেই দুর্বোধ্য না। সাহস নিয়ে শুরু করেই দেখুন।

৭.
আসক্তি বা পড়াশোনার বিরক্তি কাটানোর জন্য যদি একবার ফেসবুকে ঢুঁ মারতেই হয়, তবে সময়টা প্রস্তুতিতে কাজে লাগান। চাকরির প্রস্তুতি-সংক্রান্ত ফেসবুকে অনেক গ্রুপ আছে সেগুলোতে যুক্ত হন। গ্রুপের সদস্যদের শেয়ার করা প্রস্তুতিমূলক প্রশ্ন-উত্তর, তথ্য বা প্রয়োজনীয় লিংক ঘেঁটে ঝালিয়ে নিতে পারেন নিজের প্রস্তুতি। ফেসবুকের ‘গ্রুপ স্টাডি’ বেশ কাজে দেয়। তবে তথ্য বিভ্রাটে যাতে বিভ্রান্ত না হন সে বিষয়ে সতর্ক থাকুন।

৮.
সপ্তাহে একটি দিন নিজেই নিজের কাছে পরীক্ষা দিন। আগের প্রশ্ন বা কোনো বইয়ের মডেল টেস্ট নিয়ে ঘড়ি ধরে বসে যান। এতে সময়-সতর্ক হতে পারবেন। নেতিবাচক নম্বর কাটা যাওয়ার প্রবণতা কমে আসবে। নিজের প্রস্তুতির ব্যাপারে আত্মবিশ্বাস যত বাড়াতে পারবেন, ততই আরও ভালো পড়াশোনা করতে পারবেন। আর পড়াশোনা করলে তা কখনো বৃথা যায় না।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
রোববার থেকে সরকারি প্রাথমিকে মর্নিং স্কুল, খোলার প্রজ্ঞাপন জারি - dainik shiksha রোববার থেকে সরকারি প্রাথমিকে মর্নিং স্কুল, খোলার প্রজ্ঞাপন জারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শনিবারের ছুটি বহাল থাকছে - dainik shiksha প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শনিবারের ছুটি বহাল থাকছে ফের আন্দোলনের হুশিয়ারি চুয়েট শিক্ষার্থীদের - dainik shiksha ফের আন্দোলনের হুশিয়ারি চুয়েট শিক্ষার্থীদের গরমে কলেজে কোচিং, দুদিনে অসুস্থ ৮ ছাত্রী - dainik shiksha গরমে কলেজে কোচিং, দুদিনে অসুস্থ ৮ ছাত্রী কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে নিবন্ধিত শিক্ষক নিয়োগে এনটিআরসির নতুন নির্দেশনা - dainik shiksha নিবন্ধিত শিক্ষক নিয়োগে এনটিআরসির নতুন নির্দেশনা দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে জাল সনদে চাকরি করছে কয়েক হাজার হেলথ টেকনোলজিস্ট - dainik shiksha জাল সনদে চাকরি করছে কয়েক হাজার হেলথ টেকনোলজিস্ট ফের আন্দোলনের হুশিয়ারি চুয়েট শিক্ষার্থীদের - dainik shiksha ফের আন্দোলনের হুশিয়ারি চুয়েট শিক্ষার্থীদের আইনি লড়াইয়ে যাচ্ছেন শিক্ষক নেতা কাওছার শেখ - dainik shiksha আইনি লড়াইয়ে যাচ্ছেন শিক্ষক নেতা কাওছার শেখ please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0043709278106689