সভাপতির বিরুদ্ধে অধ্যক্ষকে পিটিয়ে বের করে দেয়ার অভিযোগ

সরাইল (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি |

সরাইলে সদ্য প্রতিষ্ঠিত তিতাস মডেল কলেজের সভাপতির বিরুদ্ধে অধ্যক্ষকে মারধর করে বের করে দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত ৭ জানুয়ারি বিকালে অধ্যক্ষের কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। আহত অধ্যক্ষ এ কে এম রমজান আলী এ ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ করলেও এখনো তা নথিভুক্ত হয়নি।

অভিযুক্ত সভাপতি রাজিব আহমেদ রাজ্জি শাহবাজপুর ইউপি চেয়ারম্যান ও যুবলীগের (বিতর্কিত) সাধারণ সম্পাদক। তার বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতা ও কলেজের নাম ভাঙিয়ে অবৈধ পন্থায় মোটা অঙ্কের টাকা উত্তোলন করে আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে।

পুলিশ, অভিযোগপত্র ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দে স্থানীয় লোকজনের উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত হয় তিতাস মডেল কলেজ। প্রতিষ্ঠায় ব্যয় হয়েছে ৩০-৩৫ লাখ টাকা। ১০ জন শিক্ষক-কর্মচারী ও ৬৪ জন শিক্ষার্থী নিয়ে ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে যাত্রা শুরু করে কলেজটি। কলেজ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ইউপি চেয়ারম্যান রাজিব আহমেদ। কলেজের জন্য শাহবাজপুর গ্রামের একাধিক ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান থেকে কোটি টাকা অনুদান টাকা উত্তোলন করেছেন সভাপতি। কোনো টাকা কলেজের হিসাবে জমা দেননি। উনার হাতেই খরচ করেছেন। গত মঙ্গলবার বিকালে অধ্যক্ষের কার্যালয়ে বসে পরামর্শ সভা। সভায় অধ্যক্ষ সভাপতির কাছে উত্তোলিত অনুদানের টাকার পরিমাণ ও খরচের বিষয়টির হিসাব-নিকাশের প্রস্তাব দেন। এতে করে তারা দু’জনের মধ্যে বাক-বিতণ্ডা হয়। এক পর্যায়ে রাজিব আহমেদ, ফায়জুল হক ও রোমান মিলে অধ্যক্ষকে মারধর করতে থাকেন। অধ্যক্ষের আর্তচিৎকারে শিক্ষার্থী ও আশপাশের লোকজন দৌঁড়ে এসে তাকে উদ্ধার করেন। আহত অধ্যক্ষ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। এখন কলেজ ক্যাম্পাসে অধ্যক্ষকে যেতে দেয়া হচ্ছে না।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ধীতপুর গ্রামের বাসিন্দা প্রবাসী মো. সুমন মিয়া বলেন, আমি কলেজের একজন অংশীদার। রাজ্জি ও রোমানের হাতে নগদ ২৩ লাখ টাকা দিয়েছি। কোনো কাগজপত্র হয়নি। আর্থিক লেনদেনের বিষয় নিয়ে বাকবিতণ্ডার এক পর্যায়ে সভাপতি অধ্যক্ষের উপর হাত তুলেন। বিষয়টি আমার কাছে ভালো লাগেনি। গত মঙ্গলবারের পর থেকে আমি কোথাও যাইনি। মুঠোফোনটিও বন্ধ রেখেছি।

সভাপতি রাজিব আহমেদ বলেন, অর্ধ-বার্ষিক পরীক্ষার ফলাফল ভালো হয়নি। বিষয়টি আলোচনার জন্য বসেছিলাম। আমি অধ্যক্ষকে মারধর করিনি। আর্থিক বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। সব জানেন অধ্যক্ষ।

অধ্যক্ষ রমজান আলী বলেন, আমি নগদ ৭ লাখ ৬১ হাজার টাকা দিয়েছি। রাজিব আহমেদ কলেজ প্রতিষ্ঠার কথা বলে বিভিন্নভাবে কোটি টাকা অনুদান উত্তোলন করেছেন। ওই টাকা দিয়েই উনি অংশীদার হতে চাচ্ছেন। টাকার হিসাব চাওয়ায় উনার তিনজন ভাড়াটিয়া ও আরও কয়েকজন মিলে দরজা লাগিয়ে আমাকে এলোপাতাড়ি মারধর করে কলেজ থেকে বের করে দিয়েছে। এ বিষয়টি কাউকে জানালে বা মামলা করলে হত্যা করে লাশ গুমের হুমকিও দিয়েছেন। থানায় মামলা দিয়েছি। কিন্তু এখনো নথিভুক্তি হচ্ছে না।

সরাইল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শাহাদাত হোসেন টিটো বলেন, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত চলছে। সত্যতা পেলে যথাযথ ব্যবস্থা নিব।

নির্বাহী কর্মকর্তা এ এস এম মোসা বলেন,  অধ্যক্ষ আমার কাছে এসেছিলেন। আমি উনাকে আইনি প্রক্রিয়ায় এগুতে বলেছি।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
সফটওয়্যারে কারিগরি ত্রুটি/ ইনডেক্সধারী শিক্ষকদের তথ্য ইমেইলে আহ্বান - dainik shiksha সফটওয়্যারে কারিগরি ত্রুটি/ ইনডেক্সধারী শিক্ষকদের তথ্য ইমেইলে আহ্বান শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বৈত নীতি! - dainik shiksha শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বৈত নীতি! হিটস্ট্রোকে শিক্ষকের মৃত্যু - dainik shiksha হিটস্ট্রোকে শিক্ষকের মৃত্যু লিখিততে প্রক্সি দিয়ে পার, মৌখিক পরীক্ষায় এসে ধরা - dainik shiksha লিখিততে প্রক্সি দিয়ে পার, মৌখিক পরীক্ষায় এসে ধরা কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে - dainik shiksha এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে শিক্ষক কেনো বদলি চান - dainik shiksha শিক্ষক কেনো বদলি চান ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধনের লিখিত পরীক্ষা হতে পারে জুলাইয়ে - dainik shiksha ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধনের লিখিত পরীক্ষা হতে পারে জুলাইয়ে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0065860748291016