সমস্যা নিরসনে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এগিয়ে আসছে না কেন

দৈনিক শিক্ষা ডেস্ক |

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে আবাসিক হলের দাবিতে প্রায় এক মাস ধরে আন্দোলন করে আসছেন শিক্ষার্থীরা। হলের দাবিতে এর আগেও কয়েকবার জোরালো আন্দোলন হয়েছে। তবে অভিযোগ আছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোগের অভাবেই হল নির্মাণ হয়নি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য ঢাকার কেরানীগঞ্জে প্রায় ২৫ বিঘা জমি থাকলেও সেখানে হল নির্মাণ হচ্ছে না। পূর্বাচলে ৫০ একর জমি চাওয়া হয়েছে। দুই বছর আগে মেয়েদের হলের নির্মাণ কাজ শুরু হলেও এখনও নিচতলার কাজই শেষ হয়নি। শেষ পর্যন্ত পুরনো কারাগারের জায়গায় হল নির্মাণের দাবিতে নতুন করে আন্দোলনে নেমেছেন শিক্ষার্থীরা।

কলেজ থাকাকালে এক সময় ১১টি ছাত্রাবাস থাকলেও কাগজপত্র না থাকা বা সংরক্ষণ না করায় তিনটি বাদে বাকিগুলো বেদখলে। দখলে থাকা তিনটির জায়গাতেও হল করা হচ্ছে না। শুধু তা-ই নয়, সংস্কার না করায় সেগুলোতে থাকার পরিবেশ নেই।

২০০৫ সালে দেড়শ’ বছরের পুরনো জগন্নাথ কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর করা হয়। এখন ৩১টি বিষয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পড়ানো হচ্ছে। ১৮ হাজার ৪৭৫ শিক্ষার্থী পড়ছেন এখানে, শিক্ষক প্রায় ৬০০।এত বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থীর জন্য কোন আবাসিক হল নেই, অথচ এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নির্বিকার।

হল উদ্ধার ও নির্মাণে বারবার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে, সেখানে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শুধু জমি চেয়ে আবেদন করছে। নিজস্ব জমিতে হল বানাচ্ছে না কেন? হল উদ্ধারে ২০১৪ সালে কমিটি গঠিত হলো। তবু হল পুনরুদ্ধারে চেষ্টা নেই কেন? বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফ থেকে বলা হচ্ছে, চেষ্টার কমতি নেই।

কিন্তু সাদা চোখে এর কোন প্রমাণ মিলছে না।এই এতগুলো কেন’র উত্তর দেবে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তবে প্রশ্ন আরও আছে। প্রশ্নগুলো শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে ঘিরে।ছাত্ররা দীর্ঘদিন ধরে হলের দাবিতে আন্দোলন করছেন। দেশের ৩৮টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের কোথাও এমন সংকট নেই।

আমরা মনে করি, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তখনই আরও ইতিবাচক হবে, যখন শিক্ষা মন্ত্রণালয় তাদের ইতিবাচক হতে সহযোগিতা করবে। ছাত্রদের লেখাপড়া দেখভালের দায়িত্ব শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সবাই আবাসিক হল পাবেন আর একটি প্রতিষ্ঠানের কেউ পাবেন না।

তাদের শিক্ষাজীবন সংকটে পড়বে, এসব কি সঠিক ব্যবস্থাপনার ইঙ্গিত দেয়? শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উচিত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের হল উদ্ধার ও নির্মাণের বিষয়গুলো আরও সুচারুভাবে খতিয়ে দেখা। এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দুর্বলতা থাকলে সে ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে হবে।

এ ব্যাপারে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগ আছে বলে মনে করা যাচ্ছে না। হল সমস্যা সমাধানে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগহীনতা পরিস্থিতি আরও জটিল করছে। হলের দাবিতে আন্দোলনরত ছাত্রদের সঙ্গে আলোচনায় বসে তাদের আশ্বস্ত করা উচিত যে, তাদের সমস্যা নিরসন হবে এবং এ ব্যাপারে সরকার যথেষ্ট সজাগ আছে।

আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের পথ খোঁজা খুব একটা জটিল নয়। তবে সময়মতো সেটা করা না হলে ন্যায্য দাবির ছাত্র আন্দোলন যে সহজে দমানো যায় না বিষয়টা মনে রাখা দরকার।

দৈনিক সংবাদের সম্পাদকীয়


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ ১২ মে - dainik shiksha এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ ১২ মে খাড়িয়া ভাষা সংরক্ষণে উদ্যোগ গ্রহণের আহবান প্রধান বিচারপতির - dainik shiksha খাড়িয়া ভাষা সংরক্ষণে উদ্যোগ গ্রহণের আহবান প্রধান বিচারপতির উপবৃত্তির সব অ্যাকাউন্ট নগদ-এ রূপান্তরের সময় বৃদ্ধি - dainik shiksha উপবৃত্তির সব অ্যাকাউন্ট নগদ-এ রূপান্তরের সময় বৃদ্ধি শিক্ষক হতে চান না শিক্ষক দম্পতিদের কৃতী সন্তানরা - dainik shiksha শিক্ষক হতে চান না শিক্ষক দম্পতিদের কৃতী সন্তানরা কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস - dainik shiksha শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0029211044311523