সরকারিকরণের দাবিতে শিক্ষকদের আন্দোলন চলছে

নিজস্ব প্রতিবেদক |

বাদপড়া চার হাজারের বেশি প্রাথমিক বিদ্যালয় সরকারিকরণের দাবিতে বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে রোদ বৃষ্টি মাথায় নিয়ে ৩৩ তম দিনের মতো অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন শিক্ষকরা। আজ ১৬তম দিনের মতো আমরণ অনশন কর্মসূচি পালন করছেন বলে দাবি করেন তাঁরা। ‘বেসরকারি প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির’ ব্যানারে মাসব্যাপী অবস্থান কর্মসূচিতে দুই শতাধিক শিক্ষক অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাদের মধ্যে ৬ জন শিক্ষক ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন। আন্দোলনরত একজন শিক্ষক চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেছেন। তবে, শিক্ষকদের আন্দোলন মাস পেরোলেও প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের কোনো সাড়া মেলেনি বলে দৈনিক শিক্ষাকে ডটকমকে জানিয়েছেন অবস্থানরত শিক্ষকরা। 

সমিতির সিনিয়র সহ-সভাপতি ফিরোজ উদ্দিন দৈনিকশিক্ষা ডটকমকে জানান, চার হাজারের বেশি প্রাথমিক বিদ্যালয় সরকারিকরণের দাবিতে গত ৩ জুলাই থেকে আমরণ অনশন শুরু করেছেন শিক্ষকরা। গত ৩৩ দিন ধরে প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান করছি। ১ মাসের অবস্থানে দুই শতাধিক শিক্ষক অসুস্থ হয়েছেন। এদের মধ্যে ৬ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত। কিন্তু, স্কুলগুলো সরকারিকরণের বিষয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের কোন আশ্বাস মেলেনি। তিনি আরও জানান, ৪ হাজার ১৫৯টি প্রাথমিক বিদ্যালয় সরকারিকরণের ঘোষণা দেয়া না পর্যন্ত শিক্ষকদের আমরণ অনশন কর্মসূচি চলবে।

তিনি আরও জানান, বৃষ্টিতে ভোগান্তিতে পড়ছেন শিক্ষকরা। ফুটপাতে পলিথিন দিয়ে তার নিচে অনশন করছেন শিক্ষকরা। মশার কামড়ে অতিষ্ঠ। এখন পর্যন্ত সভাপতিসহ ৬ জন শিক্ষক ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন। 

গত ৩ জুলাই থেকে আমরণ অনশন শুরু করেছেন তাঁরা। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত অনশন চলবে বলে জানিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষকরা। এর আগে গত ১৬ জুন থেকে বাদপড়া চার হাজারের বেশি প্রাথমিক বিদ্যালয় সরকারিকরণের দাবিতে ‘বেসরকারি প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির’ ব্যানারে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান করেছেন শিক্ষকরা। তবে, গত ১৮ এপ্রিল প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সাফ জানিয়েছে, নতুন করে আর প্রাথমিক বিদ্যালয় সরকারিকরণের কোনো প্রস্তাব আপাতত বিবেচনা করার সুযোগ নেই।

অবস্থানরত শিক্ষকরা জানান, সরকারি হয়নি এমন চার হাজার ১৫৯টি স্কুল রয়েছে। মাঠ পর্যায় থেকে প্রকৃত তথ্য না দেয়ায় এসব স্কুল সরকারি হয়নি বলে দাবি করেন শিক্ষকরা। শিক্ষকরা জানান, সরকারিকরণের প্রক্রিয়ার সময় রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম স্থগিত করায় তারা বেতন-ভাতা, শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি ও টিফিন থেকেও বঞ্চিত হচ্ছেন। বেতন-ভাতা না পেয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন শিক্ষকরা। তারপরেও এসব স্কুলের শিক্ষার্থীরা ২০০৯ খ্রিষ্টাব্দ থেকে প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করছেন বলে দাবি করেন শিক্ষকরা।

শিক্ষকরা জানান, তাদের অনেকেরই চাকরিতে প্রবেশের বয়স অতিক্রান্ত হয়ে গেছে। অধিকাংশ শিক্ষকের অন্যত্র চাকরির আবেদনের সুযোগ নেই। তাই, বাদপড়া ৪ হাজারের বেশি প্রাথমিক বিদ্যালয় সরকারি করে শিক্ষকদের দুরাবস্থা থেকে মুক্তি দিতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সুদৃষ্টি কামনা করেছেন তারা।

শিক্ষকরা দাবি করেন, তৎকালীন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার ১ হাজার ৩০০টি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সরকারিকরণের জন্য তথ্য সংগ্রহে মাঠ পর্যায়ে যাচাই বাছাই কমিটিকে নির্দেশনা দিয়েছিলেন। কিন্তু সে বিষয়ে কোনো অগ্রগতি পরিলক্ষিত হয়নি।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মাকে নির্যাতনের অভিযোগ - dainik shiksha শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মাকে নির্যাতনের অভিযোগ শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস - dainik shiksha শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস সপ্তদশ জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষা কাল - dainik shiksha সপ্তদশ জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষা কাল দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা - dainik shiksha রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা - dainik shiksha শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0026650428771973