সরকারিকরণের নামে ভুয়া চিঠি পাঠিয়ে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের কাছে টাকা আদায়ের চেষ্টা করছে একটি অসাধু চক্র। বুধবার (১৯ ডিসেম্বর) শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও ব্যানবেইসের নাম ব্যবহার করে সরকারিকরণ প্রসঙ্গে দুটি চিঠি ইমেইলে নীলফামারীর বিভিন্ন কলেজের অধ্যক্ষদের কাছে পাঠানো হয়। চিঠিতে দুটি বিকাশ নম্বর দিয়ে ব্যানবেইসের নামে টাকা চাওয়া হয়েছে। এরকম চিঠি পেয়ে উৎকণ্ঠিত হয়ে পড়েছেন অধ্যক্ষরা। দৈনিক শিক্ষাকে এতথ্য জানিয়েছেন নীলফামারী জেলার বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নামে জারি করা ভুয়া চিঠিতে বলা হয়, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান সরকারিকরণের লক্ষ্যে জেলা সদর এলাকার প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রাথমিক সিলেকশন কার্যক্রম সম্পাদনের ক্ষমতা ব্যানবেইসকে দেয়া হয়েছে। চিঠিটিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিল ও তারিখের অংশ টেম্পারিং করা। জাল করা হয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. সোহরাব হোসাইন ও উপসচিব অনোয়ারুল হকের স্বাক্ষর। এক্ষেত্রে অন্য একটি চিঠি থেকে স্বাক্ষরগুলো কেটে আনা হয়েছে বলে ধারণা করা হয়।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নামে ভুয়া চিঠিটির সাথে বাংলাদেশ শিক্ষাতথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরোর নামে অপর একটি ভুয়া চিঠি পাঠানো হয়েছে। এ চিঠিতে বলা হয়, নীলফামারী জেলার সদর এলাকায় বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো প্রাথমিক সিলেকশনের জন্য ১৫০০ টাকা পাঠাতে হবে। ব্রাক ব্যাংকের মোবাইল ব্যাংকিং একাউন্ট বিকাশে এ টাকা পাঠাতে বলা হয়। এক্ষেত্রে ০১৭৪৫২১৮৭১৩ এবং ০১৯৯৯৬৬১১২৬ নম্বর দুটি বিকাশ একাউন্ট খুলতে ব্যবহার করা হয়েছে। এখানে টেম্পারিং করা হয়েছে ব্যানবেইসের উপপরিচালক মো. ইব্রাহীম খলিলের স্বাক্ষর। এ ভুয়া চিঠিতেও ব্যানবেইসের সিল ও তারিখ অন্য চিঠি থেকে কেটে আনা হয়েছে বলে ধারণা করা হয়।
নীলফামারী সদরের ছমির উদ্দিন স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ মেসবাহুল হক বুধবার (১৯ ডিসেম্বর) ইমেইল মারফত এ চিঠি দুটি পান। সকালে মোবাইল ফোনের মেসেজ দিয়ে চিঠির ব্যাপারে জানানো হয় অধ্যক্ষকে। চিঠির ব্যাপারে অধ্যক্ষ মেসবাহুল হক দৈনিক শিক্ষাকে বলেন, চিঠি পাওয়ার পর সন্দেহ হলে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরে যোগাযোগ করে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে খুলে বলি। এ ধরনের কোন চিঠি প্রদান করা হয়নি বলে জানান কর্মকর্তারা। পরে জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও জেলা শিক্ষা অফিসারকে জানাই। মন্ত্রণালয় উক্ত চিঠির বিষয়ে অবগত হওয়ার পর বলেছে, এ ধরনের কোন চিঠি তারা পাঠায়নি। তাই এ ধরনের প্রতারক চক্রের হাত থেকে সজাগ থাকতে বলা হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম দৈনিক শিক্ষাকে জানান, বিষয়টি আমাকে জানানো হয়েছে। এ বিষয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রতিষ্ঠান প্রধানকে বলা হয়েছে।