কলেজ সরকারি হওয়ার পর শিক্ষকদের বেতন আগের চেয়ে কমে গেছে বলে অভিযোগ করেছেন সরকারিকৃত কলেজ শিক্ষক ও কর্মচারী বেতন গ্রেড সুরক্ষা কমিটি। বেতন কমে যাওয়ার বিষয়টিকে বৈষম্যমূলক উল্লেখ করে বেসরকারি আমলের গ্রেডে বেতন-ভাতা দাবি করেছেন শিক্ষকরা।
বুধবার (২১ জুন) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়। কমিটির আহ্বায়ক শামসুল আলম এতে বক্তব্য দেন। দাবি না মানা হলে কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, কলেজ সরকারি হওয়ায় সুযোগ-সুবিধা বাড়বে বলে শিক্ষকরা আশায় বুক বেঁধেছিলেন। এখন উল্টো বহু শিক্ষকের বেতন কমে গেছে। আগে যে গ্রেডে বেতন ছিল, এখন আরও কম দেওয়া হচ্ছে। অধ্যক্ষ-উপাধ্যক্ষদের বেতন ঠিক থাকলেও জ্যেষ্ঠ শিক্ষকরা বেতন কম পাচ্ছেন। সহকারী অধ্যাপকদের বেতন গ্রেড নামিয়ে দেওয়া হয়েছে প্রভাষকের স্কেলে।
সরকারিকৃত কলেজ শিক্ষক ও কর্মচারী আত্তীকরণ বিধিমালা-২০১৮ সংশোধন করে সপ্তম গ্রেডপ্রাপ্ত প্রভাষক, প্রদর্শক, শরীরচর্চা শিক্ষক, গ্রন্থাগারিক, সহকারী গ্রন্থাগারিক, তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের আগের বেতন গ্রেড বহাল রাখাসহ ছয় দফা দাবি জানিয়েছে বেতন গ্রেড সুরক্ষা কমিটি।
অন্য দাবিগুলো হলো– সদ্য সরকারিকৃত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর জনবল আত্তীকরণের কার্যক্রম পর্যালোচনা সভার ১ নম্বর সুপারিশ বাস্তবায়ন করতে হবে। বেতন আগের গ্রেড পাওয়ার লক্ষ্যে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের গাইডলাইন তৈরি ও বাস্তবায়নের অগ্রগতি প্রকাশ করতে হবে। সরকারি চাকরি পাঁচ বছর পূর্ণ হওয়ায় সপ্তম গ্রেডধারীদের প্রমোশন দিয়ে সহকারী অধ্যাপকের মর্যাদা দিতে হবে। আত্তীকৃত শিক্ষক-কর্মচারীদের বেসরকারি আমল হিসেবে ধরে বেতন ভাতা ও জ্যেষ্ঠতা নির্ধারণ এবং পদোন্নতি, পেনশন ও ছুটি কার্যকর করতে হবে। শিক্ষকদের জন্য পদ সোপান তৈরি করে জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে পদোন্নতির বিধান রাখতে হবে।
শামসুল জানান, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী সরকারি কলেজবিহীন প্রতিটি উপজেলায় বঙ্গবন্ধু, তাঁর পরিবার এবং বিশিষ্ট ব্যক্তির নামে একটি করে কলেজ জাতীয়করণ করা হয়েছে। এরই মধ্যে সারাদেশে প্রায় ৩৫০টি কলেজ সরকারিকরণের কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানে সরকারিকরণ কাজ চূড়ান্ত করতে আত্তীকরণ বিধিমালা-২০১৮ জারি করা হলেও অধিকাংশ শিক্ষক-কর্মচারীর আগের বেতন গ্রেডের অবনমন করা হয়েছে; যা খুবই অমানবিক। বেতন গ্রেড সুরক্ষা কমিটি কয়েক হাজার শিক্ষক-কর্মচারীর উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা লাঘবে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছে। কমিটি আশা করছে, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ আগামী ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে। তা না হলে বঞ্চিত শিক্ষক সমাজকে সঙ্গে নিয়ে ন্যায়সংগত অধিকার আদায়ে কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।’
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন কমিটির সদস্য সচিব সাজেদুর রহমান লিটু, যুগ্ম আহ্বায়ক নাছির উদ্দীন, বরিশাল বিভাগীয় কমিটির আহ্বায়ক ফারুক ফকির, সদস্য সচিব হাবিবুর রহমান প্রিন্স, রাজশাহী বিভাগীয় কমিটির আহ্বায়ক এম কে হাসান কিরণ প্রমুখ।