অ্যাটাচমেন্টে লাগাম টানছেন মহাপরিচালকসরকারি কলেজে তীব্র শিক্ষক সংকট

সুতীর্থ বড়াল, দৈনিক শিক্ষাডটকম |

বরগুনা সরকারি মহিলা কলেজে প্রভাষকের মোট পদ ৩৩। এর মধ্যে কর্মরত রয়েছেন মাত্র সাতজন। ২৬টি পদই শূন্য। আর আটটি বিষয়ে কোনো শিক্ষক নেই ২ হাজার ছাত্রীর এই কলেজে। বাংলাদেশের অধিকাংশ সরকারি কলেজেই শিক্ষক সঙ্কটের চিত্রটা এমন। রাজধানী, বিভাগ বা জেলা শহর থেকে যে কলেজ যতো দূরে, শিক্ষক সংকটও ততো বেশী। আবার কারণে, অকারণে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা (মাউশি) অধিদপ্তরে অনেক শিক্ষককে সংযুক্ত করে রাখার কারণে এই সঙ্কট আরো বেড়েছে গত কয়েকবছরে। এসব সংযুক্ত কর্মকর্তাকে প্রায়শই অসংযুক্ত কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত থাকতে দেখা যায়। এছাড়া উপর মহলের আশীর্বাদে রাজধানীর কিছু কলেজে পদের চেয়ে অতিরিক্ত শিক্ষক রয়েছেন।

ব্যানবেইসের তথ্য বলছে, বর্তমানে সরকারি কলেজগুলোতে প্রতি শিক্ষকের বিপরীতে শিক্ষার্থী আছেন ৯৭ জন, যা গত ছয় বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দে দেশে সরকারি কলেজগুলোতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীর অনুপাত ছিলো ১:৭৯।

সম্প্রতি মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের এক সভায় শিক্ষক সংকটের বিষয়টি উত্থাপিত হয়। সেখানে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ বলেন, দীর্ঘদিন ধরে মাউশি অধিদপ্তরে অনেক শিক্ষক সংযুক্ত হিসেবে আছেন। কেউ পাঁচ বছর, আবার কেউ কলেজে যোগদান করে দুই মাসও ক্লাস করেননি –এমন শিক্ষকও সংযুক্ত আছেন। তাদেরকে সংযুক্ত হিসেবে মাউশি অধিদপ্তরে আনা হয়েছিলো। অথচ প্রান্তিক পর্যায়ের কলেজগুলোতে শিক্ষক সংকট প্রকট।  

ওই সভার পর দৈনিক আমাদের বার্তার এ সম্পর্কিত এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এসব সংযুক্ত কর্মকর্তার কারণে কলেজে শিক্ষক সংকট তৈরি হোক তা মাউশি অধিদপ্তরও চায় না। তাই সব সংযুক্ত কর্মকর্তার অফিস আদেশ বাতিল করে নিজ কলেজে পাঠানো হয়েছে। 

ডিজি আরো বলেন, রাজধানীর কলেজগুলোতে পদের চেয়ে অতিরিক্ত শিক্ষক রয়েছেন। তাদেরকে কাজে লাগানোর উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। তাদেরকে নিয়ে এসিআর যাচাই-বাছাই, পদোন্নতিসহ বিভিন্ন কাজ করা হবে। 

মাউশি অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, দেশের দেশে সরকারি কলেজ ছিলো ৩২৯টি। নতুন জাতীয়করণ হয়েছে আরো ৩৩৪টি। সব মিলিয়ে বর্তমানে ৬৬৩টি সরকারি কলেজ আছে। 


খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গোপালগঞ্জের সরকারি শেখ মুজিবুর রহমান কলেজে শিক্ষকের মোট পদ ৪৬। এর মধ্যে শূন্য রয়েছে ১৬টি। শরীয়তপুরে গোলাম হায়দার খান সরকারি মহিলা কলেজে ১১ শিক্ষকের পদ শূন্য। হাজারীবাগে শহীদ বেগম শেখ ফজিলাতুন নেছা সরকারি কলেজে ছয় শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে। দেশের অধিকাংশ কলেজের অবস্থা এগুলোর মতোই। 

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিভাগীয় ও জেলা শহর পর্যায়ের কলেজগুলোতে পর্যাপ্ত শিক্ষক থাকলেও এর বাইরে অধিকাংশ কলেজেই শিক্ষক সংখ্যা অপ্রতুল। বিশেষ করে সাম্প্রতিক সময়ে যেসব কলেজকে সরকারীকরণ করা হয়েছে, সেসব কলেজে সংকট সবচেয়ে বেশি। এর ফলে কলেজগুলোতে শিক্ষার মান যেমন নিশ্চিত হচ্ছে না, তেমনি নিয়মিত ক্লাস না হওয়ায় শিক্ষার্থীদের অনুপস্থিতির হারও বাড়ছে।

কলেজপ্রধানরা বলছেন, চাহিদা অনুযায়ী শিক্ষক পদ সৃজন না হওয়া, সদ্য নিয়োগকৃতদের কলেজগুলোয় সুষমভাবে বণ্টন না করা, সমিতির নেতাদের প্রয়োজনে অযথাই অধিদপ্তরে সংযুক্ত রাখা এবং দীর্ঘ নিয়োগপ্রক্রিয়া শিক্ষক সংকটের জন্য দায়ী। 

শিক্ষাসহ সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেলের সঙ্গেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।

দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেল  SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
ঘুষকাণ্ড চাপা দিয়ে স্কুল অডিটে মনকিউল - dainik shiksha ঘুষকাণ্ড চাপা দিয়ে স্কুল অডিটে মনকিউল শিক্ষা একটি মৌলিক মানবাধিকার, জাতি গঠনের প্রধান হাতিয়ার - dainik shiksha শিক্ষা একটি মৌলিক মানবাধিকার, জাতি গঠনের প্রধান হাতিয়ার মাউশি কমকর্তা-কর্মচারী কল্যাণ পরিষদের নেতৃত্বে লিয়াকত-অহিদুর - dainik shiksha মাউশি কমকর্তা-কর্মচারী কল্যাণ পরিষদের নেতৃত্বে লিয়াকত-অহিদুর নবম-দশমের পাঠ্যবইয়ের চাহিদা আপলোডের নির্দেশ - dainik shiksha নবম-দশমের পাঠ্যবইয়ের চাহিদা আপলোডের নির্দেশ ক্ষমতায় গেলে ফরম থেকে কে কোন ধর্মের সেই প্রশ্ন তুলে দেয়া হবে - dainik shiksha ক্ষমতায় গেলে ফরম থেকে কে কোন ধর্মের সেই প্রশ্ন তুলে দেয়া হবে ডাকসুতে প্যানেল বাতিলসহ ৮দফা প্রস্তাবনা ইউআরআই‘র - dainik shiksha ডাকসুতে প্যানেল বাতিলসহ ৮দফা প্রস্তাবনা ইউআরআই‘র কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0049710273742676