সরকারি কলেজ অধ্যক্ষদের দায়িত্ব ও কর্তব্য

প্রফেসর খান হাবিবুর রহমান |

সরকারি কলেজসমূহে বিষয়-শিক্ষকদের সরাসরি অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। তাঁদের বেশিরভাগেরই প্রশাসনিক অভিজ্ঞতা থাকে না এবং পরবর্তীতে তাঁদের প্রশিক্ষণেরও তেমন ব্যবস্থা নেই। ফলে প্রতিষ্ঠান চালাতে বেগ পেতে হয়। অনেক ক্ষেত্রে অধ্যক্ষদের করণিক নির্ভর হতে হয়। একজন অধ্যক্ষকে যেসব দায়িত্ব পালন করতে হয় ও করা উচিৎ তার একটি সংক্ষিপ্ত হিসেব তুলে ধরছি। 

অধ্যক্ষ মহোদয় প্রতিষ্ঠানের প্রশাসনিক প্রধান। Acts, Ordinances, Instructions, Rules and regulations, অনুশাসন ইত্যাদি মেনে তাঁকে প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করতে হয়। এছাড়াও বিভিন্ন কাজে  বোর্ড, বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্দেশনাও অনুসরণ করতে হয়। উল্লেখিত দলিলাদির তিনি সংরক্ষকও বটে।। অর্থ বছরের শুরুতে বার্ষিক বাজেট প্রণয়ন এবং সারা বছর তদনুযায়ী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করা। পদাধিকার বলে বিভিন্ন নিয়োগ কমিটিতে দায়িত্ব পালন।

পদাধিকারবলে অধ্যক্ষ আয়ন-ব্যয়ন কর্মকর্তা। পিপিআর অনুযায়ী সব আর্থিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতে হবে। এর ব্যত্যয় ঘটলে অডিট আপত্তি এবং অবসরকালে তাঁকেই এর দায়ে ভার  বহন করতে হয়ে ও অপমানজনকভাবে আর্থিক গচ্চা দিতে হয়।
পরীক্ষা কমিটিগুলো অতি  দায়িত্ববান ও বিশ্বস্ত শিক্ষকদের দিয়ে গঠন করতে হবে। পাঠদান ও সহশিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা ও  তদারকি করা।

প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজনীয় ভৌত অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য পরিকল্পনা তৈরি করা এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের (মাউশি অধিদপ্তর,  শিক্ষা প্রকৌশল, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল  ইত্যাদি) কাছে পেশ করা ও যোগাযোগ রক্ষা করা।

প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী, শিক্ষক- কর্মচারী, প্রতিষ্ঠানের ভৌত অবকাঠামো ও আঙ্গিনার নিরাপত্তা বিধান অধ্যক্ষের দায়িত্ব। তিনি নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ (জনপ্রতিনিধি, স্থানীয়  প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন ও  অগ্নিনির্বাপণ কর্তৃপক্ষ ইত্যাদি) এর সাথে সবসময় যোগাযোগ রক্ষা করবেন।

প্রতিষ্ঠানের সব কাজ পরিচালনার জন্য বছরের শুরুতেই বিভিন্ন কমিটি গঠন করবেন এবং কমিটির মাধ্যমে সব কাজ করতে হবে। প্রশাসন পরিচালনার স্বার্থে জনপ্রতিনিধি, স্থানীয়  প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের সাথে সবসময় যোগাযোগ রক্ষা করতে হবে।

প্রশাসনের সবক্ষেত্রে  শুদ্ধাচার, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা থাকতে হবে। নিরপেক্ষ ও নির্মোহ থেকে প্রশাসন চালাতে হবে। বিভিন্ন প্রয়োজনে প্রতিনিধি নির্বাচনকালে খেয়াল রাখতে হবে নির্বাচিত ব্যক্তি যেন অধ্যক্ষের উপযুক্ত প্রতিনিধিত্ব করতে পারেন। শিক্ষক-কর্মচারীদের নৈমিত্তিক ছুটি মঞ্জুরের বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে নৈমিত্তিক ছুটি অধিকার নয় সুযোগ। শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা গ্রহণ ও পর্যবেক্ষণ এবং শিক্ষক সভায় ফলাফল পর্যালোচনা করা এবং নির্দেশনা প্রদান।

শিক্ষক কর্মচারীদের বার্ষিক গোপনীয় অনুবেদন ফর্ম যথাযথভাবে পূরণ, অনুবেদন ও প্রতিস্বাক্ষর করে সরকার নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কর্তৃপক্ষ বরাবরে প্রেরণ করতে হবে।

শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সম্মিলিত আয়োজন করা এবং সেখানে দেশপ্রেম,সততা ও শুদ্ধচার বিষয় আলোচনা করা। শিক্ষার্থীদের শু-নাগরিক হিসেবে গড়ে ওঠার জন্য উজ্জীবিত করা।

প্রতিষ্ঠানের জমির দলিলপত্রাদি সংরক্ষণ, নিয়মিত বিদ্যুৎ বিল, গ্যাস বিল, টেলিফোন বিল ইত্যাদি সংগ্রহ করা ও পরিশোধের দায়িত্বও অধ্যক্ষের।

লেখক: সাবেক মহাপরিচালক মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর এবং নায়েম। 


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মাকে নির্যাতনের অভিযোগ - dainik shiksha শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মাকে নির্যাতনের অভিযোগ শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস - dainik shiksha শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস সপ্তদশ জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষা কাল - dainik shiksha সপ্তদশ জুডিশিয়াল সার্ভিস পরীক্ষা কাল দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা - dainik shiksha রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা - dainik shiksha শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0030560493469238