সরকারি চাকরিজীবী কীভাবে ৩ কোটি টাকায় ফ্ল্যাট কিনেছেন : হাইকোর্ট

দৈনিকশিক্ষা প্রতিবেদক |

বরখাস্ত ডিআইজি প্রিজন বজলুর রশিদের ৫ বছরের সাজা বহালের রায়ের পর্যবেক্ষণে হাইকোর্ট বলেছেন, বজলুর রশিদের মা নুরজাহান বেওয়ার কোনো আয় ছিল না। ছিল না কোনো আয়কর নথিও। যেসব দলিল দিয়ে তিনি সম্পদের মালিক হয়েছেন সেগুলো নিয়ে প্রশ্ন উঠে এসেছে। এসব সম্পদ তিনি কীভাবে ক্রয় করলেন?

বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের একক হাইকোর্ট বেঞ্চ বজলুর রশিদের সাজা বহালের পূর্ণাঙ্গ রায়ে এ পর্যবেক্ষণ দেন। গত ১৮ জুন হাইকোর্টের দেয়া এ রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে।  

আদালত তার পর্যবেক্ষণে বলেন, প্রকৃতপক্ষে বজলুর রশিদ অবৈধ পন্থায় অর্জিত অর্থ দিয়ে ওই দলিলগুলোর মাধ্যমে মায়ের নামে সম্পত্তি ক্রয় করেন। পরে সেসব সম্পত্তি নিজের নামে হেবা মূলে গ্রহণ করেন। এমন কর্ম নীতি-নৈতিকতারও পরিপন্থি। কারণ, অবৈধ অর্থ বৈধ করতে তিনি গর্ভধারিণী মায়ের নাম ব্যবহার করেছেন, যা একজন সন্তানের কাছে কোনোভাবেই কাম্য নয়।

রায়ে বলা হয়েছে, বরখাস্ত হওয়া ডিআইজি প্রিজন বজলুর রশিদ ৩ কোটি টাকায় একটি ফ্ল্যাট ক্রয় করেন। রাজধানীর সিদ্ধেশ্বরীতে ‘রূপায়ণ স্বপ্ন নিলয়’-এ ক্রয় করা ওই ফ্ল্যাটের আয়তন ছিল তিন হাজার বর্গফুট। একজন সরকারি চাকরিজীবী কীভাবে ৩ কোটি টাকা দিয়ে এ ধরনের একটি ফ্ল্যাট ক্রয় করেছেন, তা নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট।

আদালত বলেছেন, বজলুর রশিদ পৈত্রিক সূত্রে কোনো সম্পত্তি পাননি। তার আয়ের একমাত্র বৈধ উৎস ছিল সরকারি চাকরি। ২১ বছর চাকরি করে তা থেকে প্রাপ্ত বেতন থেকে পারিবারিক ব্যয় মিটিয়ে কোটি কোটি টাকা নগদ জমা রাখার বিষয়টি অবাস্তব, অবিশ্বাস্য ও কল্প কাহিনীকেও হার মানায়।

জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলায় বরখাস্ত ডিআইজি প্রিজন মো. বজলুর রশিদকে গত বছর ২৩ অক্টোবর ৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত। পাশাপাশি পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা এবং তিন কোটি ১৫ লাখ টাকায় ক্রয় করা ফ্ল্যাটটি রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্তের আদেশ দেয়া হয়।

এ রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেন ওই কারা কর্মকর্তা। ওই আপিল খারিজ করে বিশেষ জজ আদালতের দেয়া সাজা বহাল রাখেন  হাইকোর্ট।

রায়ে বলা হয়েছে, দুদক আইনের ২৭ (১) ধারায় আসামিকে দণ্ড ও জরিমানা করেছেন বিশেষ জজ আদালত। এ রায় ও দণ্ডাদেশ সঠিক ও আইনানুগ হয়েছে।

তবে আপিলকারীকে বিনাশ্রম কারাদণ্ডের পরিবর্তে সশ্রম কারাদণ্ড দেয়া আইনগতভাবে সঠিক হয়নি বলেও পর্যবেক্ষণে উল্লেখ করেন হাইকোর্ট।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
গুচ্ছ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির কমপ্লেইন বক্স বন্ধ - dainik shiksha গুচ্ছ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির কমপ্লেইন বক্স বন্ধ পদত্যাগে বাধ্য করা অধ্যক্ষকে ফুলেল শুভেচ্ছায় ফেরালেন শিক্ষার্থীরা - dainik shiksha পদত্যাগে বাধ্য করা অধ্যক্ষকে ফুলেল শুভেচ্ছায় ফেরালেন শিক্ষার্থীরা শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফেরার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার - dainik shiksha শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফেরার আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কম দামে বিটিসিএলের ইন্টারনেট দেয়া হবে: তথ্য উপদেষ্টা - dainik shiksha শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কম দামে বিটিসিএলের ইন্টারনেট দেয়া হবে: তথ্য উপদেষ্টা শিক্ষকের ছোড়া স্কেলের আঘাতে শিক্ষার্থীর চোখ হারানোর অভিযোগ - dainik shiksha শিক্ষকের ছোড়া স্কেলের আঘাতে শিক্ষার্থীর চোখ হারানোর অভিযোগ দুই শিক্ষকের বহিষ্কারের দাবিতে বাউবি শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ - dainik shiksha দুই শিক্ষকের বহিষ্কারের দাবিতে বাউবি শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ হলগুলোকে সন্ত্রাসমুক্ত করে ছাড়বো : রাবি উপাচার্য - dainik shiksha হলগুলোকে সন্ত্রাসমুক্ত করে ছাড়বো : রাবি উপাচার্য কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0029568672180176