সরকারি চাকরির দাবিতে একাই অনশনে বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন ঢাবি ছাত্র

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি |

শাহিন আলম ‘তীব্রমাত্রার দৃষ্টি প্রতিবন্ধী’ এক যুবক। সে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী। এসএসসি থেকে অনার্স পর্যন্ত তার রেজাল্টে আছে সাফল্যের পালক। হার না মানা এই যুবকের বাড়ি ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার আলমপুর গ্রামে। পিতা আব্দুল কাদেরের দুই সন্তানের মধ্যে শাহিন আলম ছোট। তার বড় ভাই সাইদুর রহমান সুজন বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করেন। বাবার টানাটানির সংসারে অভাব-অনটন লেগেই আছে। অভাবের সংসারের হাল ধরতে চান বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিক্ষার্থী শাহিন আলম। এজন্য তার দরকার একটি সরকারি চাকরি। তাই প্রধানমন্ত্রীর সরাসরি হস্তক্ষেপ কামনা করে তিনি বসেছেন অনশনে। 

ঝিনাইদাহ শহরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে সোমবার সকাল থেকে শাহীন আলম আমরণ অনশন শুরু করেছেন। তাকে সমর্থন ও তার দাবির প্রতি একাত্মতা প্রকাশ করে অনেক পথচারী সহমর্মিতা জানাচ্ছেন। শাহিন আলম জানিয়েছেন চাকরি না হওয়া পর্যন্ত তিনি অনশন চালিয়ে যাবেন। এতে যদি তার মৃত্যু হয় তবুও তিনি পিছপা হবেন না বলে দাবি তার।

শাহিন ২০১৩ খ্রিষ্টাব্দে এসএসসিতে জিপিএ ৪ ও ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দে এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ ৪ দশমিক ৫৮ পেয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অনার্স ভর্তি হন। ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দে তিনি অনার্স পাস করেন। বর্তমানে মাস্টার্সে অধ্যয়নরত।

শহীদ মিনার চত্বরে হ্যান্ডমাইক নিয়ে তিনি তার আবেদন জানাচ্ছেন। তিনি বলেন, সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে চাকরির আবেদন করছেন কিন্তু বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন হওয়ায় তাকে কেউ চাকরি দিচ্ছে না। শাহীন আলমের প্রশ্ন চাকরি যদি না-ই হবে তাহলে কেন সরকার তাকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ দিলো? 

শাহীন আলম জানান, লেখাপড়ার পাশাপাশি তিনি একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে কম্পিউটার প্রশিক্ষণ নিয়েছেন এবং তিনি নিজ উদ্যোগে ভারত, বাংলাদেশের প্রায় ২০০ শিক্ষার্থীকে কম্পিউটার প্রশিক্ষণ দিয়েছেন। 

শাহীন বলছেন, তার সরকারি চাকরির বয়সসীমা শেষ হয়ে যাচ্ছে অথচ ডিগ্রি নিয়েও চাকরিতে ঢুকতে পারছেন না। তিনি বলেন সংবিধানে প্রতিবন্ধী ব্যাক্তির অধিকার ও সুরক্ষা আইন, ২০১৩ এর ধারা (১) দ্ব্যর্থহীনভাবে ঘোষণা রয়েছে  ‘প্রতিবন্ধী ব্যক্তিকে বঞ্চিত বা তার প্রতি বৈষম্য করা বা তাকে বাধাগ্রস্থ করা যাবে না’। 

তিনি জানান, বিভিন্ন দপ্তরে নিয়োগ পরিক্ষায় অংশ নিয়ে লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েও অবহেলা ও অর্থের কাছে হার মেনেছেন। 

পরে সোমবার বিকালে ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসনের একজন ম্যাজিস্ট্রেট তাকে জেলা প্রশাসকের দপ্তরে নিয়ে যাওয়ার জন্য আসেন। কিন্তু চাকরি পাওয়ার কোন আশ্বাস না থাকায় তিনি অনশন ভঙ্গ বা জেলা প্রশাসকের দপ্তরে যাননি। তিনি বলেন, সাংবাদিকদের সামনে চাকরির প্রতিশ্রুতি পেলেই কেবল তিনি অনশন ভঙ্গ বা ঝিনাইদহ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার ত্যাগ করবেন।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি: শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি: শিক্ষা মন্ত্রণালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় - dainik shiksha অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় দুর্যোগে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছুটিতে বিশেষ কমিটি গঠনে নীতিমালা হবে: শিক্ষামন্ত্রী - dainik shiksha দুর্যোগে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছুটিতে বিশেষ কমিটি গঠনে নীতিমালা হবে: শিক্ষামন্ত্রী জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮ মে’র পরীক্ষা স্থগিত - dainik shiksha জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮ মে’র পরীক্ষা স্থগিত হিটস্ট্রোকে সাতক্ষীরায় শিক্ষকের মৃত্যু - dainik shiksha হিটস্ট্রোকে সাতক্ষীরায় শিক্ষকের মৃত্যু হিটস্ট্রোকের লক্ষণ ও করণীয় - dainik shiksha হিটস্ট্রোকের লক্ষণ ও করণীয় দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে চাকরিতে আবেদনের বয়স ৩৫ করতে শিক্ষামন্ত্রীর সুপারিশ - dainik shiksha চাকরিতে আবেদনের বয়স ৩৫ করতে শিক্ষামন্ত্রীর সুপারিশ শিক্ষিকার উত্যক্তকারীকে ধরতে গিয়ে হামলার শিকার পুলিশ - dainik shiksha শিক্ষিকার উত্যক্তকারীকে ধরতে গিয়ে হামলার শিকার পুলিশ সর্বজনীন পেনশনে অন্তর্ভুক্তির প্রতিবাদে ঢাবি শিক্ষক সমিতির কর্মসূচি - dainik shiksha সর্বজনীন পেনশনে অন্তর্ভুক্তির প্রতিবাদে ঢাবি শিক্ষক সমিতির কর্মসূচি please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0030229091644287