সরকারি স্কুলের প্রধান শিক্ষক পদে পদোন্নতি পাচ্ছেন ২৫০ জন

নিজস্ব প্রতিবেদক |

সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা পদে পদোন্নতি পাচ্ছেন ২৬২ জন সহকারী প্রধান শিক্ষকরা। তাদের মধ্যে ৮-১০ জন সহকারী প্রধান শিক্ষক অবসরে গেছেন। সে হিসেবে ২৫০ জনের মত সহকারী প্রধান শিক্ষক প্রধান শিক্ষক বা জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা হচ্ছেন। ঈদের আগেই তাদের পদোন্নতির আদেশ জারি হতে পারে।

বৃহস্পতিবার বিভাগীয় পদোন্নতি কমিটি (ডিপিসির) বৈঠকে এ বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তবে এ বিষয়ের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হওয়ার আগেই সভা মুলতবি ঘোষণা করা হয়। আগামী রোববার বা সোমবার এ সভার বাকি অংশ অনুষ্ঠিত হবে। তখন এ ২৬২ জন সহকারী প্রধান শিক্ষকের পদোন্নতির বিষয়টি চূড়ান্ত হবে। একাধিক সূত্র দৈনিক আমাদের বার্তাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। 

সূত্র দৈনিক আমাদের বার্তাকে জানান, রোববার সভা শেষ হয়নি। সভা সিদ্ধান্তের আগেই মুলতবি হয়েছে। সভায় ২৬২জন সহকারী প্রধান শিক্ষককে প্রধান শিক্ষক পদের পদোন্নতির বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। যদিও তাদের মধ্যের ৮-১০ জন ইতোমধ্যে অবসরে যাবেন। রোববার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হবে। সভায় ২৪৪জনকে প্রধান শিক্ষক পদে ও ১৮ জনকে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা পদে পদোন্নতি দেয়ার বিষয়ে সভায় আলোচনা হয়েছে। 

২৬২ জন সহকারী প্রধান শিক্ষককে পদোন্নতি দেয়ার বিষয়ে আলোচনা হলেও সারাদেশে ৩৫২টি পুরনো সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৪২৩ জন সহকারী প্রধান শিক্ষক পদোন্নতির উপযুক্ত। কিন্তু প্রধান শিক্ষক পদ শূন্য রয়েছে। 

মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর থেকে জানা গেছে, সারাদেশে প্রধান শিক্ষকের সংকট এখন তীব্র। বহু জেলায় সরকারি হাই স্কুলে কোনো প্রধান শিক্ষক নেই। কোনো কোনো বিভাগে মাত্র দুই থেকে তিনজন প্রধান শিক্ষক রয়েছেন। বাকি স্কুলগুলো চলছে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দিয়ে। সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতে বর্তমানে ৩৫১টি প্রধান শিক্ষকের পদ রয়েছে। তার মধ্যে ২৩৩টি শূন্য। বাধ্য হয়ে সহকারী প্রধান শিক্ষক অথবা যেখানে সহকারী প্রধান শিক্ষক নেই, সেখানে জ্যেষ্ঠ কোনো সহকারী শিক্ষককে প্রধান শিক্ষকের ভারপ্রাপ্ত পদ দিয়ে কোনো রকমে চালিয়ে নেয়া হচ্ছে। কেবল প্রধান শিক্ষক নয়, সহকারী প্রধান শিক্ষকের বিপুলসংখ্যক পদও ফাঁকা। সহকারী প্রধান শিক্ষকের ৪৭৭টি পদ থাকলেও এ পদে কেউ নেই ১৫২ সরকারি স্কুলের। এছাড়া প্রধান শিক্ষক পদমর্যাদার জেলা শিক্ষা কর্মকর্তার ১৮টি পদ বর্তমানে শূন্য। ফলে জেলাগুলো মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তদারকি করারও কেউ নেই। যেসব জেলায় কোনো জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা নেই, সেগুলো হলো- ফরিদপুর, মাদারীপুর, শরীয়তপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, লক্ষ্মীপুর, বগুড়া, ভোলা, ঝালকাঠী, জামালপুর, নেত্রকোনা, কক্সবাজার, হবিগঞ্জ, খাগড়াছড়ি, নোয়াখালী, বান্দরবান, মাগুরা, চুয়াডাঙ্গা ও ঝিনাইদহ।

জানা গেছে, ভয়াবহ প্রধান শিক্ষক সংকট দেখা দেওয়ায় সরকার ফিডার পদ দুই বছর প্রমার্জন করে এসব শূন্য পদ পূরণের উদ্যোগ নেয়। পদোন্নতির পর এই শিক্ষকরা পদে যোগ দিলে প্রধান শিক্ষক পদের সংকট প্রায় পুরোটাই কেটে যাবে। একাধিক শিক্ষক বলেন, পদোন্নতি পেতে পাঁচ বছরের চাকরির অভিজ্ঞতা লাগত। এটি শিথিল করতে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে রাষ্ট্রপতির দপ্তর হয়ে দুই বছরের অভিজ্ঞতা প্রমার্জন করা হয়েছে।

এ বিষয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক (মাধ্যমিক) আমিনুল ইসলাম টুকু দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, প্রতিবছর শিক্ষকরা অবসরে যাচ্ছেন। কিন্তু এসব পদ পূরণ করতে সময় লাগছে। নিয়োগবিধি অনুসারে ফিডার পদ পূর্ণ না হলে পদোন্নতি দেয়া যায় না। তবে সরকার চাইলে প্রমার্জন করেও পদোন্নতি দিতে পারে। এবার দুই বছর প্রমার্জন করায় একসঙ্গে বিপুলসংখ্যক প্রধান শিক্ষক পদে পদোন্নতি পাওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। তবে এ পদোন্নতি প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
সফটওয়্যারে কারিগরি ত্রুটি/ ইনডেক্সধারী শিক্ষকদের তথ্য ইমেইলে আহ্বান - dainik shiksha সফটওয়্যারে কারিগরি ত্রুটি/ ইনডেক্সধারী শিক্ষকদের তথ্য ইমেইলে আহ্বান শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বৈত নীতি! - dainik shiksha শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বৈত নীতি! হিটস্ট্রোকে শিক্ষকের মৃত্যু - dainik shiksha হিটস্ট্রোকে শিক্ষকের মৃত্যু লিখিততে প্রক্সি দিয়ে পার, মৌখিক পরীক্ষায় এসে ধরা - dainik shiksha লিখিততে প্রক্সি দিয়ে পার, মৌখিক পরীক্ষায় এসে ধরা কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে - dainik shiksha এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে শিক্ষক কেনো বদলি চান - dainik shiksha শিক্ষক কেনো বদলি চান ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধনের লিখিত পরীক্ষা হতে পারে জুলাইয়ে - dainik shiksha ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধনের লিখিত পরীক্ষা হতে পারে জুলাইয়ে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0035600662231445