শিক্ষা অধিদপ্তরের মাধ্যমিক শাখার এক জমাতপন্থী উপ-পরিচালকের বদলিসহ নানামুখী দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ সরকারি মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির (বাসমাশিস) নেতৃবৃন্দ। শিক্ষকদের স্বার্থ বিরোধী কর্মকান্ডের জন্য তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে ওই উপ-পরিচালককে দ্রুত অন্যত্র বদলির দাবি জানান সমিতির নেতৃবৃন্দ।
১৭ই নভেম্বর রাজধানীর ধানমন্ডি গভ. বয়েজ হাইস্কুল শিক্ষক মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত বাসমাশিস কেন্দ্রীয় কমিটির এক সভায় এ দাবি জানানো হয়। দৈনিকশিক্ষায় পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব দাবীর তথ্য জানা যায়।
সমিতির সভাপতি মো. ইনছান আলীর সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. জালাল উদ্দিন সরকার, কেন্দ্রিয় কমিটির সদস্য ও প্রধান শিক্ষক আবু সাঈদ ভূইয়া, সহ-সভাপতি গাজিপুর জেলা ও প্রধান শিক্ষিকা শফিকা বানু, সাংগঠনিক সম্পাদক মনোয়ারুল ইকবাল এবং অঞ্চল ও জেলা কমিটির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।
সমিতির নেতৃবৃন্দ বলেন, শিক্ষকদের অধিকার ও দাবির বিষয়ে সরকার আন্তরিক হলেও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধী কিছু কর্মকর্তার অবহেলা ও অসহযোগিতার কারণে শিক্ষকরা এখনো প্রাপ্য টাইম স্কেল, সিলেশন গ্রেড ও পদোন্নতি থেকে বঞ্চিত রয়েছেন। ফলে শিক্ষকরা আর্থিক ও প্রাপ্য মর্যাদা থেকে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন। অবহেলাকারী কর্মকর্তার এহেন কর্মকান্ডে সরকারের অর্জন ম্লান হয়ে যাচ্ছে বলে নেতৃবৃন্দ মত প্রকাশ করেন। তারা এসব সমস্যার সমাধানে সরকারের আশু পদক্ষেপ কামনা করেন।
সমিতির সাধারণ সম্পাদক জনাব জালাল উদ্দিন সরকার তার বক্তব্যে বলেন, সুপ্রিম কোর্টের রায় অনুসারে সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারি প্রধান শিক্ষক, সহকারি জেলা শিক্ষা অফিসারদের ফিডার পদে তথা ১০ম গ্রেডের সহকারি শিক্ষক পদে আত্তীকরণ/উন্নীতকরণ/যোগদানের তারিখের ভিত্তিতে জ্যেষ্ঠতার তালিকায় অবস্থান নির্ধারণ করে গেজেটে প্রকাশ করে পদোন্নতি দিতে হবে।
বক্তব্যে নেতৃবৃন্দ প্রধানমন্ত্রীর দেয়া দ্বিতীয় শ্রেণির মর্যাদা অনুযায়ী দ্রুত শিক্ষকদের টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড জটিলতা নিরসনের জন্য কর্তৃপক্ষের নিকট আহবান জানান।
এসময় বাসমাশিসের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী বাসমাশিসের সভাপতি মো. ইনসান আলীর বিরুদ্ধে যে কোন ষড়যন্ত্র বাসমাশিস প্রতিহত করবে। নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, মিথ্যা ও একপেশে পক্ষপাতদুষ্ট তদন্ত রিপোর্টের ভিত্তিতে সমিতির সভাপতির বিরুদ্ধে কোন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হলে সারা দেশের শিক্ষকগণ যে কোন কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবে।
উপস্থিত নেতৃবৃন্দ বিভিন্ন মিডিয়ায় শিক্ষকদেরকে ‘কোচিংবাজ’ অভিধা দেয়ায় তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা জানান। মাধ্যমিক শিক্ষা ক্ষেত্রে মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করা, বর্তমান সরকারের চাহিদা অনুযায়ী আধুনিক উন্নত, বিজ্ঞান মনস্ক, শিক্ষা নিশ্চিত করার জন্য সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকগণ কার্যকর ভুমিকা পালনে দৃঢ় অঙ্গিকার ব্যক্ত করেন।
সভায় বাংলাদেশ সরকারি মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি শিক্ষা ক্ষেত্রে সরকারের অঙ্গিকারের পাশাপাশি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আধুনিক ও বিশ্বমানের শিক্ষায় শিক্ষিত করে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ে তোলার জন্য সকল শিক্ষকের অঙ্গিকারের কথা ঘোষণা করেন।
সভাপতির তার বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে যুগান্তকারী সাফল্যের জন্য বাংলাদেশ সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষকদের পক্ষ থেকে তাঁকে অভিনন্দন জানান।
সভায় উপস্থিত অন্যান্য নেতৃবৃন্দের মধ্যে বক্তব্য রাখেন কোষাধ্যক্ষ শাহজাহান সিরাজ, সহ-সভাপতি নাছিমুল হক, রংপুর অঞ্চলের সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক, ময়মনসিংহ অঞ্চলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক, রংপুর অঞ্চলের সাধারণ সম্পাদক সফিয়ার রহমান, কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সাধারণ সম্পাদক মোঃ আবদুস সালাম, সাধারণ সম্পাদক (ঢাকা অঞ্চল) মোঃ আল মামুন তালুকদার, সাধারণ সম্পাদক (চট্টগ্রাম অঞ্চল) শাহাব উদ্দীন মাহমুদ, সাধারণ সম্পাদক (রাজশাহী অঞ্চল) আব্দুস সাত্তার, সদস্য সচিব (খুলনা) হায়দার আলী, সহ: প্রচার সম্পাদক (কেন্দ্রীয় কমিটি) আব্দুর রাজ্জাক, ময়মসসিংহ জেলার সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার কাদের রোকনুজ্জামান (কুষ্টিয়া জেলা স্কুল) মো: মজিবুর রহমান (চট্টগ্রাম অঞ্চল) প্রমুখ।