প্রজাতন্ত্রের সরকারি হিসাব থেকে পরিশোধিত সব অর্থের অডিট করার বিধান রেখে ‘পাবলিক অডিট বিল ২০২৩’-এর খসড়া প্রণয়ন করেছে সরকার।
এতে সরকারের সব রাজস্ব ও প্রাপ্তি, ব্যয় ও পরিশোধ এবং সব সরকারি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানসহ প্রজাতন্ত্রের সরকারি হিসাব থেকে পরিশোধিত সব অর্থের অডিট বা নিরীক্ষা করা হবে। ইতোমধ্যে বিলের খসড়ার ওপর মতামত চেয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ। আগামী ৭ মে’র মধ্যে ই-মেইলে কিংবা অর্থ মন্ত্রণালয়ের দফতরে মতামত পাঠানো যাবে।
বিলের উদ্দেশ্য সম্পর্কে বলা হয়েছে- সরকারি আর্থিক ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা আনয়ন; অডিটের মাধ্যমে সরকারি সম্পদের সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিতকরণ এবং বিদ্যমান অডিট ব্যবস্থায় বিশ্বব্যাপী অডিট কার্যক্রমের সমকালীন সংস্কারগুলো অন্তর্ভুক্ত করা এ বিলের উদ্দেশ্য।
খসড়া আইন অনুযায়ী, মহাহিসাব নিরীক্ষক সরকারি হিসাবগুলোতে প্রাপ্য সব রাজস্ব ও প্রাপ্তি অডিট করতে পারবেন। এ ক্ষেত্রে যেসব রাজস্ব সংযুক্ত তহবিলে প্রাপ্য তা যথাযথ এবং সঠিকভাবে জমা ও হিসাবভুক্ত হয়েছে কি না; রাজস্ব সম্পর্কিত আইন, বিধি ও পদ্ধতিগুলো পরিপূর্ণভাবে প্রতিপালিত হয়েছে কি না; সরকারের রাজস্বগুলো যথা- কর ও কর ব্যতীত রাজস্ব ইত্যাদি, তা যথাযথভাবে নিরূপণ ও আদায় নিশ্চিতকল্পে পর্যাপ্ত পদ্ধতি ও ব্যবস্থা রয়েছে কি না; প্রজাতন্ত্রের সরকারি হিসাবের প্রাপ্তিগুলো প্রযোজ্য আইন, বিধি ও পদ্ধতি অনুযায়ী যথাযথ এবং সঠিকভাবে জমা ও হিসাবভুক্ত হয়েছে কি না তা যাচাই করবেন এবং এসব বিষয়ে সন্তুষ্ট হওয়ার জন্য যেসব রেকর্ড ও হিসাব পরীক্ষা করা উপযুক্ত বিবেচনা করবেন, তিনি তা পরীক্ষা করবেন।
অন্য দিকে মহাহিসাব নিরীক্ষক সরকারি অর্থ ব্যবহারের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য আইন, বিধি, বিধানাবলী প্রতিপালনপূর্বক যে উদ্দেশ্যে অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে, তা মিতব্যয়িতার সাথে সে উদ্দেশ্যেই ব্যয়পূর্বক হিসাবভুক্ত করা হয়েছে কি না- তা নিশ্চিতে সংযুক্ত তহবিল থেকে ব্যয়িত সব অর্থের অডিট করবেন; আইন অনুযায়ী মহাহিসাব নিরীক্ষক সরকারি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের উৎপাদন, বাণিজ্য ও লাভ-ক্ষতি হিসাব এবং ব্যালেন্স শিটসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের কাছে রক্ষিত সব হিসাব অডিট করবেন। খসড়ায় বলা হয়েছে, মহাহিসাব নিরীক্ষক ‘বাংলাদেশ সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্ব আইন ২০১৫’-এর আওতায় অংশীদারিত্ব চুক্তি বা পিপিপি চুক্তি, সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্ব ব্যবস্থা, বেসরকারি অংশীদার নির্বাচন প্রক্রিয়া এবং প্রযোজ্য ক্ষেত্রে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বের মাধ্যমে গৃহীত প্রকল্পগুলোর লক্ষ্য অর্জন সংক্রান্ত বিষয় অডিট করতে পারবেন।
তবে সংযুক্ত তহবিল থেকে কোনো বিদেশী রাষ্ট্র বা আন্তর্জাতিক সংস্থায় কোনো অনুদান বা ঋণ দেয়া হলে সে ক্ষেত্রে উপরি ওই বিধানগুলো প্রযোজ্য হবে না বলে বিলের খসড়ায় উল্লেখ করা হয়েছে।