সহকারী শিক্ষকদের পদোন্নতি : সর্বশেষ গ্রেডে বেতন ফিক্সেশন দাবি

দৈনিকশিক্ষা প্রতিবেদক |

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পদে পদোন্নতি পাওয়া সহকারী শিক্ষকরা সর্বশেষ যে গ্রেডে বেতন পেয়েছেন, পদোন্নতি নেয়ার পর তাদের বেতন ওই গ্রেডে রেখেই ফিক্সেশন করার দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশ প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সমাজের সভাপতি শাহিনুর আল আমিন । এ শিক্ষক নেতারা মতে, সহকারী শিক্ষকদের মূল বেতন ১৩তম গ্রেডে নির্ধারিত হলেও দীর্ঘদিন চাকরি করা শিক্ষকদের অনেকে টাইমস্কেল পেয়ে ১১তম ও ১০ম গ্রেডে বেতন পাচ্ছেন। প্রধান শিক্ষক পদে পদোন্নতি পাওয়ার আগে সহকারী শিক্ষকদের সর্বশেষ বেতন গ্রেডের সঙ্গে প্রধান শিক্ষক পদের বেতন ফিক্সেশন করা না হলে এবং সরকার নতুন পে স্কেল ঘোষণা করলে এ শিক্ষকরা আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হবেন বলে মনে করছেন তিনি।

গতকাল বৃহস্পতিবার দৈনিক শিক্ষাডটকমের সঙ্গে আলাপকালে এ দাবি জানান এ শিক্ষক নেতা। ১৪ বছর পর এদিন দুপুরে ২০১ জন সহকারী শিক্ষককে প্রধান শিক্ষক পদে পদোন্নতি দিয়ে আদেশ জারি করে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
  
এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে শিক্ষক নেতা শাহিনুর আল আমিন দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, দীর্ঘ ১৪ বছর পর পদোন্নতির দ্বার খুলে দেয়ার জন্য সরকার ও সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা। তবে পদোন্নতির পর কিছু বিষয়ে সর্তকতা অবলম্বন করতে হবে। পদোন্নতি পাওয়ার আগেই অনেক সহকারী শিক্ষক টাইমস্কেল পেয়ে ১১তম বা ১০ম গ্রেডে বেতন পাচ্ছেন। পদোন্নতি পেয়ে ১১তম গ্রেড পাবেন, এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু, ফিক্সেশনের বিষয়টা অবশ্যই স্পষ্ট হতে হবে। যদি স্ববেতনেও পদোন্নতি দেন, তাহলে শিক্ষকদের কোনো লাভও নেই লসও নেই। যদি ফিক্সেশন করার সময় ধাপে না মিলে এবং পার্সোনাল পেমেন্ট দেয়া হয় সেক্ষেত্রে অনেক ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে। 

তিনি আরো বলেন, যদি উচ্চধাপে বেতন নির্ধারণ হয় সেখানেও ক্ষতির সম্ভাবনা থাকবে। কারণ যখন সরকার নতুন জাতীয় পে স্কেল ঘোষণা করবে তখনতো পদোন্নতি পাওয়া সহকারী শিক্ষকদের বেতন ১১তম স্কেল থেকে জাম্প করবে। আর যদি পদোন্নতি না নেন, সেক্ষেত্রে যারা ১০ম গ্রেডে আছেন, তাদের বেতন ১০ম গ্রেড থেকেই জাম্প করবে।  

তিনি বলেন, এক্ষেত্রে সহকারী শিক্ষক পদোন্নতির আগে যতগুলো টাইম স্কেল পেয়েছেন ১১তম গ্রেডের সঙ্গে ততোগুলো স্কেল যোগ করে ফিক্সেশন করতে হবে। অথবা ফিক্সেশন করার সময় ১০ম গ্রেডে অবস্থানরত শিক্ষকরা ১০ম গ্রেডেই থাকবেন এবং প্রমোশনের কারণে ১-২টা ইনক্রিমেন্ট যোগ করা যেতে পারে। তা হলে পদোন্নতিতে কোনো শিক্ষক ক্ষতিগ্রস্ত হবেন না।

তাই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পদে পদোন্নতি পাওয়া সহকারী শিক্ষকরা সর্বশেষ যে গ্রেডে বেতন পেয়েছেন, পদোন্নতি নেয়ার পর তাদের বেতন ওই গ্রেডে রেখেই ফিক্সেশন করার ব্যবস্থা করতে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানান এই শিক্ষক নেতা।

দীর্ঘ অপেক্ষার পর লক্ষ্মীপুর সদর, কমলনগর ও রায়পুর উপজেলায় ২০১ জন শিক্ষক পদোন্নতি পেয়েছেন। সরকারি কর্ম কমিশনের সুপারিশের প্রেক্ষিতে এ শিক্ষকদের পদোন্নতি দেয়া হয়েছে। 

শিক্ষকরা বলছেন, এর আগে ২০০৯ খ্রিষ্টাব্দে শিক্ষকদের সর্বশেষ পদোন্নতি দেয়া হয়েছিলো। এ পদোন্নতি দেয়ার মাধ্যমে ১৪ বছরের অপেক্ষার অবসান হলো।

জানা গেছে, পদোন্নতি পাওয়াদের মধ্যে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার ১২৬ জন, কমলনগর উপজেলার ২৮ জন ও রায়পুরা উপজেলার ৪৭ জন শিক্ষক রয়েছেন।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য অফিসার মাহবুবুর রহমান তুহিন গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, পদোন্নতিপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকদের আগামী ৮ আগস্ট লক্ষ্মীপুরের জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের কাছে যোগদান করতে হবে। ওই দিন কেউ যোগদানে ব্যর্থ হলে তিনি পদোন্নতি যোগ্য নন বলে গণ্য হবেন এবং তার পদোন্নতির আদেশ বাতিল হবে। যোগদান পরবর্তী দুই কার্য দিবসের মধ্যে নতুন প্রধান শিক্ষকদের পদায়ন করা হবে। এ ক্ষেত্রে চলতি দায়িত্ব বা ভারপ্রাপ্ত হিসেবে নিয়োজিত পদোন্নতিপ্রাপ্ত শিক্ষকদেরকে কর্মরত বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পদেই পদায়ন করতে হবে। 

তিনি আরো বলেন, মামলা ছাড়াও সারা দেশের সহকারী শিক্ষকদের গ্রেডেশন তালিকা চূড়ান্ত করা নিয়ে বড় ধরনের জটিলতা ছিলো। কারণ, বিষয়টি ছিলো জটিল ও সময়সাপেক্ষ। এ সমস্যা উত্তরণে ‘সমন্বিত গ্রেডেশন ব্যবস্থাপনা’ নামে একটি সফটওয়্যার তৈরি করা হয়। এরপরই ডিজিটাল পদ্ধতিতে চূড়ান্ত হয় গ্রেডেশন লিস্ট। 

শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক শিক্ষার ইউটিউব চ্যানেলের সাথেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে সয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।

দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল  SUBSCRIBE  করতে ক্লিক করুন।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
‘২৬ লাখ টাকা’র প্রধান শিক্ষক নাজমার শাস্তি দাবি আনন্দময়ী স্কুল ছাত্রীদের - dainik shiksha ‘২৬ লাখ টাকা’র প্রধান শিক্ষক নাজমার শাস্তি দাবি আনন্দময়ী স্কুল ছাত্রীদের জানুয়ারিতেই শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দেয়া হবে: গণশিক্ষা উপদেষ্টা - dainik shiksha জানুয়ারিতেই শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দেয়া হবে: গণশিক্ষা উপদেষ্টা ইএফটিতে বেতন: ব্যাংক হিসাব নিয়ে এমপিও শিক্ষকদের অসন্তোষ - dainik shiksha ইএফটিতে বেতন: ব্যাংক হিসাব নিয়ে এমপিও শিক্ষকদের অসন্তোষ পবিপ্রবিতে গাঁজাসহ ৫ মাদকসেবী আটক - dainik shiksha পবিপ্রবিতে গাঁজাসহ ৫ মাদকসেবী আটক ভর্তিতে লটারি বাতিলের দাবিতে সড়ক আটকে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ - dainik shiksha ভর্তিতে লটারি বাতিলের দাবিতে সড়ক আটকে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ প্রাথমিকের ১০ম গ্রেডের দাবি সর্বজনীন - dainik shiksha প্রাথমিকের ১০ম গ্রেডের দাবি সর্বজনীন কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক ৬ষ্ঠ ও ৮ম শ্রেণির বাদপড়া শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশনের সুযোগ - dainik shiksha ৬ষ্ঠ ও ৮ম শ্রেণির বাদপড়া শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশনের সুযোগ দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0058798789978027