দৈনিক শিক্ষাডটকম, শেরপুর : সাংবাদিককে তথ্য না দিয়ে শাস্তি দেওয়া শেরপুরের নকলা উপজেলার সেই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) সাদিয়া উম্মুল বানিন-এর বিরুদ্ধে বিভাগীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করেছে তথ্য কমিশন।
তথ্য অধিকার আইন ২০০৯ অনুযায়ী তথ্য সরবারাহের সহযোগিতা না করে তথ্য অধিকার আইনের প্রয়োগকে বাধাগ্রস্ত করায় এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার ইউএনও সাদিয়া উম্মুল বানিন তথ্য কমিশনে হাজির হয়ে সন্তোষ জনক বক্তব্য উপস্থাপন করতে না পারায় এ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
আরো পড়ুন : সাংবাদিককে জেলে পাঠানো সেই ইউএনওকে তলব
তথ্য কমিশনের এই সিদ্ধান্ত তথ্য কমিশন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে সুপারিশ করে তা বাস্তবায়নের অনুরোধ জানানো হয়।
এর আগে, তথ্য চাইতে গিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতে কারাদণ্ড পাওয়া দেশ রূপান্তরের শেরপুরের নকলা উপজেলা সংবাদদাতা শফিউজ্জামান রানাকে অসহযোগিতার অভিযোগের বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে তথ্য কমিশনের তলবে আজ মঙ্গলবার সকালে হাজির হন নকলার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাদিয়া উম্মুল বানিন।
তিনি সকাল সোয়া ১০টায় তথ্য কমিশনের কার্যালয়ে হাজির হন। বেলা ১১টায় তথ্য কমিশনের কার্যালয়ে ব্যাখ্যা দেন তিনি। ব্যাখ্যা দেওয়া শেষে বেলা পৌনে ১টার সময় বেরিয়ে আসেন ইউএনও।
এ সময় সাংবাদিকরা তাকে প্রশ্ন করলে তিনি সাংবাদিকদের এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন।
পরে তিনি এক পর্যায়ে গণমাধ্যমকে বলেন, ‘যা বলার আমি তথ্য কমিশনকে বলেছি। আমি কোনো ক্ষমতার অপব্যবহার করিনি। তিনি (রানা) অপরাধ করেছিলেন বলে তাকে শাস্তি দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও ফাইল ধরে টানাটানি ও একজন নারীকে উত্ত্যক্ত করেছিলেন তিনি।’
এসময় সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেন, সন্তান সাথে থাকা অবস্থায় অন্য কোনো নারীর সঙ্গে অসম্মানজনক আচরণ করা যায় কি-না। এমন প্রশ্নের উত্তরে আর কোন জবাব দেননি ইউএনও সাদিয়া উম্মুল বানিন।
উল্লেখ্য, দৈনিক দেশ রূপান্তর পত্রিকার নকলা উপজেলা সংবাদদাতা শফিউজ্জামান রানা ত্রাণ ও স্থানীয় সরকার শাখার বিভিন্ন প্রকল্পের বিষয়ে তথ্য চেয়ে তথ্য অধিকার আইনে দুটি আবেদন করেন। এনিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাদিয়া উম্মুল বানিন ক্ষিপ্ত ছিলেন।
পরবর্তীতে গত ৫ মার্চ জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থার (জাইকা) প্রকল্পের ৫০ লাখ টাকা ব্যয়ের তথ্য চেয়ে তথ্য অধিকার আইনে আরেকটি আবেদন করেছিলেন রানা। কিন্তু আবেদনের প্রাপ্তি স্বীকারের কপি দেওয়া নিয়ে একপর্যায়ে ইউএনও কার্যালয়ে পুলিশ ডেকে তাকে অসদাচরণের জন্য আটক করেন ইউএনও।
পরে সহকারী কমিশনার (ভূমি) শিহাবুল আরিফ ওই কার্যালয়ে ডেকে নিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে সাংবাদিক রানাকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেন। এ জন্য তথ্য চাওয়ায় শফিউজ্জামান রানাকে অসহযোগিতা করার অভিযোগের বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে ইউএনও তলব করা হয়।