জামায়াত নিয়ে প্রশ্ন করায় ক্ষেপে যাওয়ার ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা ড. কামাল হোসেন। গত ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসে মিরপুর স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানানোর শেষে ‘জামায়াত’ বিষয়ে প্রশ্ন করায় এক সাংবাদিকের ওপর ক্ষেপে যান ড. কামাল। এর জেরে গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে ঘটনার বিস্তারিত বর্ণনা করে তিনি দুঃখ প্রকাশ করেছেন।
লিখিত এক বক্তব্যে তিনি বলেছেন, ১৪ ডিসেম্বর শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে স্মৃতিসৌধের বেদিতে দাঁড়িয়ে আমি বলেছিলাম, আমরা কত মেধাবী সন্তানদের হারিয়ে তবে স্বাধীনতা পেয়েছি। তখন হঠাৎ বেদিতেই আমার কাছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে জামায়াতের অবস্থানের বিষয়ে জানতে চাওয়া হলো। আমি তাৎক্ষণিক সবিনয়ে বলি, আজকের এই দিনে, যেখানে আমাদের গভীর অনুভূতির বিষয়, এই বিষয়ে এখানে কোন মন্তব্য করতে চাই না। পুনরায় একই প্রশ্ন তুললে আমি একই মনোভাব ব্যক্ত করি। কিন্তু তৃতীয়বার ভিড়ের মধ্যে থেকে কোথাও অনবরত দুই থেকে তিনবার আমি শুধু ‘জামাত জামাত’ শুনতে পাই। তখন আমার খুবই খারাপ লেগেছিল। এ বিষয়ে আমি প্রশ্নকর্তাকে থামানোর চেষ্টা করেছিলাম। আমার বক্তব্য যদি কোনভাবে কাউকে আহত বা বিব্রত করে থাকে, তাহলে আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত।
তিনি আরও বলেন, মহান শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস বাংলাদেশের সব নাগরিকের জীবনে অসামান্য তাৎপর্যপূর্ণ। আমি প্রত্যেক বছরের মতো এবারও শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে মিরপুর স্মৃতিসৌধে গিয়েছি। এ দিনে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছিল। হত্যার শিকার হওয়া বুদ্ধিজীবীদের মধ্যে আমার অনেক ঘনিষ্ঠ বন্ধুরাও ছিলেন। ১৯৭২-৭৩ সালে বঙ্গবন্ধুর নির্দেশনায় স্বাধীনতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের জন্য প্রণীত আইনগুলোর সঙ্গে আমিও জড়িত ছিলাম। এটা আমার কাছে খুব সুন্দর অনুভূতি।
সাংবাদিক ও সংবাদপত্রের অধিকার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সকলে অবগত আছেন যে, আমি সারাজীবন সংবাদক্ষেত্রের স্বাধীনতা ও সাংবাদিকদের অধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে সামিল থেকেছি। আশা করি, জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানগণ তাদের জীবনের বিনিময়ে যে ধর্মনিরপেক্ষ বাংলাদেশ বিনির্মাণের স্বপ্ন দেখেছিলেন, তা আমরা সকলে মিলে গড়তে সক্ষম হবো।