জামালপুর জেলার বকশীগঞ্জ উপজেলার সাংবাদিক গোলাম রাব্বানী নাদিমকে নৃশংসভাবে হত্যাকাণ্ডে সঙ্গে জড়িত সব আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে বরগুনায় মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোববার সকালে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে সামনে দিকে বরগুনা সাংবাদিক ইউনিয়নের আয়োজনে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে সচেতন নাগরিকসহ জেলার সাংবাদিকরা অংশ নেন।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, সাংবাদিকরা রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ হলেও তাদের সুরক্ষায় নেই কোনো আইন। সরকার সাংবাদিকদের বিভিন্ন সময় নানা ধরনের প্রতিশ্রুতি দিলেও তার কোনো বাস্তবায়ন নেই। সাংবাদিকদের মূলনীতি নিরপেক্ষতা, অনিয়ম-দুর্নীতির বিরুদ্ধে সর্বদা সোচ্চার থাকা। তবে এক্ষেত্রে তাদের নেই কোনো স্বাধীনতা। শুধু তাই নয়, কোনো সরকারের আমলেই সুরক্ষিত নয় তারা।
বরগুনা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি ইমরান টিটু বলেন, ২০২০ খ্রিষ্টাব্দে সাংবাদিক কাজল নিখোঁজ হলো, ৫৪ দিন পর তাকে আটক দেখালো আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তাকে হ্যান্ডকাফ পরিয়ে প্রকাশ্যে আনা হলো। অথচ আমার সহকর্মী নাদিম ভাইকে যারা পিটিয়ে মেরে ফেললো তাদের হ্যান্ডকাফও পরানো হয়নি। সাংবাদিকরা সবসময়ই অবহেলিত, সব সরকার প্রতিশ্রুতি দিলেও কোনো সরকারের আমলেই আমরা নিরাপদ নয়। আমরা দ্রুত নাদিম হত্যায় জড়িতদের বিচার চাই। মানববন্ধন শেষে জেলা প্রশাসকের কাছে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি দেয়া হয়।
মানববন্ধনে বরগুনা জেলা রিপোর্টার্স ইউনিটি, বরগুনা জেলা প্রিন্ট মিডিয়া সাংবাদিক ফোরাম, বরগুনা জেলা অনলাইন সাংবাদিক ফোরাম, বরগুনা জেলা টেলিভিশন সাংবাদিক ফোরাম, বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম বরগুনা জেলা শাখার সদস্যরা অংশ নেন।
মানববন্ধনে সাংবাদিক নেতারা সাংবাদিক গোলাম রাব্বানী নাদিম হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সবাইকে সর্বোচ্চ শাস্তি দেয়ার দাবি জানিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, গত ১৪ জুন রাতে বাড়ি ফেরার পথে বকশীগঞ্জের পাথাটিয়ায় পৌঁছালে অস্ত্রধারী ১০ থেকে ১২ জন দুর্বৃত্ত সাংবাদিক নাদিমকে পিটিয়ে জখম করে পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। এরপর রাত ১২টায় সেখান থেকে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় বৃহস্পতিবার (১৫ জুন) সকালে তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন বিকেল পৌনে ৩টার দিকে তার মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় সাংবাদিক নাদিমের স্ত্রী মনিরা বেগম বাদী হয়ে ইউপি চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবুকে প্রধান আসামি করে ২২ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ২৫ জনকে আসামি করে বকশীগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় প্ল্যানমেকার চেয়ারম্যান বাবুসহ এখন পর্যন্ত ১৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।