দৈনিক শিক্ষাডটকম, রাঙামাটি : অবশেষে ভেঙে ফেলা হয়েছে রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেক জুনিয়র হাইস্কুলের সামনে নির্মাণাধীন সেই দোকানগুলো। এসব দোকান নির্মাণের অভিযোগ ওঠে বিজিবির বিরুদ্ধে। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ভাঙার কাজ শুরু হয়ে আজ বুধবার সকালে শেষ হয়।
এর আগে দোকান নির্মাণ নিয়ে গত ১৪ মার্চ গণমাধ্যমে ‘সাজেকে স্কুলের সামনে দোকান নির্মাণ বিজিবির, অসন্তুষ্ট শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা’ শিরোনামে সাংবাদ প্রকাশ হয়। এরপর বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরে আসে। একপর্যায়ে নির্মাণাধীন দোকানগুলো ভেঙে ফেলার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
সাজেক জুনিয়র হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক ববীন্দ্র লাল ত্রিপুরা জানান, গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে নির্মাণাধীন দোকানগুলো ভাঙা শুরু করে বিজিবি। আজ বুধবার সকালে ভাঙার কাজ শেষ হয়। বিদ্যালয়ের সামনে দোকানগুলো ভেঙে ফেলায় শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা খুশি হয়েছেন।
চলতি মাসের শুরুতে সাজেক পর্যটন কেন্দ্রের রুইলুইয়ে সড়কের পাশঘেষা সাজেক জুনিয়র হাইস্কুলের সামনে দোকান নির্মাণের কাজ শুরু করে বিজিবি। আধা পাকা ছয়টি দোকানের কারণে পুরো বিদ্যালয়ে অন্ধকার পরিবেশ তৈরি হয়। এতে বিদ্যালয়ের কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছিল। আজকের
বিদ্যালয় সূত্র জানায়, স্থানীয়রা সন্তানদের পড়াশোনা করানোর জন্য ১৯৯৮ খ্রিষ্টাব্দে ‘সাজেক জুনিয়র হাইস্কুল’ নামে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করেন। পরবর্তীতে ২০১৩ খ্রিষ্টাব্দে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাজেক সফর করলে তাঁর সম্মানে মারিশ্যা বিজিবি জোন বিদ্যালয়টি সংস্কার করে নাম দেয় ‘রুইলুই জুনিয়র হাইস্কুল’। এরপর বিজিবি এটি নিয়ন্ত্রণে নেয়। পরবর্তীতে অফিশিয়াল জটিলতায় পড়লে বিদ্যালয়ের নাম প্রতিষ্ঠাকালীন নামে ফিরিয়ে আনা হয়।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ববীন্দ্র লাল ত্রিপুরা বলেন, ‘বিদ্যালয়টি বাঘাইছড়ি মারিশ্যা বিজিবি জোন পরিচালনা করছে। দোকান নির্মাণের আগে আমাদের বলা হয়েছিল দোকান থেকে যে আয় আসবে সে টাকা দিয়ে বিদ্যালয় পরিচালনার কাজে ব্যবহার করা হবে। সাজেক ভ্যালির মসজিদের পাশে বিদ্যালয়ের নামে দেড় একর জায়গা আছে সেখানে বিদ্যালয়টি স্থানান্তরের কথা বলা হয়েছে। কিন্তু এই কথা ৮-১০ বছর আগে থেকে বলা হয়ে আসছে, কাজ হয়নি।’
প্রধান শিক্ষক জানান, বিদ্যালয়ে বর্তমানে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৮৫ জন। জায়গা না থাকায় বেশি শিক্ষার্থী ভর্তি করানো যাচ্ছে না। বিদ্যালয়ের আশপাশে ৪টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে। এ ছাড়াও বেটলিং, শিয়ালদাহ, তুইচুই এলাকা থেকে শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে ভর্তি হতে চায়। কিন্তু শ্রেণিকক্ষের সংকট ও জায়গা না থাকায় ভর্তি করানো যাচ্ছে না।