সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের ফল প্রকাশে কত দেরি?

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত রাজধানীর সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের ফল প্রকাশ দীর্ঘ এক বছরেও হয়নি। ফল প্রকাশের দাবিতে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন সময় আন্দোলন করে আসছে। শিক্ষার্থীরা নানাভাবে কর্তৃপক্ষকে দ্রুত ফল প্রকাশের আবেদন নিবেদন করেও কোনো সাড়া পাচ্ছে না। এমতাবস্থায় সাত কলেজে অধ্যয়নরত কয়েক হাজার ছাত্রছাত্রীর শিক্ষাজীবন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।

জানা যায়, গত বছরের ৭ জানুয়ারি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে থাকা অবস্থায় সরকারি সাত কলেজের অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের সমাপনী পরীক্ষা শুরু হয়। একই বছরের ১৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, কবি নজরুল কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ, মিরপুর সরকারি বাঙলা কলেজ ও সরকারি তিতুমীর কলেজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত হয়। অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের লিখিত পরীক্ষা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনেই অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু মৌখিক পরীক্ষা নেয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সাত কলেজের মৌখিক পরীক্ষার ফলাফল জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে প্রেরণ করলেও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় এখনো পূর্ণাঙ্গ ফল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে হস্তান্তর করেনি। যার ফলে পরীক্ষার ফল দিতে বিলম্ব হচ্ছে।

দীর্ঘ এক বছর ধরে ফলাফল ঝুলিয়ে রাখা নিয়ে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মাঝে অসন্তোষ বিরাজ করা স্বাভাবিক। চলতি মাসের মধ্যেই অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের পরীক্ষার ফল প্রকাশসহ পাঁচ দফা দাবিতে সাত কলেজের কয়েকশ ছাত্রছাত্রী গত বৃহস্পতিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা নীলক্ষেত মোড়ে অবরোধ কর্মসূচি পালন করে। শিক্ষার্থীদের ৫ দফা দাবি হলো- জানুয়ারি মাসের মধ্যেই অনার্স ২০১৪-১৫ সেশনের দ্বিতীয় বর্ষের ফল প্রকাশ; মার্চের মধ্যেই ২০১৪-১৫ সেশনের ৩য় বর্ষের চূড়ান্ত পরীক্ষা শুরু; অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজের একাডেমিক ক্যালেন্ডার প্রকাশ; ২০১২-১৩ সেশনসহ সব সেশনের চূড়ান্ত পরীক্ষা দ্রুত সম্পন্ন এবং ডিগ্রির সব সেশনের আটকে থাকা পরীক্ষা ও পরীক্ষার ফল দ্রুত প্রকাশ। এই সময় ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামান আন্দোলনস্থলে গিয়ে ফেব্রুয়ারির ২৫ তারিখে ফল প্রকাশের ঘোষণা দিয়েছেন। শিক্ষার্থীরা ভিসির বক্তব্যে আশাবাদী হলেও অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। শিক্ষার্থীরা বলছেন, ফল না পাওয়ার কারণে ৩৮তম বিসিএস পরীক্ষাসহ অনেক নিয়োগ পরীক্ষাতেই আবেদন করতে পারছেন না। এটা খুবই অনাকাঙ্ক্ষিত।

এখানে স্পষ্ট যে, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের মধ্যে এ বিষয়ে সমন্বয়হীনতা রয়েছে। এদিকে সাত কলেজ অধিভুক্তি নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের একাংশের অসন্তোষ এবং আন্দোলনের খবরও সম্প্রতি আমরা সংবাদ মাধ্যমে পেয়েছি। বলতেই হয়, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে থাকা সাত কলেজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্তির বিষয়টি গোড়াতেই পরিপক্ব ছিল না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রস্তুতির অভাব ছিল। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গেও তাদের টানাপড়েন ছিল। কিন্তু এরপর তো অনেক সময় গড়িয়ে গেছে, আর কত? এসব কিছুর ফল ভোগ করতে হবে কেন শিক্ষার্থীদের? তাদের শিক্ষাজীবন কেন অনিশ্চিত হবে? আমরা ঢাবি উপাচার্যের কথায় আস্থা রাখতে চাই। আমরা চাই, উপাচার্যের প্রতিশ্রুত সময়ের মধ্যেই যেন পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয় এবং এদের পরবর্তী শিক্ষাক্রমের একাডেমিক ক্যালেন্ডার প্রকাশ করা হয়। কোনোভাবেই যেন আলোচিত সাত কলেজের এই ভাগ্য বিড়ম্বিত শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন আর ক্ষতিগ্রস্ত না হয়- এ ব্যাপারে দায়িত্বশীল ভূমিকা নিতে হবে সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কর্তৃপক্ষকে।

 

সৌজন্যে: ভোরের কাগজ


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা - dainik shiksha শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা - dainik shiksha রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা ট্রেনে কাটা পড়ে স্কুলশিক্ষকের মৃত্যু - dainik shiksha ট্রেনে কাটা পড়ে স্কুলশিক্ষকের মৃত্যু গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা কাল - dainik shiksha গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা কাল শিক্ষকরাই স্মার্ট নাগরিক গড়ার কারিগর: শিল্পমন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষকরাই স্মার্ট নাগরিক গড়ার কারিগর: শিল্পমন্ত্রী এনটিআরসিএর সার্টিফিকেট সংশোধনের নতুন নির্দেশনা - dainik shiksha এনটিআরসিএর সার্টিফিকেট সংশোধনের নতুন নির্দেশনা মর্নিং স্কুলের ছয় সুবিধা উল্লেখ করলেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা - dainik shiksha মর্নিং স্কুলের ছয় সুবিধা উল্লেখ করলেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা দেড় মাস পর ক্লাসে ফিরছেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা, স্থগিত পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা - dainik shiksha দেড় মাস পর ক্লাসে ফিরছেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা, স্থগিত পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলের সংখ্যা বাড়াতে চায় সরকার - dainik shiksha অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলের সংখ্যা বাড়াতে চায় সরকার দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0024528503417969