সাত কলেজের ‘স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয়’ গঠনের দাবি পূরণ সম্ভব?

দৈনিক শিক্ষাডটকম ডেস্ক |

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) অধিভুক্ত সাতটি কলেজকে নিয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবিতে বেশ কিছুদিন ধরে আন্দোলন করছেন এসকল কলেজের শিক্ষার্থীরা।

তারা ঘোষণা দিয়েছেন, স্বতন্ত্র পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার জন্য শিক্ষার্থী প্রতিনিধি রেখে ‘বিশ্ববিদ্যালয় রূপান্তর কমিশন’ গঠন না করা হলে তারা তাদের আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।

সর্বশেষ সংযোজন হিসাবে রোববার ও সোমবার তারা ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছে সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা।

এর আগে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে এই সাতটি সরকারি কলেজ দেখভালের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যেই পুরোপুরি আলাদা একটি প্রশাসনিক ব্যবস্থা থাকবে। সেখানে আলাদা রেজিস্ট্রারসহ অন্য কর্মকর্তা-কর্মচারী থাকবেন। তবে এ কলেজগুলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্তই থাকবে।

গত ৩১শে অক্টোবর প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানিয়েছিলেন। কিন্তু শিক্ষার্থীরা এ সিদ্ধান্তকে প্রত্যাখ্যান করেছে তো বটেই, সেই সঙ্গে তারা প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিবের ‘অবিবেচক বক্তব্য’ প্রত্যাহার করার দাবিও তুলেছেন।

স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় গঠনের এই দাবি কেন্দ্র করে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে সাপ্তাহিক ও সরকারি ছুটির দিন বাদে প্রায় প্রতিদিন সকাল থেকে ঢাকার বিভিন্ন মোড়ে জড়ো হয় সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা।

সেসব এলাকাসহ আশপাশের সব সড়কে দীর্ঘ যানজটে ভোগান্তিতে পড়ে মানুষ। তবে শহরের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় তারা আপাতত সড়ক বন্ধ করে আন্দোলন করার সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের মাধ্যমে ক্যাম্পাসভিত্তিক আন্দোলন চালিয়ে যেতে চাইছেন।

তবে সরকার যদি যথাযথ কোনও সিদ্ধান্ত গ্রহণ না করে, সেক্ষেত্রে শিক্ষার্থীরা তাদের নতুন কর্মসূচির ঘোষণা দেবে বলে বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছে ‘সাত কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় রূপান্তর টিম’।

২০১৭ খ্রিষ্টাব্দে যখন সাত কলেজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করা হয়েছিলো, তখন অনেকেই সরকারের সিদ্ধান্ত নিয়ে আপত্তি তুলেছিলেন। সঙ্গত কারণেই প্রশ্ন আসে যে সেইসময় কোনও আপত্তিতে কর্ণপাত না করে সাত কলেজকে ঢাবি’র অধীনে কেন নিয়ে আসা হয়েছিলো?

এরপর গত সাত বছর ধরে এই কলেজগুলোর শিক্ষার্থীরা নানা ধরনের সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন করে আসছিলেন ঠিক-ই। কিন্তু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন থেকে বের হয়ে আলাদা বিশ্ববিদ্যালয় গঠনের দাবি তারা কখনোই এভাবে সরাসরি তোলেননি এবং কঠোর অবস্থানে যাননি। হঠাৎ তারা কেন এই দাবি করছেন এবং এই দাবির বাস্তবায়ন কি আদৌ সম্ভব?

শিক্ষার্থীদের দাবির নেপথ্যে

‘সাত কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় রূপান্তর টিম’-এর অন্যতম মুখপাত্র ও কবি নজরুল সরকারি কলেজে স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী জাকারিয়া বারী বিবিসি বাংলাকে বলেন, “দীর্ঘ সাত বছর ধরে আমরা শিক্ষা বৈষম্যের শিকার। অবকাঠামাগত কোনও সমস্যা নিয়ে আমরা শিক্ষকদের কাছে গেলে তারা আমাদের পাঠায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গেলে তারা বলে, তোমাদের অভিভাবক আমরা না।” 

“আমরা পরিচয়হীনতায় ভুগছি। আমাদের অভিভাবক কে, আমরা জানি না,” বলছিলেন তিনি।

এটি ব্যাখ্যা করতে গিয়ে মি. বারী বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কোনও দাবিতে রাস্তায় নামলে খুব দ্রুত তাদের কর্তৃপক্ষ এসে তাদের সাথে কথা বলে। তাদেরকে টেবিল টকে নিয়ে যায়। কিন্তু আমরা এতদিন আন্দোলন করার পরও আমাদেরকে কেউ টেবিল টকে নিয়ে আসেনি। কেউ আমাদের কাছে যায়নি, বলেনি যে তোমাদের সমস্যাটা কী।

“আমি যখন চাকরির ইন্টার্ভিউ দিতে যাই, তখন আমি আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচয় দিতে পারি না। কারণ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আমায় সেই অধিকার দেয় নাই। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচয়ও দিতে পারি না, কারণ আমি ন্যাশনালেরও স্টুডেন্ট না,” বলছিলেন মি. বারী।

“চার বছর পড়াশুনার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আমাদের যে সার্টিফিকেট দিয়েছে, সেই সার্টিফিকেটে ভিন্ন ফন্টে এফিলিয়েটেড লেখা থাকে। চাকরির বাজারে এই শব্দটা আমায় পিছিয়ে দেয়,” যোগ করেন তিনি।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলছেন, সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের মানসম্মত শিক্ষা দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বাস্তবে তা তো হয়-ই নি; বরং তাদের কলেজগুলোতে পর্যাপ্ত শিক্ষক-শ্রেণিকক্ষ-গবেষণাগার, কোনোটাই নেই। চালু হয়নি সেমেস্টার পদ্ধতি।

সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করছেন, সামনে একটি প্রজেক্টর রেখে তাদের জন্য স্ক্রিন সমাবর্তনের ব্যবস্থা করা হয়েছে,

অবশ্য, তাদের এইসব অভিযোগ যে অমূলক নয়, সরকার থেকে শুরু করে শিক্ষাবিদ, সবাই-ই সেটি স্বীকার করছেন।

সংকট নতুন নয়

সাত কলেজ নিয়ে এই জটিলতার সূত্রপাত ২০১৭ সাল থেকে। সে বছর ফেব্রুয়ারিতে ঢাকার সাতটি সরকারি কলেজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করা হয়।

কলেজগুলো হলো ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, কবি নজরুল সরকারি কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ, মিরপুরের সরকারি বাঙলা কলেজ ও সরকারি তিতুমীর কলেজ। এর আগে কলেজগুলো জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ভুক্ত ছিল।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করার কিছুদিন পর থেকে কলেজগুলো নিয়ে নানা ধরনের সমস্যা বিরাজ করছে। বিশেষ করে ২০১৮ সাল থেকে শিক্ষার্থীরা অনেক কিছুতে সংস্কারের দাবি জানিয়ে আসছে।

পরের বছর, ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দে আবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাই তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে অধিভুক্ত ওই সাতটি কলেজের অন্তর্ভুক্তি বাতিলের দাবিতে টানা বিক্ষোভ করে। তখন সাত কলেজের কিছু কিছু শিক্ষার্থীও দাবি করেছিলো, তারাও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বের হতে চায়।

সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি মি. বারী বলছিলেন, “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বের হতে চাওয়ার বিষয়টা এতদিন মন্তস্তাত্ত্বিক ছিল। এত বছর ধরে আমরা তো কেবল সংস্কার চেয়েছি। সংস্কারের জন্য নীলক্ষেত, সায়েন্সল্যাব, শাহবাগে আন্দোলন করেছি। গুলি খেয়েছি। এখন দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়াতে আমরা স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় চাচ্ছি।”

এই সাতটি কলেজের শিক্ষা ও প্রশাসনিক সমস্যা নিরসনে গত ২৪শে অক্টোবর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিবকে (কলেজ) সভাপতি করে ১৩ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। কিন্তু শিক্ষার্থীরা সেই কমিটিকে প্রত্যাখ্যান করেছে, তাদের সেই এক দাবি– কমিশন গঠন।

এর ব্যাখ্যায় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলছেন, এরকম কমিটি ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দেও দেওয়া হয়েছিলো। তখন সংস্কারের নামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তাদের সাথে প্রহসন করেছে।

ছাত্র প্রতিনিধি, শিক্ষাবিদ ও বুদ্ধিজীবীসহ সাত কলেজের অংশীজনদের নিয়ে কমিশন গঠন করার দাবি জানিয়ে আন্দোলকারী শিক্ষার্থীরা বলছে, কমিশন বিচার বিশ্লেষণ করবে, এই সাতটি কলেজের ভবিষ্যৎ কী হবে; সেই বিশ্ববিদ্যালয়টি দেখতে কী রকম হবে বা কীভাবে কাজ করবে।

কিন্তু কমিশন বিচার বিশ্লেষণ করে যদি দেখে যে বিশ্ববিদ্যালয় গঠন করা সম্ভব না, তাহলে তারা কমিশনের সিদ্ধান্ত মেনে নিবে কি না জানতে চাইলে আন্দোলনকারীদের অন্যতম মুখপাত্র মি. বারী বলেন, “আমাদের চাওয়ায় যদি ভুল থাকে, জাতির উপকার না হয়ে যদি আমাদের শিক্ষা জীবনের ক্ষতি হয়, তাহলে এটা আমরা অবশ্যই করবো না।”

আর, “আমরা সরকারকে এটা বলছি না যে আগামীকালই একটি বিশ্ববিদ্যালয় ঘোষণা করে দিয়ে দেন। আমরা বলছি, আপাতত যেন সব পক্ষকে নিয়ে একটি কমিশন গঠন করা হয়,” যোগ করেন তিনি।

যদিও বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. এস এম এ ফায়েজ মনে করেন, কমিটি বা কমিশনে শাব্দিক পার্থক্য ছাড়া আর কোনও তফাৎ নেই।

“যে বিষয়ে তারা (শিক্ষার্থী) কমিশন গঠন করতে চাচ্ছে, সেই বিষয়টিই যদি কমিটি অ্যাড্রেস করতে পারে, তাহলেই তো হলো। সেটিকে আপনি কমিশন বলেন কিংবা কমিটি। আন্দোলনকে সামনে রেখেই তো তারা কাজ করছে…প্রয়োজনে তারা ছাত্রদের সাথে অবশ্যই আলাপ করবে।”

স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় গঠনে বাধা যেখানে

বাংলাদেশের সব কলেজ একসময় বিশ্ববিদ্যালগুলোর অধীনে ছিল। তিন দশক আগে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় গঠনের পর এগুলো জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে চলে যায়। পরবর্তীতে ২০১৭ খ্রিষ্টাব্দে কলেজগুলোকে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অধীনে আনার প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে এই সাত কলেজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে আনা হয়।

এগুলোকে ঢাবি অধিভুক্ত করার আলোচনা যখন চলছিলো, তখন একে আজাদ চৌধুরী ইউজিসি’র চেয়ারম্যান ছিলেন। ২০১১ থেকে ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দের কথা এটি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক একে আজাদ চৌধুরী বিবিসি বাংলাকে বলেন, তখন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে “কলেজগুলো ইউনিভার্সিটির অধিভুক্ত” করে দিতে বলেছিলেন।

“তার (শেখ হাসিনা) জাস্টিফিকেশান ছিল, বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে দিলে কলেজগুলো উন্নতি করবে। আমি সেটা শুনলাম। কিন্তু আমি বললাম, এটা আমার একক সিদ্ধান্ত না। তবে আপনি সিদ্ধান্ত নিলে আমাকে বাস্তবায়ন করতে হবে। কিন্তু ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির যে সেট-আপ, ওদের ম্যানপাওয়ার, লজিস্টিকসে এগুলো এতদিন ধরে চলে আসছিলো; এটিকে আলাদা করা কতটুকু ফিজিবল হবে জানি না।”

অধ্যাপক চৌধুরীর মতে, সাত কলেজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে আনা “ভুল সিদ্ধান্ত” ছিল। কারণ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের “ম্যানপাওয়ার, লজিস্টিকস, কারিকুলাম সব অক্সফোর্ডের আদলে করা। ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সেট-আপ তার সাথে কোনোভাবেই যায় না।”

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ বিবিসি বাংলাকে বলেন, সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন সময় দাবি-দাওয়া নিয়ে রাস্তায় নামলেও এখনকার “বিশ্ববিদ্যালয় গঠনের দাবিটি একেবারেই নতুন।”

“আপাতদৃষ্টিতে বাংলাদেশের কনটেক্সটে শুধু সাতটি কলেজকে নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা করা, বাস্তবে রূপ দেওয়া, সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান শিক্ষার্থীদের একাডেমিক কার্যক্রম কীভাবে চলবে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া...কঠিন। আবার শুধু সাত কলেজ নিয়ে একটি বিশ্ববিদ্যালয়, সেটিও একটি চিন্তার কারণ,” বলছিলেন তিনি।

মি. জিন্নাহর মতে, বাংলাদেশে ইতোমধ্যে অনেক বিশ্ববিদ্যালয় আছে যেগুলোর অবকাঠামোই ঠিক হয়নি। “কোথাও কোথাও শিক্ষক কম। উপাচার্য নাই। ওইটার সাথে তুলনা করলে শিক্ষার্থীদের দাবি যৌক্তিক নাকি অযৌক্তিক, সেটি কর্তৃপক্ষ ভালো বুঝবেন; তারাই সিদ্ধান্ত নিবেন যে কতটা মানা সম্ভব। কিন্তু এই সমস্যার দ্রুত সমাধান হওয়া দরকার।”

কারণ এই কলেজগুলোতে হাজার হাজার শিক্ষার্থী ভর্তি, তাদের “যথাসময়ে বের হয়ে পরিবারের পাশে দাঁড়াতে হবে।”

সমাধান কোথায়?

অধ্যাপক একে আজাদ চৌধুরী বলেন, “আরেকটা ইউনিভার্সিটি করা যায়, সরকার চাইলে করতে পারে...তবে এই সরকারের প্রাধান্য সংস্কার, নির্বাচন। সুতরাং, তারা কতদিকে অ্যাটেনশন দিবে আমি জানি না।”

সাতটি কলেজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আনার উদ্দেশ্য ভালো ছিল এবং পৃথিবীর অনেক দেশেই এই আদলে শিক্ষাব্যবস্থা আছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, “আমাদের প্ল্যানে ত্রুটি থাকায় এটি বাস্তবায়ন হলো না ঠিকভাবে।”

তবে তার মতে, এই সাতটি কলেজের 'এক্সিলেন্স ডেভেলপ করাটাও খারাপ হতো না'। অর্থাৎ, “টেকনিক্যালস সাবজেক্টে জোর দিয়ে কলেজগুলোকে যদি চালানো হতো, তাহলে ভালো সমাধান হয়।”

তবে সাতটি কলেজকে নিয়ে স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় হলে দেশের অন্য শতবর্ষী কলেজও একই দাবি তুলতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।

অধ্যাপক জিন্নাহ'র অভিমত, সাত কলেজ নিয়ে “স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠাই হোক, বা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসরে তাদের জন্য আলাদা অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ-একাডেমিক বিভাগ করা হোক; সেটা দ্রুত সমাধান করা দরকার।”

“এগুলো প্রতিষ্ঠিত এনটিটিটি। এগুলোকে স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতায় নিতে বলা হয়েছে যেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের কাঠামো গড়ে উঠতে পারে। আসলে এই ছেলেমেয়েগুলা তো সাইকোলজিক্যাল ইনফেরিওরিটি কমপ্লেক্সে ভুগে যে তাদের সার্টিফিকেটকে গুরুত্ব দেওয়া হয় কি না,” যোগ করেন এই অধ্যাপক।

এ বিষয়ে ইউজিসি চেয়ারম্যান এস এম এ ফায়েজ মনে করেন, “চলমান সমস্যার সমাধান সম্ভব। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় করতে গেলে নানা কিছু নিয়ে চিন্তা করতে হয়। বিভিন্ন তরফে ডিল করতে হচ্ছে সরকারকে। কমিটি রিপোর্ট দিক, আমাদেরকে নির্দেশনা দেওয়া হলে আমরা সেই অনুযায়ী কাজ করবো।”

শিক্ষাবিদরা বলছেন, বিশ্ববিদ্যালয় গঠনের বিষয়টি সিদ্ধান্ত নীতিগত সিদ্ধান্তের ব্যাপার। তবে সাত কলেজের বিষয়ে দ্রুত একটি টেকসই সিদ্ধান্তে পৌঁছানো উচিত।

সূত্র: বিবিসি বাংলা


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
ইএফটিতে বেতন দিতে এমপিও আবেদনের সময় এগোলো - dainik shiksha ইএফটিতে বেতন দিতে এমপিও আবেদনের সময় এগোলো জবিতে ভর্তির প্রাথমিক আবেদন শুরু ১ ডিসেম্বর - dainik shiksha জবিতে ভর্তির প্রাথমিক আবেদন শুরু ১ ডিসেম্বর সরকারি-বেসরকারি স্কুলে ভর্তি: দশ দিনে আবেদন প্রায় ৬ লাখ - dainik shiksha সরকারি-বেসরকারি স্কুলে ভর্তি: দশ দিনে আবেদন প্রায় ৬ লাখ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ১৮ সদস্যের কমিটি ঘোষণা - dainik shiksha বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ১৮ সদস্যের কমিটি ঘোষণা কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে ধারণা বাড়াতেই পাঠ্যক্রমে তথ্য অধিকার আইন বিষয় যুক্ত: এনসিটিবি চেয়ারম্যান - dainik shiksha ধারণা বাড়াতেই পাঠ্যক্রমে তথ্য অধিকার আইন বিষয় যুক্ত: এনসিটিবি চেয়ারম্যান কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক শিক্ষক নিবন্ধন ভাইভা: ২১তম দিনে যেসব প্রশ্নের মুখোমুখি - dainik shiksha শিক্ষক নিবন্ধন ভাইভা: ২১তম দিনে যেসব প্রশ্নের মুখোমুখি সরকারি কলেজ প্রদর্শকদের পদোন্নতির খসড়া প্রকাশ - dainik shiksha সরকারি কলেজ প্রদর্শকদের পদোন্নতির খসড়া প্রকাশ সুইডেনে স্কলারশিপে স্নাতকোত্তরের সুযোগ - dainik shiksha সুইডেনে স্কলারশিপে স্নাতকোত্তরের সুযোগ পঞ্চমে ফিরছে বৃত্তি পরীক্ষা, বার্ষিকে ৪ স্তরে মূল্যায়ন - dainik shiksha পঞ্চমে ফিরছে বৃত্তি পরীক্ষা, বার্ষিকে ৪ স্তরে মূল্যায়ন দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0028839111328125