সাত বছরে মেঘনায় তলিয়ে গেছে হাতিয়ার ১০ প্রাথমিক বিদ্যালয়

নোয়াখালী প্রতিনিধি |

মেঘনার গহ্বরে বিলীন হওয়ার পথে নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার চানন্দি ইউনিয়নের ‘জনতা বাজার বহুমুখী আশ্রয়ণ কেন্দ্র ও প্রাথমিক বিদ্যালয়’ ভবনটি। এলাকার আরও দুটি বিদ্যালয় ভবনও বিলীন হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। এতে নদীর পানিতে ডুবে যাবে হাজারও শিক্ষার্থীর স্বপ্ন। সাত বছরে মেঘনায় তলিয়ে গেছে হাতিয়ার অন্তত ১০টি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।

সূত্র মতে, আট বছরে উপজেলার চানন্দি ইউনিয়নে নির্মাণ হয়েছে বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৩০টি পাকা ভবন। যেগুলো আবার দুর্যোগ আশ্রয় কেন্দ্র হিসাবেও ব্যবহার হতো। এরমধ্যে সাত বছরে নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে ১০টি ভবন। এ সময় আরও ১৫টি মসজিদ, ১০টি বাজার, ৩৭টি দাখিল, এবতেদায়িসহ বহু মক্তব ও নূরানী মাদ্রাসা নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। গৃহহারা হয়েছে অন্তত ২০ হাজার পরিবার। নদীতে বিলীন হয়ে যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, তেমনি ক্ষতির মুখে এ অঞ্চলের শিশুদের শিক্ষা ব্যবস্থা। একই সঙ্গে ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাসে আশ্রয়হীন হয়ে পড়ছে স্থানীয়রা। আর এ ভবনগুলো নদীগর্ভে যাওয়ায় পানিতে যাচ্ছে সরকারের কোটি কোটি টাকা।

২০১৪ সালের ডিসেম্বরে প্রায় দেড় কোটি টাকা ব্যয়ে বাংলাদেশ, নেদারল্যান্ডস সরকার ও ইফাদের যৌথ অর্থায়নে জনতা বাজারে নির্মিত হয় ‘জনতা বাজার বহুমুখী আশ্রয়ণ কেন্দ্র ও প্রাথমিক বিদ্যালয়’ ভবনটি। এ ভবনটি এখন নদীগর্ভে বিলীনের পথে। উপকূলীয় দুর্যোগ ও জলোচ্ছ্বাসের সময় এ ভবনটিতে আশ্রয় নিত মানুষ। ভবনটি নদীতে তলিয়ে গেলে বিপদে পড়ে যাবে শিক্ষার্থীসহ ওই এলাকার হাজার হাজার মানুষ। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইমরান হোসেন বলেন, অন্য কোনো জায়গায় অস্থায়ীভাবে বিদ্যালয় করে শিক্ষার্থীদের পাঠদান চালানোর ব্যবস্থা করতে পরিচালনা কমিটিকে বলা হয়েছে।

হাতিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান মো. মাহবুব মোরশেদ জানান, আমরা নদী ভাঙনরোধে কাজ করছি। বিল পাশ হলে দ্রুত নদী ভাঙনের রোধে কাজ শুরু করা হবে। প্রসঙ্গত, দেশে প্রতি বছর নদীগর্ভে প্রায় ২০০ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বিলীন হয়ে যাচ্ছে। এতে পানিতে ভেসে যাচ্ছে হাজার কোটি টাকার বেশি। এ ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যাই বেশি। পাড় ধস শুরুর পরও একতলা ভবন দোতলা করার নজির আছে। ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় মাটিসহ প্রয়োজনীয় পরীক্ষা ছাড়াই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নির্মাণে এ অবস্থার সৃষ্টি হচ্ছে। সরকারের এ সংক্রান্ত কোনো নীতিমালা নেই। আছে শুধু নির্দেশনা, কিন্তু তাও উপেক্ষিত। বেছে বেছে এমন স্থানে ভবন নির্মাণের সঙ্গে একটি চক্র জড়িত। তারা স্কুলের জন্য বরাদ্দের চেয়ে অনেক কম ব্যয় করে বাকি টাকা পকেটে তুলছে। নির্মিত ভবন নদীতে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাওয়ায় এর মান পরীক্ষারও কোনো সুযোগ থাকছে না। এতে সরকারের বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে। একই সঙ্গে অনেক এলাকা স্কুলশূন্য হয়ে পড়ছে। ফলে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও তাদের পরিবারও পড়ছে বিপাকে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ ১২ মে - dainik shiksha এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ ১২ মে খাড়িয়া ভাষা সংরক্ষণে উদ্যোগ গ্রহণের আহবান প্রধান বিচারপতির - dainik shiksha খাড়িয়া ভাষা সংরক্ষণে উদ্যোগ গ্রহণের আহবান প্রধান বিচারপতির উপবৃত্তির সব অ্যাকাউন্ট নগদ-এ রূপান্তরের সময় বৃদ্ধি - dainik shiksha উপবৃত্তির সব অ্যাকাউন্ট নগদ-এ রূপান্তরের সময় বৃদ্ধি শিক্ষক হতে চান না শিক্ষক দম্পতিদের কৃতী সন্তানরা - dainik shiksha শিক্ষক হতে চান না শিক্ষক দম্পতিদের কৃতী সন্তানরা কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস - dainik shiksha শিক্ষার্থী বিক্ষোভের মধ্যে ইহুদিবিদ্বেষ নিয়ে বিল পাস দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0029258728027344