সাত ভাগের এক ভাগেই খুশি মাদ্রাসাছাত্রী জয়নব

কলাপাড়া(পটুয়াখালী) প্রতিনিধি |

সপ্তম শ্রেণির মাদ্রাসা ছাত্রী জয়নব। কিন্তু মাদ্রাসায় না গিয়ে সে এখন ব্যস্ত ডাল তুলতে। সঙ্গে আছেন তার মা। মাদ্রাসায় গেলে ঠিক মতো ক্লাস হয় না, তাই সংসারে একটু বাড়তি আয়ের জন্য প্রচণ্ড রৌদের মধ্যেও সে খুশি মনে ডাল তুলছে ক্ষেতে। জয়নাবের মতোই পটুয়াখালীর কলাপাড়ার জেলে ও কৃষক পরিবারের শতশত স্কুল-মাদ্রাসা পড়ুয়া ছাত্র-ছাত্রী গত এক সপ্তাহ ধরে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে ফেলন ডাল সংগ্রহ ও তরমুজ ক্ষেতে পানি ছিটানোর কাজে। মাত্র কয়েক কেজি ডাল ও দিন শেষে ৩০-৫০টাকার বিনিময়ে তারা এ শ্রম বিক্রি করছে।

মাদ্রাসা ছাত্রী জয়নব জানায়, ’ঘরে চাউল নাই। মোর তো আর আব্বা নাই। হেইয়ার লাইগ্যা মুই আর মা দুই ক্ষ্যাতে ডাইল তুলি। আইজ মুই দেড় কেজি ডাইল পাইছি। মায় পাইছে তিন কেজি। আরও ৩/৪ দিন মোরা ডাইল তুলমু। হেইয়ার পর মাদ্রাসায় যামু।’
মালিকের সাথে চুক্তি এই সাত ভাগের একভাগ ডাল। তাতেই খুশি জয়নব ও তার মা মহিমা বেগম। কারণ তাদের বিকল্প আর কোন কাজ নেই এই মৌসুমে।


ধানখালী গ্রামের তরমুজ ক্ষেতে পানি ছিটাতে ব্যস্ত চতুর্থ শ্রেণির স্কুল ছাত্র সাহাবুদ্দিন ও তার বোন পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী মাহমুদা। গত তিনদিন ধরে প্রতিদিন ৫০ টাকা শ্রমে ক্ষেতে পানি দিচ্ছে তারা। তাদের মতো একই কাজ করছে চম্পাপুর ইউনিয়নে স্কুলছাত্র মনির, সিরাজুল, বদরুল ও কাজলী। স্কুলছাত্রী কাজলী জানায়, দুপুর হইতে সন্ধা পর্যন্ত এটাই তাদের কাজ। পাশের খাল দিয়া পানি আনে কলসী ভরে। গত এক সপ্তাহ ধরে তারা এই পানি টানার কাজ করছে বলে জানায় তারা। কখনও ১০ কলস কখনও বা ২০-২৫ কলস পানি টানে। প্রতি কলস পানিতে পাঁচ টাকা করে তাদের দেয়া হয়।

তিন সন্তানের জননী মহিমা বেগম। তিনি বলেন, আগে রাস্তায় মাডি কাটতাম। এ্যাহনতো মাডি কাডা বন্ধ। অন্য কাজও নাই। হেইয়ার লাইগ্যা ডাইল তুলি। আইজ আড়াই কেজি ডাইল পাইছি। এইয়া বেইচ্চা পঞ্চাশ-ষাট টাহা পাইতে পারি। জানি এই টাহায় সংসার চলবে না। কিন্তু কাম নাই। তাই এইয়া ছাড়া উপায়ও নাই। মেয়েকে সঙ্গে এনেছেন কেন জানতে চাইলে বলেন, কি করমু কন, ঘরে বইয়া থাকলে কি খাওন জোটবে। মাদ্রাসায় তো এ্যাহন ক্লাস হয় না। তাই আমাগো লগে ডাইল তোলে। যে কয় টাহা পায় হেইয়া দিয়া তো খাতা-কলম কেনার টাহা হইবে। তার মতো ক্ষেতে ডাল তুলছে, হেলেনা বেগম, আম্বিয়া খাতুন, জাহানারা, কোহিনুর ও আনোয়ার হোসেন।
কলাপাড়া উপজেলার একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঘুরে দেখা গেছে, স্কুল-মাদ্রাসায় বার্ষিক ক্রীড়াসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানের কারণে এখনো পুরোদমে ক্লাস হচ্ছে না।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি, জানালো শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি, জানালো শিক্ষা মন্ত্রণালয় স্কুল-কলেজ শিক্ষকদের এপ্রিল মাসের এমপিওর চেক ছাড় - dainik shiksha স্কুল-কলেজ শিক্ষকদের এপ্রিল মাসের এমপিওর চেক ছাড় গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটে প্রথম লামিয়া - dainik shiksha গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটে প্রথম লামিয়া প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে দ্বিতীয় ধাপের চূড়ান্ত ফল আগামী সপ্তাহ - dainik shiksha প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগে দ্বিতীয় ধাপের চূড়ান্ত ফল আগামী সপ্তাহ ছাত্রলীগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফিলিস্তিনের পতাকা উড়াবে কাল - dainik shiksha ছাত্রলীগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফিলিস্তিনের পতাকা উড়াবে কাল চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ করার বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রী যা জানালেন - dainik shiksha চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ করার বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রী যা জানালেন গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ, পাস ৩৬.৩৩ শতাংশ - dainik shiksha গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ, পাস ৩৬.৩৩ শতাংশ কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0052149295806885