সাবেক গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (সদর-বিজয়নগর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মোকতাদির চৌধুরীসহ জেলা আওয়ামী লীগ ও অংগসংগঠনের ২৬ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।
শুক্রবার (২৩ অক্টোবর) রাতে ১০টা ৫ মিনিটে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জামিয়া ইসলামিয়া ইউনুসিয়া মাদরাসার ছাত্র মাওলানা হুসাইন আহম্মেদকে হত্যার দায়ে তার বোন তানিয়া আক্তার মামলাটি করেন।
মামলায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরের প্রধান সড়ক টি. এ. রোড কাজী মাহমুদ শাহ গেটের সামনের হত্যার ঘটনাস্থলে দেখানো হয়েছে। এতে অজ্ঞাতনামা আরও অনেককেই আসামি করা হয়েছে।
গণপূর্তমন্ত্রী মোকতাদির চৌধুরী ব্যতীত মামলায় উল্লিখিত অন্যান্য আসামিরা হলেন—পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রবিউল হোসেন, সাধারণ সম্পাদক ও সদ্য সাবেক সদর উপজেলা চেয়ারম্যান শাহাদত হোসেন শোভন, সাবেক গণপূর্তমন্ত্রীর ব্যক্তিগত সহকারী আবু মুছা আনছারি, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহবুব আলম, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ভিপি হাসান সারোয়ার, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. লোকমান হোসেন, জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক মনির হোসেন, উপ-দপ্তর সম্পাদক সুজন দত্ত, জেলা আওয়ামী লীগের উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মাসুম বিল্লাহ, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক এম. সাইদুজ্জামান আরিফ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা যুবলীগের সভাপতি আলী আজম, সাধারণ সম্পাদক জসিম উদ্দিনসহ ২৬ জনের নাম রয়েছে।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরকে কেন্দ্র করে বিক্ষোভ কর্মসূচি করেছিল বাংলাদেশের আলেম সমাজ। সেই কর্মসূচি পালনকালে ২০২১ খ্রিষ্টাব্দের ২৭ মার্চ সন্ধ্যায় সাবেক গণপূর্ত মন্ত্রী মোকতাদির চৌধুরী নির্দেশে মাদরাসাছাত্রদের ওপর হামলা হয়। এতে মাদরাসাছাত্র ও মামলার বাদীর ভাই মাওলানা হোসাইন আহাম্মদ গুলিবিদ্ধ হন। ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেদিন রাত সাড়ে ১২টায় মাওলানা হোসাইন আহাম্মদ মারা যায়। পরে সেখান থেকে মরদেহের ময়নাতদন্তের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। তখন মামলায় উল্লিখিত আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা মাওলানা হোসাইন আহাম্মদের মরদেহ ময়নাতদন্ত না করে দাফন করার নির্দেশ দেয়। সে সময় মাদরাসাছাত্র-শিক্ষকগণ মাওলানা হোসাইন আহাম্মদের মরদেহে তার গ্রামের বাড়ি নিয়ে দাফন সম্পন্ন করেন।
সে সময় আসামিদের দাপট, পুলিশ ও সিভিল প্রশাসনের অসহযোগিতা করায় মামলা করতে পারেননি বলে জানান বাদী ও নিহতের বোন তানিয়া আক্তার।
এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোজাফ্ফর হোসেন জানান, শুক্রবার রাতে মামলা হয়েছে। দ্রুতই মামলার আইনগত পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।