সামান্য বৃষ্টিতেই তলিয়ে যায় কলেজ প্রাঙ্গণ

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি |

বৃষ্টি হয়, পানি জমে। বৃষ্টি থামে, কিন্তু পানি নামে না। এ চিত্র কিশোরগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজ প্রাঙ্গণের। সামান্য বৃষ্টি হলেই জলাবদ্ধতা তৈরি হয় প্রতিষ্ঠানটির চত্বরে। সেই সঙ্গে কলেজ গেটের বাইরের পুরো এলাকা জলাশয় আর ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়। ফলে শিক্ষার্থীদের পাঠদান ও প্রশাসনিক কার্যক্রমসহ কলেজের সার্বিক কাজ চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে। এ নিয়ে ক্ষোভ বাড়ছে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মাঝে। 

সরেজমিনে দেখা গেছে, কলেজের সামনের রাস্তা, কলেজ মাঠ, কলেজের মূল ফটকসহ কলেজের বেশিরভাগ এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। এ অবস্থায় কলেজের গুরুত্বপূর্ণ কাজ ছাড়াও অন্য নিয়মিত কাজ ব্যাহত হচ্ছে।

দেখা গেছে, বৃষ্টি হলে শহরের পুরাতন কোর্ট পুরো এলাকা কাদাপানিতে একাকার হয়ে যায়। প্রায় জায়গায় পঁচা আর্বজনা আর ডাস্টবিনের ময়লা, বর্জ উঠে আসে রাস্তার ওপর। বর্ষা মৌসুমে এ দৃশ্য নিয়মিত। অপরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থার কারণে কয়েক ঘণ্টার বৃষ্টিতেই ড্রেনের পানি আর বৃষ্টির পানি মিশে কলেজের ভেতর প্রবেশ করে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি করে। জলাবদ্ধতায় কলেজের মূল ফটকসহ পুরো কলেজ এলাকা চলাচল অনুপযোগী হয়ে পড়ে। আর সেই জলাবদ্ধতায় চরম ভোগান্তিতে পরতে হয় কলেজের দশ হাজার ছয়শ’ শিক্ষার্থী, ৬১ জন শিক্ষক ও ৬৩ জন কর্মচারীসহ আশপাশ এলাকার কয়েক হাজার বাসিন্দাকে। নোংরা আবর্জনা যুক্ত হাঁটুপানি পেরিয়ে কলেজে যাতায়াত করতে হয় শিক্ষার্থীদের। কলেজ কর্তৃপক্ষসহ এলাকাবাসী বারবার পৌর কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানালেও সুফল মেলেনি।

কলেজ কর্তৃপক্ষ জানায়, কয়েক বছর আগে কলেজ ক্যাম্পাসের জলাবদ্ধতা দূর করার জন্য কলেজ চত্বরে পৌরসভার অর্থায়নে একটি ড্রেন নির্মাণ করা হয়। কিন্তু কলেজের সামনের রাস্তায় নির্মিত ড্রেন অপেক্ষা এই ড্রেন অনেক নিচু হয়ে যাওয়ায় পানি নিষ্কাশন তো হয়ই না উল্টো রাস্তার ড্রেনের পানি কলেজ চত্বরে প্রবেশ করে।

কিশোরগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ মো. হাবিবুর রহমান দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, আমাদের কলেজের এই দুর্দশা দীর্ঘদিনের। কলেজের সামনের ড্রেনটি পাকা হওয়ার আগেও এভাবে পানি জমত না। ড্রেনটি পাকা করার পরে বরং জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে। আগে ছাত্রীদের আবাসিক হোস্টেলের নিচতলায় পানি জমতো কিন্তু শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের উদ্যোগে হোস্টেলের নিচতলার ফ্লোর উঁচু করা হয়েছে। ফলে এ বছর হোস্টেলের ভেতরে পানি ঢুকেনি। বারবার পৌর কর্তৃপক্ষকে এ বিষয়ে বলা হলেও তারা কোনো কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করছেন না।

সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) সভাপতি ম ম জুয়েল দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, সমস্যাটি শুধু সরকারি মহিলা কলেজের একার নয় পুরো শহরেরই একই অবস্থা। আমার জানা মতে পৌর এলাকার কয়েকটি সড়ক বাদে সবগুলোতেই পানি জমে। পানি নিষ্কাশনের পরিকল্পিত কোনো ব্যবস্থা না থাকায় ময়লা আবর্জনা মিশ্রিত পানি মানুষের ঘরে ঢুকছে। সব শ্রেণি পেশার মানুষই এর ভুক্তভোগী। প্রশাসনের সদিচ্ছা না থাকলে এই নাকাল অবস্থা থেকে পরিত্রাণের কোনো সুযোগ নেই। 

এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে কিশোরগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মাহমুদ পারভেজের সঙ্গে মুঠোফোনো একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার সাড়া পাওয়া যায়নি।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
আইনের মারপ্যাঁচে অনিশ্চিত ১৯তম শিক্ষক নিবন্ধন - dainik shiksha আইনের মারপ্যাঁচে অনিশ্চিত ১৯তম শিক্ষক নিবন্ধন ‘ঢাবির ক্লাস ও পরীক্ষা শুরু হচ্ছে শিগগিরই’ - dainik shiksha ‘ঢাবির ক্লাস ও পরীক্ষা শুরু হচ্ছে শিগগিরই’ হাই-টেক পার্কের নাম হবে জেলার নামে: উপদেষ্টা নাহিদ - dainik shiksha হাই-টেক পার্কের নাম হবে জেলার নামে: উপদেষ্টা নাহিদ দীপু মনির নামে আরেক মামলা, আসামি ৬০০ - dainik shiksha দীপু মনির নামে আরেক মামলা, আসামি ৬০০ স্কুল-কলেজে বিশৃঙ্খলা : কোথাও জবরদস্তি কোথাও পালিয়ে থাকা - dainik shiksha স্কুল-কলেজে বিশৃঙ্খলা : কোথাও জবরদস্তি কোথাও পালিয়ে থাকা কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0053138732910156