সার্টিফিকেট জালিয়াতিতে বোর্ডের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও জড়িত: ডিবি

দৈনিক শিক্ষাডটকম প্রতিবেদক |

টাকার বিনিময়ে নকল সার্টিফিকেট তৈরি করে বিক্রির অভিযোগে গ্রেফতার কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের সিস্টেম অ্যানালিস্ট এ কে এম শামসুজ্জামান গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) জিজ্ঞাসাবাদে মুখ খুলতে শুরু করেছেন। জালিয়াতি করে সার্টিফিকেট বিক্রির বিষয়টি বোর্ডের উর্ধ্বতন অনেক কর্মকর্তারা জানতেন। এর সঙ্গে বোর্ডের লোকজনসহ অনেকে জড়িত। তাদের ম্যানেজ করেই চলত জালিয়াতি।

আজ বৃহস্পতিবার নিজ কার্যালয় এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ তথ্য জানিয়েছেন ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।

ছবি: সংগৃহীত

তিনি বলেন, কয়েক দিন আগে পীরেরবাগে অভিযান চালিয়ে কারিগারি শিক্ষা বোর্ডের সার্টিফিকেট তৈরির কারখানার সন্ধান পায় ডিবি। এই সার্টিফিকেট কিন্তু জাল নয়। সরকার যে কাগজ ব্যবহার করে শিক্ষার্থীদের সনদ দেয়, শামসুজ্জামান একই কাগজ ব্যবহার করে সার্টিফিকেট বানাত। অর্থাৎ তিনি শিক্ষা বোর্ড থেকে কাগজ এনে বাসায় বসে সার্টিফিকেট বানাতেন। তারপর রেজাল্ট অনুযায়ী টাকা নিতো, তবে ৩৫ হাজারের কমে কোনো সার্টিফিকেট বিক্রি করত না। এরপর সার্টিফিকেট বানানোর পরে সেই রেজাল্টের তথ্য শিক্ষা বোর্ডের সার্ভারে আপলোড করে দিতো।

এই কর্মকর্তা বলেন, এসব সার্টিফিকেট দিয়ে অনেকে বিদেশে গেছেন, অনেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করছে, আবার অনেকে চাকরি করছে। এভাবে সে দীর্ঘদিনে সাড়ে পাঁচ হাজারের বেশি সার্টিফিকেট দিয়েছে। 

ডিবিপ্রধান বলেন, গ্রেফতারের পর কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের সিস্টেম অ্যানালিস্ট এ কে এম শামসুজ্জামানকে রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ সে অনেক চমকপ্রদ তথ্য দিচ্ছে। শিক্ষা বোর্ড থেকে সনদ তৈরির কাগজ কিভাবে বের করত এই প্রশ্নের জবাবে শামসুজ্জামান গোয়েন্দাদের জানিয়েছেন, বোর্ডের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সবাইকে ম্যানেজ করে কাজ করতো। সবার সঙ্গে যোগসাজশ করে কাগজ বের করত। এমনকি তার এই সার্টিফিকেট তৈরির কারখানার বিষয়ে অনেক গণমাধ্যমের সাংবাদিকরাও জানত। সবাই তার কাছ থেকে অবৈধ সুবিধা নিয়ে তার অপরাধ গোপন রাখত। 

তিনি আরও বলেন, শামসুজ্জামানের অবৈধভাবে সার্টিফিকেট বাণিজ্যের বিষয়ে অভিযোগ উঠলে একাধিকবার তদন্ত কমিটি গঠন হয়েছে। বোর্ডের কর্মকর্তারা তদন্ত করতে গিয়ে দেখলেন অনেক কিছু বেড়িয়ে আসছে। ফলে সেটাও ধামাচাপা দেওয়া হয়। নিজেরে না বোঝার দোহাই দিয়ে অভিযোগ তদন্তের জন্য পাঠানো হয় কমম্পিটার কাউন্সিলে। তারাও বিষয়টি ধরতে পেরে চুপ হয়ে যায়।

হারুন বলেন, কামরুজ্জামান আমাদের বলেছেন, সার্টিফিকেট তৈরির বিষয়টি সবাই জানতেন। টাকার বিনিময়ে সবাই তার কাছে ম্যানেজ করে আসল সার্টিফিকেট বানিয়ে সার্ভারে আপলোড করে দিতেন। তার কাছ থেকে সার্টিফিকেট কিনেছেন, কোন কোন প্রতিষ্ঠান কিনেছেন, সেগুলো জানার চেষ্টা চলছে। রিমান্ডে পাওয়া তথ্য যাচাই করে কোনো রাঘব বোয়াল জড়িত থাকার তথ্য পেলে সবাইকে গ্রেফতার করা হবে।
 


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
একাদশে ভর্তিতে কলেজ পছন্দে যে বিষয়গুলো মনে রাখতে হবে - dainik shiksha একাদশে ভর্তিতে কলেজ পছন্দে যে বিষয়গুলো মনে রাখতে হবে ছাত্রীকে যৌন হয়রানি: জুতার মালা শিক্ষককের - dainik shiksha ছাত্রীকে যৌন হয়রানি: জুতার মালা শিক্ষককের ঢাকা বোর্ডের এসএসসি: অসন্তুষ্টদের খাতা চ্যালেঞ্জ ১ লাখ ৮০ হাজার - dainik shiksha ঢাকা বোর্ডের এসএসসি: অসন্তুষ্টদের খাতা চ্যালেঞ্জ ১ লাখ ৮০ হাজার থমকে আছে শিক্ষক বদলি কার্যক্রম - dainik shiksha থমকে আছে শিক্ষক বদলি কার্যক্রম প্রশিক্ষক হতে শিক্ষকদের আবেদন আহ্বান - dainik shiksha প্রশিক্ষক হতে শিক্ষকদের আবেদন আহ্বান কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে - dainik shiksha এসএসসির খাতা চ্যালেঞ্জের আবেদন যেভাবে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0041229724884033