সাড়ে ৪ মাসে ১৮৮ শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা, বিশেষজ্ঞরা যেসব বিষয়কে দায়ী করছেন

দৈনিক শিক্ষাডটকম প্রতিবেদক |

দৈনিক শিক্ষাডটকম প্রতিবেদক:  চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ১৪ মে পর্যন্ত ১৮৮ জন শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছে। মাধ্যমিক পরীক্ষার ফল প্রকাশের তিনদিনেই আত্মহননের পথ বেছে নেয় অন্তত ১০ জন। বিশেষজ্ঞদের মতে পারিবারিক চাপ, দারিদ্র, প্রতিযোগিতার সংস্কৃতি আর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম উসকে দিচ্ছে শিক্ষার্থীদের। 

পরিবার বুঝে ওঠার আগেই অবসান এক ছোট জীবনের। কাঙ্ক্ষিত ফলের ব্যর্থতা, কেনো আর কীভাবে এত ভারী হয়ে উঠলো সুমাইয়ার জীবনে?

সুমাইয়ার বাবা বলেন, আমি মুর্খ মানুষ। আমার কাগজ-পাতি ধরার মতো কেউ নাই। তাই আমার মেয়েটাকে নিয়ে একটু আশা করছিলাম তাকে শিক্ষিত বানানোর। 

প্রতিবছরই মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক ও সমমান পরীক্ষার ফল প্রকাশের পর আত্মহত্যার পথ বেছে নেয় অনেক শিক্ষার্থী। আঁচল ফাউন্ডেশনের তথ্য বলছে, ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দে দেশে আত্মহনন করেছে ৫১৩ শিক্ষার্থী। ২০২২ সংখ্যাটা ছিল ৫৩২ জন। আর চলতি বছর জানুয়ারি থেকে ১৪ মে পর্যন্ত আত্মহত্যা করেছেন প্রায় ১৮৮ জন শিক্ষার্থী।

শিক্ষক, লেখক ও সংস্কৃতিকর্মী সঙ্গীতা ইমাম বলেন, যারা পরীক্ষা ভালো করে, তাদের নিয়ে সবাই উৎসব করে। রাষ্ট্রও তাদের নিয়ে উৎসব করে। কিন্তু যারা ঝরে গেল, পারল না তাদের জন্য বুস্টার্ব করা। কেন এরা এবার পারল না, কেন পারল না। সেগুলো নিয়ে তাদের সহযোগিতা করা। এটা কিন্তু আমাদের মধ্যে নাই। 

বিশেষজ্ঞের মতে, আত্মহত্যার ঘটনা ঘটলে, পরিবারের অন্য সদস্যদেরও আত্মহননের ঝুঁকি থেকে যায়। যদিও পরিবার সহযোগিতার হাত বাড়ালেই বদলাতে পারে এই চিত্র।

মনোবিজ্ঞানী রাউফুন নাহার বলেন, পরীক্ষায় খারাপ করলে মা-বাবারা সরাসরি বলে আমরা কাউকে মুখ দেখাতে পারছি না। তখন শিশু বা শিক্ষার্থীরা কিন্তু মনে করে তাদের বেঁচে থাকার কোন মানেই নাই। তবে বাইরে থেকে যতই চাপ আসুক, পরিবার ঠিক থাকলে কিন্তু এগুলো কোনো বিষয়ই না।  

তবে কি দারিদ্র, প্রতিযোগিতার সংস্কৃতি আর সোশ্যাল মিডিয়া সবটাই উসকে দিচ্ছেন শিক্ষার্থীদের? নাকি সমাজ বিষণ্নতা, মানসিক চাপ কিংবা আত্মহনন প্রবণতার স্বাভাবিকীকরণের প্রক্রিয়ার পদ্ধতিগত কারণগুলো এড়িয়ে যাচ্ছে?

লেখক ও গবেষক গওহার নঈম ওয়ারা বলেন, যখন ঘটনা ঘটছে, তখন আমরা কথা বলছি। কিন্তু কয়েকদিন পরই থেমে যাচ্ছি। কিন্তু এটাকে স্বীকার করতে হবে যে, আমাদের একটা সামাজিক সংকট আছে।  

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পরিস্থিতি বিবেচনায় শিশু-কিশোরের মানসিক স্বাস্থ্যের প্রতি সচেতনতার বিকল্প নেই। পদ্ধতিগত দিকগুলোকে মাথায় রেখেই যত্নে থাকুক মন।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
ডিআইএর নতুন পরিচালক অধ্যাপক আবু কাইয়ুম - dainik shiksha ডিআইএর নতুন পরিচালক অধ্যাপক আবু কাইয়ুম জাতীয়করণসহ তিন দাবিতে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরিদের অবস্থান - dainik shiksha জাতীয়করণসহ তিন দাবিতে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরিদের অবস্থান এমপিওর দাবিতে প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় শিক্ষকদের পদযাত্রা - dainik shiksha এমপিওর দাবিতে প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় শিক্ষকদের পদযাত্রা কারিগরিতে ৪০ শতাংশ নম্বরে উপবৃত্তি - dainik shiksha কারিগরিতে ৪০ শতাংশ নম্বরে উপবৃত্তি কাউকে হেনস্তা না করার আহ্বান বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্কের - dainik shiksha কাউকে হেনস্তা না করার আহ্বান বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্কের আটকের পর বিজিবিকে যে প্রলোভন দেখান বিচারপতি মানিক - dainik shiksha আটকের পর বিজিবিকে যে প্রলোভন দেখান বিচারপতি মানিক নয় বছরের শিক্ষিকাকে পরিচ্ছন্নতাকর্মী হতে বললেন প্রধান শিক্ষক - dainik shiksha নয় বছরের শিক্ষিকাকে পরিচ্ছন্নতাকর্মী হতে বললেন প্রধান শিক্ষক দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0025420188903809