বাংলাদেশের রাজনীতির ‘রহস্য পুরুষ’ হিসেবে পরিচিত সিরাজুল আলম খানের (দাদাভাই) শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় লাইফসাপোর্টে নেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের আইসিইউতে তাকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাজমুল হক এ তথ্য জানান।
গত ৭ মে রাতে শ্বাসকষ্টসহ বার্ধক্যজনিত অসুস্থতা নিয়ে ঢাকার পান্থপথে শমরিতা হাসপাতালে ভর্তি হন সিরাজুল আলম খান। চিকিৎসকদের পরামর্শে গত ২০ মে ঢামেক হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয় এই প্রবীণ রাজনীতিবিদকে।
শারীরিক জটিলতা দেখা দেওয়ায় সিরাজুল আলম খানকে ঢামেক হাসপাতালের আইসিইউতে রাখা হয়। অবস্থার আরও অবনতি হওয়ায় নেওয়া হলো লাইফ সাপোর্টে।
মুক্তিযুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা সিরাজুল আলম খানের বয়স ৮২ বছর। তিনি উচ্চ রক্তচাপ, শ্বাসকষ্ট, ফুসফুসে সংক্রমণসহ নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছেন।
এর আগে ২০২১ খ্রিষ্টাব্দে অসুস্থ হয়ে কিছু দিন তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন।
মান-অভিমান নিয়ে দীর্ঘদিন যুক্তরাষ্ট্রে অনেকটা নির্বাসিত জীবন কাটান সাবেক এই জাসদ নেতা। অকৃতদার সিরাজুল আলম খান ঢাকার কলাবাগানে ভাইদের সঙ্গেই থাকেন।
স্বাধীনতালগ্নে তৎকালীন ছাত্রলীগ নেতা সিরাজুল আলম খান, আব্দুর রাজ্জাক ও কাজী আরেফ আহমেদের নেতৃত্বে স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী পরিষদ বা স্বাধীনতার নিউক্লিয়াস গঠিত হয়। পরে ছাত্র-তরুণদের আন্দোলন সংগঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন তারা। বঙ্গবন্ধুরও ঘনিষ্ঠ সাহচর্যে ছিলেন এই ছাত্রনেতারা।
বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর পরই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাগ্নে শেখ ফজলুল হক মনির সঙ্গে বিরোধের জের ধরে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ ভেঙে দুই ভাগ হয়। এর পর ১৯৭২ খ্রিষ্টাব্দে সিরাজুল আলম খানের উদ্যোগে রাজনৈতিক দল জাসদ প্রতিষ্ঠা হয়।
তিনি কখনো নেতৃত্বে না এলেও জাসদ নেতাদের পরামর্শক হিসেবে তাদের ‘তাত্ত্বিক গুরু’ হিসেবে পরিচিত। তাকে সবাই ‘দাদাভাই’ নামেই ডাকেন।
সিরাজুল আলম খান কখনো জনসম্মুখে আসতেন না এবং বক্তৃতা-বিবৃতি দিতেন না; আড়ালে থেকে তৎপরতা চালাতেন বলে বাংলাদেশের রাজনীতিতে ‘রহস্য পুরুষ’ হিসেবে পরিচিতি পান।