ফের ব্যাপক অনিয়ম আর নকল উৎসবের মধ্য দিয়েই চলছে অনিয়ম ও নকলের অভিযোগে বাতিল হওয়া বাউবির (বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের) পটুয়াখালীর বাউফল সরকারি কলেজ কেন্দ্রে স্নাতক (পাস) ও বিএসএস বিভিন্ন (প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয়, চতুর্থ, পঞ্চম ও ষষ্ঠ বর্ষ) বর্ষের পরীক্ষা। পরীক্ষা কক্ষের সিসি ক্যামেরা বন্ধ রেখে নকল সরবরাহসহ এ অনৈতিক কাজে সহোযোগিতার অভিযোগ উঠেছে কক্ষ পরিদর্শকের দায়িত্বে থাকা ওই কলেজের কয়েকজন শিক্ষকদের বিরুদ্ধে।
জানা গেছে, বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে খবর প্রকাশের পর কেন্দ্র পরিদর্শনে এসে ২০১৭ সালের ৬ অক্টোবর পরীক্ষা চলাকালে হলে ব্যাপক অনিয়ম, প্রোক্সিসহ নকলের অভিযোগে বাউবি কর্তৃপক্ষ বাউফল সরকারি কলেজ কেন্দ্র বাতিলের ঘোষণা দিয়ে ওই কেন্দ্র থেকে প্রায় আধা কিলোমিটার দূরে পৌর সদরের ইঞ্জিনিয়ার ফারুক তালুকদার মহিলা ডিগ্রি কলেজে কেন্দ্রে পরবর্তী বিষয়ের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার ব্যাবস্থা গ্রহণ করেন।
কিন্তু এবারও স্নাতক প্রথম বর্ষের ইংরেজি বিষয়ের পরীক্ষায় অভিযোগ ওঠে ব্যাপক অনিয়ম আর নকলের। হলের প্রতিটি কক্ষে সিসি ক্যামেরা থাকলেও পরীক্ষা চলাকালে বন্ধ রাখা হচ্ছে তা। ছড়িয়ে ছিটিয়ে বসে যে যার মতো করে পরীক্ষা দেন শিক্ষাথীরা। হলে নকলের সুবিধা নিলেও পরিদর্শকরা নিচ্ছেন না কোনো ব্যাবস্থা। পরীক্ষা চলাকালে অনুপস্থিত রয়েছেন
ওই কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম। দায়িত্ব দিয়ে গেছেন তিনি একই কলেজের ইসলামিক শিক্ষা বিষয়রে প্রভাষক শহিদুল ইসলামকে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কলেজের এক শিক্ষক অভিযোগ করে বলেন, কয়েক প্রভাবশালীর জন্য ফের ভেন্যু পরিবর্তন করা হয়েছে ওই কেন্দ্রের।
প্রভাবশালীদের কেউ কেউ ও তাদের আত্মীয়-স্বজনদের কেউ আবার এ কেন্দ্রের পরীক্ষার্থী হয়ে হলে বসে পরীক্ষা না দিলেও উত্তীর্ণ হন বিগত পরীক্ষায়। কেউ আবার দিচ্ছে প্রক্সি পরীক্ষাও।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক অভিভাবক বলেন, উম্মুক্ত পরীক্ষা উম্মুক্ত নিতেই নেওয়া হয়েছে পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে এক হাজার টাকা করে।
এ ব্যাপারে জানতে পরীক্ষা পরিচালনার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বাউফল সরকারি কলেজ কেন্দ্রের অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) মো. রফিকুল ইসলামের মোবাইল ফোনে কল করা হলে তা বন্ধ পাওয়া যায়। তবে পরীক্ষার দায়িত্বে থাকা মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, উম্মুক্ত পরীক্ষার নেওয়ার জন্য সিসি ক্যামেরার প্রয়োজন নেই। কোনো পরীক্ষার্থীর কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা নেওয়া হয়নি।
এ ব্যাপারে বাউবির উপপরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মো. কামরুজ্জামান ভূঁইয়া বলেন, নকল যাতে না হয় সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিতর্কিত কেন্দ্রে ফের পরীক্ষা কেন জানতে চাইলে তা কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত বলে সাংবাদিকদের জানান তিনি।
গত শুক্রবার (১১ মে) পরীক্ষা শুরু হয় বাউবির অধীনে স্নাতক (পাস) ও বিএসএস প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয়, চতুর্থ, পঞ্চম ও ষষ্ঠ বর্ষের। এতে প্রথম বর্ষে ৩১৮ জন, দ্বিতীয় বর্ষে ৩৩১ জন, তৃতীয় বর্ষে ২৮৯ জন, চতুর্থ বর্ষে ১৫২ জন, পঞ্চম বর্ষে ১৯২ জন ও ষষ্ঠ বর্ষে ১৬৮ জনসহ পৌর সদরের বাউফল সরকারি কলেজ
কেন্দ্র মোট ১ হাজার ৪৫০ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিচ্ছেন। আগামী ১০ আগষ্ট শেষ হবে এ পরীক্ষা।