দৈনিক শিক্ষাডটকম, সীতাকুণ্ড (চট্টগ্রাম) : চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ৯৮টি। এর মধ্যে আটটি ছাড়া বাকিগুলোয় নেই স্থায়ী শহীদ মিনার। সরকারি কোনো বরাদ্দ না থাকায় এসব বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নির্মাণ সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানসংশ্লিষ্টরা। এদিকে শহীদ মিনার না থাকায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে বিপাকে পড়তে হয় শিক্ষার্থীদের।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা বলেছেন, উপজেলার প্রতিটি বিদ্যালয়ে প্রতিবছর সরকারিভাবে ভাষা দিবস পালন করা হয়। সেদিন অনেক আগ্রহ নিয়ে বিদ্যালয়ে ছুটে আসে খুদে শিক্ষার্থীরা। তবে বিদ্যালয়ে কোনো শহীদ মিনার না থাকায় অনেকটাই নিরুৎসাহিত হয়ে বাড়ি ফিরতে হয় তাদের। আবার শহীদ মিনার না থাকার কারণে অনেক শিক্ষার্থী সেদিন বিদ্যালয়েই আসে না।
কথা হয় বেশ কয়েকজন খুদে শিক্ষার্থীর সঙ্গে। তারা জানায়, একুশে ফেব্রুয়ারিতে শহীদ মিনারে ফুল দিতে যাওয়ার প্রবল আগ্রহ থাকলেও তাদের বিদ্যালয়ে নেই শহীদ মিনার। তাই ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও শহীদ মিনারে ফুলেল শ্রদ্ধা জানাতে পারে না তারা।
উপজেলার পশ্চিম মহাদেবপুর আলম শফি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা বলেন, সরকারি নির্দেশনা ও বরাদ্দ না থাকায় আন্তরিকতা থাকা সত্ত্বেও অর্থাভাবে তাদের বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নির্মাণ করা সম্ভব হয়নি।
বাড়বকুণ্ড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক খুরশীদ আলম বলেন, স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের সহায়তায় তিন বছর আগে তাঁদের বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়। শহীদ মিনার নির্মাণ করায় শিক্ষার্থীরা খুশি। এখন তারা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে শহীদবেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করতে পারে।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি জাহাঙ্গীর ভূঁইয়া বলেন, উপজেলার ৯৮টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বহু শিক্ষার্থী পড়ছে। তাদের ভাষা দিবসের গুরুত্ব জানানোর জন্য প্রতিটি বিদ্যালয়েই শহীদ মিনার থাকা দরকার।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. নুরুচ্ছোফা বলেন, বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নির্মাণ একান্ত প্রয়োজন। উপজেলার সেসব বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নেই, সেগুলোতে নির্মাণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ পেলে উপজেলার সব বিদ্যালয়ে পর্যায়ক্রমে শহীদ মিনার নির্মাণ করা হবে।