সুইডেনে পবিত্র কোরআন অবমাননার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশে করেছে ধর্মভিত্তিক দলগুলো।
আজ (শুক্রবার) জুমার নামাজের পর এই বিক্ষোভ করে দলগুলো।
জুমার নামাজের পর বায়তুল মোকাররম থেকে প্রথমে বিক্ষোভ মিছিল বের করে খেলাফত মজলিস। দলটির পক্ষ থেকে সুইডেনের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করার দাবি জানানো হয়।
এরপরেই বিক্ষোভ মিছিল বের করে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম ঢাকা মহানগর। বিক্ষোভ মিছিল থেকে সংসদে সুইডেনের পক্ষে নিন্দা প্রস্তাব আনার দাবি জানানো হয়।
এদিকে কোরআন অবমাননার প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশও। জুমার নামাজ শেষে বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তর গেটের সিঁড়িতে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ শেষ করে দুপুর ২টা ৩৫ মিনিটে বিক্ষোভ মিছিল বের করে তারা।
বিক্ষোভ মিছিলটি বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তর গেট থেকে বের হয়ে, পল্টন মোড় অতিক্রম করে বিজয়নগরের দিকে যায়। মিছিলে বিভিন্ন ধরনের ব্যানার, ফেস্টুন নিয়ে অংশ নেন শত শত মুসল্লিসহ সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
সুইডেনে কোরআন পোড়ানো হয়নি, মুসলমানদের হৃদয় পোড়ানো হয়েছে
মিছিলের আগে সমাবেশে বক্তারা বলেন, কোরআনের অবমাননা যারা করে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। সুইডেনে কোরআন পোড়ানো হয়নি, বিশ্বের মুসলমানদের হৃদয় পোড়ানো হয়েছে। এই ঘটনায় গোটা বিশ্বের মুসলমানদের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছে। আমরা এটা কোনভাবেই মেনে নিতে পারছি না।
বক্তারা আরও বলেন, কোরআনের অবমাননা কোনো মুসলমানদের পক্ষে মেনে নেওয়া সম্ভব না। তাই আমরা এর প্রতিবাদে রাজপথে নেমে এসেছি। সুইডেনে এর আগেও এমন নিন্দনীয় অপরাধের ঘটনা ঘটেছে। কেন এমন ঘটনা বারবার ঘটছে তা বের করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া দাবি জানাচ্ছি আমরা।
ধর্মভিত্তিক দলগুলোর বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে বায়তুল মোকাররমের আশপাশের এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়।
যা হয়েছিল সুইডেনে
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গত ২৮ জুন সুইডেনের রাজধানী স্টকহোমের কেন্দ্রীয় মসজিদের বাইরে দুই ব্যক্তি আগে থেকে ঘোষণা দিয়ে পবিত্র কোরআনের একটি কপিতে আগুন ধরিয়ে দেয়। তাদের এই ন্যক্কারজনক কাজ করার অনুমতি দেয় একটি সুইডিশ আদালত। কোরআন অবমাননা করার জন্য ওই ইসলাম বিদ্বেষী ব্যক্তিরা পবিত্র ঈদুল আজহার দিনটিকে বেছে নেয়।
বাকস্বাধীনতা সুরক্ষার কথা বলে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে এই ধরনের কাজ করার অনুমতি দিয়েছিল সুইডিশ পুলিশ।
এ ঘটনায় নিন্দার ঝড় উঠলে পরে অবশ্য পবিত্র কোরআন পোড়ানোর নিন্দা জানায় সুইডেন সরকার।
সুইডেনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলে, সুইডেনের সরকার পুরোপুরি বোঝে যে, সুইডেনে বিক্ষোভের নামে কিছু ব্যক্তির সংঘটিত ইসলামফোবিক কর্মকাণ্ড মুসলমানদের জন্য আক্রমণাত্মক হতে পারে। আমরা এই কর্মকাণ্ডের তীব্র নিন্দা করি এবং এসব কাজ কোনোভাবেই সুইডিশ সরকারের দৃষ্টিভঙ্গি প্রতিফলিত করে না।
এ ঘটনার পর ঢাকার সুইডেন দূতাবাসের চার্জ ডি অ্যাফেয়ার্সকে তলব করে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।