আদালত প্রাঙ্গনে সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধে ১৮ বছর আগের রায় কঠোরভাবে মানার নির্দেশ দিয়েছেন সর্বোচ্চ আদালত। বুধবার (৩০ আগস্ট) বিএনপির ৭ আইনজীবী নেতার বিরুদ্ধে করা আদালত অবমাননা আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ।
এ আদেশের পর অ্যার্টনি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন তার কার্যালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, আজ থেকে দেশের সব আদালতে সভা-সমাবেশ, জমায়েত করলে তা অবমাননার দায়ে অভিযুক্ত হতে হবে। কোনো আদালতে রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করলে তা অবমাননা হবে। মিছিল করলে এজলাশে দাঁড়াতে পারবেন না সেই আইনজীবী।
সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে সভা-সমাবেশ করা বিএনপির আইনজীবীদের নিত্যদিনের ঘটনা। এতে কম যান না সরকার সমর্থক আইনজীবীরাও। কখনো কখনো এসব কর্মসূচি সংঘর্ষে রূপ নিচ্ছে। কয়েকদফা ভাঙচর করা হয়েছে আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও সম্পাদকের কক্ষও। গত ২৮ আগস্ট বিএনপি নেতা তারেক রহমানের বক্তব্য প্রচার বন্ধে ইস্যুতে করা মামলার শুনানিতেও হয়েছে হট্টগোল। ঘটেছে বিচারপতির উদ্দেশ্য ফাইল ছুঁড়ে মারার ঘটনাও।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী নাহিদ সুলতানা যুথি জানান, দুই বিচারপতির পদত্যাগ দাবিতে বিএনপির আইনজীবীদের দেয়া বক্তব্যকে আদালত অবমাননাকর বলে মনে করেন আওয়ামী লীগের আইনজীবীরা। এ সংক্রান্ত আবেদনের শুনানি হয় প্রধান বিচারপতির আদালতে। এসময় আদালত প্রাঙ্গনে সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করে দেয়া আগের রায় কঠোরভাবে মেনে চলার আদেশ দেন সর্বোচ্চ আদালত।
গত ১৫ আগস্ট শোক দিবসের আলোচনা সভায় সংবিধান অনুসারে বিচারপতিরা শপথবদ্ধ রাজনীতিবিদ উল্লেখ করে বক্তব্য দেয়ায় আপিল বিভাগের দুজন বিচারপতির বিরুদ্ধে একাধিকবার সংবাদ সম্মেলন করে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম। এছাড়া ওই দুজন বিচারপতিকে বিচারকাজ থেকে বিরত রাখতে কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে। এ নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট অঙ্গনে বিএনপিপন্থি আইনজীবী নেতারা মিছিল-সমাবেশও করেছেন।
গত ১৫ আগস্ট শোক দিবসের আলোচনা সভায় ‘বিচারপতি শপথবদ্ধ রাজনীতিবিদ’ উল্লেখ করে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম বলেছিলেন, এ সংবিধান হলো আমাদের সর্বোচ্চ রাজনৈতিক দলিল। বঙ্গবন্ধুর যে রাষ্ট্র-দর্শন, রাজনৈতিক দর্শন, সামাজিক দর্শন—সব দর্শনের প্রতিফলন ঘটেছে এ সংবিধানে।