সুষ্ঠু নির্বাচন করতে না পারলে পদত্যাগ : ইসি আলমগীর

দৈনিকশিক্ষা প্রতিবেদক |

নির্বাচন সুষ্ঠু করতে না পারলে আগাম পদত্যাগের ঘোষণা দিয়ে রেখেছেন নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর। তিনি বলেন, নির্বাচন অবশ্যই সুষ্ঠু হবে আমরা গ্যারিন্টি দিচ্ছি। আমরা যতক্ষণ আছি এই চেয়ারে সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য কাজ করে যাবো। বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) দুপুরে আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন।  

যদি সুষ্ঠু নির্বাচন না হয়, কম্প্রোমাইজ করতে হয়। তখন কী করবেন? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তখন আমাদের এই চেয়ারে দেখবেন না। আমরা যে কাজের জন্য শপথ করেছি, সেটা যদি না-ই করতে পারি তাহলে এই চেয়ারে থাকবো কেন? 

এটি আপনার একার মতামত কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের কমিশনে যারা আছি সকলের মনোভাব এরকমই। আমরা সুষ্ঠু নির্বাচন করতে পারবো না এটা বিশ্বাস করি না। আপনারা যদি হাইপোথিটিক্যালি বলেন যে, এটা সম্ভব না। তখন আমরা সে দায়িত্ব পালন করবো না।

প্রয়োজনে পদত্যাগ করে ফেলবেন? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দায়িত্ব থেকে সরে যাবো। তাহলে কি সমাধান হবে? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সেটি তারা দেখবেন।
 
কম্প্রোমাইজ করবেন না? জানতে চাইলে তিনি বলেন, না, কম্প্রোমাইজ করবো না। কোনো কম্প্রোমাইজ হবে না। সুষ্ঠু নির্বাচন হবে। 

দলীয় সরকারের অধীনে ভোট সুষ্ঠু হবে না, এই ধারণা ভাঙার দায়িত্ব কার-এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটা ভাঙার দায়িত্ব রাজনীতিবিদদের। এখানে নির্বাচন কমিশনের কিছু করার নেই। এটা রাজনৈতিক সমস্যা। রাজনৈতিক সমস্যা, রাজনৈতিকভাবে সমাধান করতে হবে। এ বিষয়টাতে আমাদের কিছু করার নেই। সংবিধানও সে দায়িত্ব আমাদের দেয়নি।

তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব হচ্ছে ভোট সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করা। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে থেকেই লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড থাকা। নির্বাচনে যারা অংশ নেবেন তারা স্বাধীনভাবে প্রচার করতে পারেন, ভোটাররা যাতে ভোটকেন্দ্রে এসে তাদের ইচ্ছেমত পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারেন, ভোট গণনা যাতে সুষ্ঠুভাবে হয়, নির্বাচনের ফলাফল যাতে সঠিকভাবে প্রতিফলিত হয় ভোটারদের ইচ্ছার, সেটা আমাদের দায়িত্ব। আমরা সে দায়িত্ব পালনের প্রতি আমাদের শতভাগ অঙ্গীকার রয়েছে। আমরা সেটা করবো। আমরা শুধু এটুকু বলতে পারি, যে ধরনের সরকারই থাকুক না কেন। বর্তমান ইসি শততাগ সৎ, নিরপেক্ষ নির্বাচন করবে বলেন তিনি।

এটা তো বিরোধীপক্ষ মূল্যায়ন করছে না- এই বিষয়ে তিনি বলেন, তারা কেন করছেন না তারাই ভালো বলতে পারবেন। তবে আমাদের এক বছরে কার্যক্রম দেখে তারা কি বলতে পারবে আমরা নিরপেক্ষতা ভঙ্গ করেছি। অথবা দুই প্রার্থীর প্রতি আচরণ দুই রকম হয়েছে।

দলীয় সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ ভোট করা সম্ভব? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কমিশন চাইলে সেটা সম্ভব। পৃথিবীর সব দেশেই প্রায় দলীয় সরকারের অধীনেই নির্বাচন হয়। এটা নির্ভর করে নির্বাচন কমিশন কতটা সঠিকভাবে তাদের দায়িত্ব পালন করে। আমরা যদি আমাদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করি এবং সেটা আমাদের ইচ্ছা আছে, অবশ্যই একটা সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব।

অতীতে কেন পারেনি সেটা অতীতের কমিশন বলতে পারবে। আগের কমিশন আর বর্তমান কমিশনের লোক হচ্ছে ভিন্ন। তাদের আচরণের সঙ্গে এদের আচরণ মিলবে না বলেও জানান তিনি।

সংকট দূর করার জন্য সংলাপের দায়িত্ব কে নেবে? এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সংবিধান কি সেই দায়িত্ব আমাদের দিয়েছে? আমাদের বিভিন্ন অংশীজন, সুশীল সমাজের মতামত নেওয়ার ক্ষমতা তো দেওয়া আছে। এখন আর হচ্ছে না। হয়তো পরবর্তীতে হতে পারে। সকল রাজনৈতিক দলের সঙ্গে হতে পারে। আবার কোনো কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে হতে পারে। অর্থাৎ যাদের সহযোগিতা প্রয়োজন বলে আমরা মনে করি অথবা প্রয়োজন সুষ্ঠু, সুন্দর নির্বাচনেন জন্য, তাদের সঙ্গে তো আমরা নির্বাচনের আগে হয়তো আবারও হতে পারে। সেটা তো থাকতে পারে। এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। এটা তো সব সময় আছে, যে নির্বাচন কমিশন যে কোনো সময় যে কোনো দলের সঙ্গে বসে বা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সিদ্ধান্ত নিতে পারি।

প্রশাসন নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারবেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, গাইবান্ধা উপ-নির্বাচন তারা বড় উদাহরণ। প্রশাসন যারা কাজ করেছিলেন, যাদের গাফিলতি পাওয়া গেছে বা যারা অন্যায় কাজের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তাদের সবার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আমরা চিঠি দিয়েছি এবং সেটা মনিটরিং করেছি। কতজনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে ইত্যাদি আমরা দু'এক সপ্তাহ পরপরই মরিটর করছি। প্রার্থীর সংশ্লিষ্টতা তো আমরা বলতে পারি না। যারা জড়িত ছিল তারা প্রার্থীর কথা বলে নাই। তারা কেন বললো না সেটাই তো রহস্য। তাদের বারবার প্রশ্ন করা হয়েছে, তদন্ত কর্মকর্তারা বারবার প্রশ্ন করেছেন এমন কাজ করলেন কেন, তারা বলেছেন, আমরা স্বেচ্ছায় করেছি। এখন তারা যদি বলেন, স্বেচ্ছায় করেছি। তারা যদি কারো নাম বলতো আমরা ব্যবস্থা নিতে পারতাম।

এখানে তো অনুমান, আন্দাজ ভিত্তিক কোনো অ্যাকশন নেওয়া যায় না। যে কোনো প্রশাসনিক, বিচারিক বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে হলে আপনাকে যা তদন্তে প্রমাণিত হবে তার ভিত্তিতে ব্যবস্থা নিতে হবে যোগ করেন তিনি।
  


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শিক্ষক লাঞ্ছিত ও পদত্যাগে বাধ্য করার প্রতিবাদ, কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি বিটিএর - dainik shiksha শিক্ষক লাঞ্ছিত ও পদত্যাগে বাধ্য করার প্রতিবাদ, কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি বিটিএর মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণের দাবি - dainik shiksha মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণের দাবি আন্দোলনে অসুস্থ ১১ নার্সিং শিক্ষার্থী - dainik shiksha আন্দোলনে অসুস্থ ১১ নার্সিং শিক্ষার্থী প্রধান শিক্ষককে জোর করে পদত্যাগপত্রে সই - dainik shiksha প্রধান শিক্ষককে জোর করে পদত্যাগপত্রে সই জলবায়ু পরিবর্তন মারাত্মক প্রভাব ফেলছে শিক্ষা খাতে - dainik shiksha জলবায়ু পরিবর্তন মারাত্মক প্রভাব ফেলছে শিক্ষা খাতে বয়স ৩৫ করার দাবিতে শাহবাগে চাকরি প্রত্যাশীদের মহাসমাবেশ - dainik shiksha বয়স ৩৫ করার দাবিতে শাহবাগে চাকরি প্রত্যাশীদের মহাসমাবেশ এমপিওভুক্তি: দীপু মনির ভাই টিপুচক্রের শতকোটি টাকার বাণিজ্য - dainik shiksha এমপিওভুক্তি: দীপু মনির ভাই টিপুচক্রের শতকোটি টাকার বাণিজ্য অধ্যক্ষকে পদত্যাগে বাধ্য, আওয়ামী লীগ নেতাকে স্থলাভিষিক্ত করার চেষ্টা - dainik shiksha অধ্যক্ষকে পদত্যাগে বাধ্য, আওয়ামী লীগ নেতাকে স্থলাভিষিক্ত করার চেষ্টা ভুয়া নিয়োগে এমপিও: এক মাদরাসার ১৫ শিক্ষকের সনদ যাচাই করবে অধিদপ্তর - dainik shiksha ভুয়া নিয়োগে এমপিও: এক মাদরাসার ১৫ শিক্ষকের সনদ যাচাই করবে অধিদপ্তর বার্ষিক পরীক্ষার উদ্দীপকসহ ও উদ্দীপক ছাড়া প্রশ্ন - dainik shiksha বার্ষিক পরীক্ষার উদ্দীপকসহ ও উদ্দীপক ছাড়া প্রশ্ন একসঙ্গে তিন প্রতিষ্ঠান থেকে বেতন তুলতেন মাদরাসা কর্মচারী - dainik shiksha একসঙ্গে তিন প্রতিষ্ঠান থেকে বেতন তুলতেন মাদরাসা কর্মচারী কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0027909278869629