সেন্ট্রাল অ্যাডমিশন টেস্ট

দৈনিকশিক্ষা ডেস্ক |

স্বয়ং রাষ্ট্রপতি বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে কেন্দ্রীয়ভাবে সমন্বিত বা গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণের ওপর গুরুত্ব দিয়াছেন বারবার। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিরা তাহার সঙ্গে সাক্ষাত্ করিতে গেলে তিনি এই ব্যাপারে তাহাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। কিন্তু দুঃখজনক হইলেও সত্য যে, সেই সময় অনেকেই বিষয়টি উপেক্ষা করিয়াছেন। অবশেষে দেশের লক্ষ লক্ষ শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের দুর্ভোগ ও দুঃসময়ের অবসান ঘটিতে যাইতেছে। আশার কথা, চলতি শিক্ষাবর্ষ হইতেই দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে একযোগে অভিন্ন প্রশ্নে কেন্দ্রীয় ভর্তি পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নিয়াছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন বা ইউজিসি। এই পরীক্ষার নাম হইবে ‘পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়সমূহে কেন্দ্রীয় ভর্তি পরীক্ষা’। ইংরেজিতে সংক্ষেপে ইহার নাম হইবে সিএটি বা ক্যাট (সেন্ট্রাল অ্যাডমিশন টেস্ট)। ভর্তি পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বর এবং এসএসসি ও এইচএসসির প্রাপ্ত নম্বর যোগ করিয়া যে মেধাতালিকা তৈরি করা হইবে, তাহার ভিত্তিতে চাহিদা অনুযায়ী বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় অনলাইনের মাধ্যমে শিক্ষার্থী ভর্তি করিবে। ইহাতে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের দেশের বিভিন্ন প্রান্তে অবস্থিত বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে আর দৌড়াদৌড়ি ও ছুটাছুটি করিতে হইবে না। তাহাদের অর্থ, সময় ও পরিশ্রমের সাশ্রয় হইবে। শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) ইত্তেফাক পত্রিকায় প্রকাশিত এক সম্পাদকীয়তে এ তথ্য জানা যায়।

সম্পাদকীয়তে আরও জানা যায়, গত বুধবার ইউজিসি চেয়ারম্যানের সঙ্গে বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিদের যে বৈঠক হয়, তাহা একটি যুগান্তকারী ঘটনা নিঃসন্দেহে। ইহার আগে যেই সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিরা এই ব্যাপারে বিরোধিতা করিয়াছিলেন, এইবার তাহাদের কিছুটা নমনীয় বলিয়া মনে হইয়াছে। বিশেষ করিয়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বুয়েট, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিগণ তাহাদের একাডেমিক কাউন্সিলের সভার পরই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাইবেন বলিয়া জানানো হইয়াছে। আমরা আশা করি, তাহারা লক্ষ লক্ষ শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের দুর্ভোগ-দুশ্চিন্তার কথা বিবেচনা করিয়া এই ব্যাপারে ইতিবাচক সিদ্ধান্তই গ্রহণ করিবেন। আসলে এই ধরনের পরীক্ষার বিষয়টি নূতন নহে। ভারতে এই পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা চালু রহিয়াছে। আমাদের দেশে গত কয়েক বত্সর ধরিয়া বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি পরীক্ষা এই পদ্ধতিতে সফলভাবে অনুষ্ঠিত হইয়া আসিতেছে। শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় একসময় অভিন্ন পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণ করিবার ঘোষণা দিলেও স্বার্থান্বেষী মহলের বাধায় তাহা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয় নাই। ২০০৮ সাল হইতেই এই ধরনের উদ্যোগের কথা আমরা শুনিয়া আসিতেছি। ২০০৯ সালে মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসিবার পর আরেক দফা বৈঠক হয়। নানা অজুহাতে ও বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বায়ত্তশাসন খর্ব হওয়ার আশঙ্কায় অনেকে ইহার বিরোধিতা করেন। তবে ২০১৩ সালে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত ভিসিদের সভায় অধিকাংশই নীতিগতভাবে ইহাকে সমর্থন করেন।

এবার ইউজিসির তত্ত্বাবধানে যখন এই বিষয়টি গতিশীল হইয়াছে, তখন আমরা খুবই আশাবাদী। আমাদের প্রত্যাশা, এবার আর কোনো টালবাহানায় কাজ হইবে না। তবে প্রশ্নপত্র প্রণয়নে গোপনীয়তা রক্ষা, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাতন্ত্র্য ও স্বকীয়তা যথাসম্ভব রক্ষা, মাইগ্রেশন পদ্ধতি ইত্যাদির ব্যাপারে সুস্পষ্ট নীতিমালা থাকা দরকার। আগামী মার্চ মাসের প্রথম সপ্তাহ হইতে পুরাদমে ইহার কার্যক্রম শুরু হইবে বলিয়া জানা যায়। আমরা এই উদ্যোগের সাফল্য কামনা করি।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
দেড় মাস পর ক্লাসে ফিরছেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা, স্থগিত পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা - dainik shiksha দেড় মাস পর ক্লাসে ফিরছেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা, স্থগিত পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলের সংখ্যা বাড়াতে চায় সরকার - dainik shiksha অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলের সংখ্যা বাড়াতে চায় সরকার চাকরির বয়স নিয়ে শিক্ষামন্ত্রীর চিঠির পর সমাবেশের ডাক দিলো ৩৫ প্রত্যাশীরা - dainik shiksha চাকরির বয়স নিয়ে শিক্ষামন্ত্রীর চিঠির পর সমাবেশের ডাক দিলো ৩৫ প্রত্যাশীরা স্কুলে গ্রীষ্মের ছুটি কি এপ্রিলে এগিয়ে আনা দরকার? - dainik shiksha স্কুলে গ্রীষ্মের ছুটি কি এপ্রিলে এগিয়ে আনা দরকার? কলেজের শিক্ষকদের ডিজিটাল বদলির আবেদন শুরু রোববার - dainik shiksha কলেজের শিক্ষকদের ডিজিটাল বদলির আবেদন শুরু রোববার বুটেক্সের প্রথম সমাবর্তন ৭ সেপ্টেম্বর - dainik shiksha বুটেক্সের প্রথম সমাবর্তন ৭ সেপ্টেম্বর শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি: শিক্ষা মন্ত্রণালয় - dainik shiksha শুক্রবার স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত হয়নি: শিক্ষা মন্ত্রণালয় দুর্যোগে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছুটিতে বিশেষ কমিটি গঠনে নীতিমালা হবে: শিক্ষামন্ত্রী - dainik shiksha দুর্যোগে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছুটিতে বিশেষ কমিটি গঠনে নীতিমালা হবে: শিক্ষামন্ত্রী দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.002500057220459