১৩ বছর বয়সী স্কুলছাত্রী মীমের বিয়ে! সে টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার একটি স্কুলের ৮ম শ্রেণির ছাত্রী। বর ৩৩ বছর বয়সী স্কুলশিক্ষক দেলোয়ার হোসেন! কিন্তু ছাত্রীর বাবার ইচ্ছায় আয়োজিত বিয়েতে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছেন মা। জোরপূর্বক মেয়ের বাল্যবিবাহ বন্ধে আজ মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত আবেদন করেছেন ছাত্রীর মা রুমা বেগম। অভিযোগের প্রেক্ষিতে ১৩ বছর বয়সী স্কুলছাত্রী মীমের বিয়ে বন্ধ করেছেন ইউএনও মুহাম্মদ কামরুল ইসলাম।
১৩ বছরের স্কুলছাত্রীকে বিয়ে করতে চাওয়া ৩৩ বছর বয়সী দেলোয়ার হোসেন ঘাটাইল উপজেলার দেওপাড়া গণ উচ্চ বিদ্যালয়ের ইংরেজি বিষয়ের সহকারী শিক্ষক।
জানা গেছে, ঘাটাইল উপজেলার মাইধারচালা গ্রামের মজনু মণ্ডলের মেয়ে মারুফা আফরিন মীম। এ বছর মাইধারচালা গণ উচ্চ বিদ্যালয়ের জেএসসি পরীক্ষার্থী সে। মীমের অমতে জোর করে তার বাবা স্কুল শিক্ষক মো. দেলোয়ার হোসেনের সাথে বিয়ে ঠিক করেন। মঙ্গলবার তাদের বিয়ে হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কনের মায়ের অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিয়ে বন্ধ করে দিয়েছেন ইউএনও মুহাম্মদ কামরুল ইসলাম।
স্কুলছাত্রীর মা রুমা বেগম দৈনিক শিক্ষা ডটকমকে জানান, বিয়েতে মেয়েসহ কারোই মত নেই। মেয়ের বাবা জোর করে এ বিয়ে ঠিক করেছেন। যেহেতু মেয়ের বিয়ের বয়স হয় নাই তাই বাল্যবিবাহ বন্ধে আমি এ অভিযোগ করেছি। বিয়ে ঠিক হওয়ার পর থেকেই মেয়ে কান্না শুরু করছে। সে এখন বিয়ে না করে পড়ালেখা করবে বলে জানায়।
এ বিষয়ে কথা বলার জন্য শিক্ষক দেলোয়ার হোসেনের সাথে দৈনিকশিক্ষা ডটকমের পক্ষ থেকে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার ব্যবহৃত ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। পরে তার কর্মস্থল স্কুলে যোগাযোগ করা হলে প্রধান শিক্ষক মো. সেলিম মিয়া দৈনিকশিক্ষা ডটকমকে জানান, সে আজ ছুটিতে আছে।
এ বিষয়ে মাইধারচালা গণ উচ্চ বিদ্যালয়েল প্রধান শিক্ষক শহীদুজ্জামান তালুকদার দৈনিকশিক্ষা ডটকমকে বলেন, মীম এ বছর স্কুল থেকে জেএসসি পরীক্ষা দিবে। এরই মধ্যে সে পরীক্ষার ফরম পূরণও করেছে। সে একজন মেধাবী ছাত্রী। বাল্যবিবাহের কুফল নিয়ে অনেক আলোচনা করা হলেও অভিভাবকরা বুঝতে চায়না। গোপনে মেয়েকে বিয়ে দিয়ে দেয়। প্রতি বছর স্কুলে ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে ৫০ জনের মতো ছাত্রী ভর্তি হলেও দশম শ্রেণি পর্যন্ত যেতে ৪০জন নাই হয়ে যায়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ কামরুল ইসলাম দৈনিকশিক্ষা ডটকমকে বলেন, এটি একটি বাল্য বিয়ে। তাই অভিযোগ পেয়ে মেয়ের বাবা ও ছেলের বাবার সাথে কথা বলে বিয়ে বন্ধ করে দিয়েছি।