সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার বড়দল আফতাবউদ্দীন কলেজিয়েট স্কুলে ৬ টি পদে নিয়োগ দিতে কোটি টাকা ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ উঠেছে। ঘুষের বিনিময়ে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগ বন্ধের জন্য আদালতে মামলা করা হলেও তা তোয়াক্কা করছে না প্রতিষ্ঠানটির পরিচালনা পরিষদের সভাপতি ও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ। আগামী ১৫ জুন গোপনে সাতক্ষীরা সরকারি কলেজে নিয়োগ বোর্ড করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এদিকে ঘুষের বিনিময়ে পাতানো নিয়োগ দেয়া হচ্ছে অভিযোগ তুলে তা বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে অভিভাবক ও পরিচালনা পরিষদের সদস্যরা।
সোমবার দুপুরে বড়দল আফতাবউদ্দিন কলেজিয়েট স্কুলের প্রধান ফটকের সামনে রাস্তায় এ মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দল ওহাব, বড়দল ইউনিয়ন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আকের আলী, আওয়ামী লীগ নেতা শরিফুল ইসলাম, গাইন, বড়দল ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুজ্জামান মালিসহ অনেকে।
বক্তরা অভিযোগ করেন, ৩ জন ল্যাব সহকারী, ১ জন অফিস সহায়ক, ১ জন আয়া, ১ জন কারিগরির ল্যাব সহকারীসহ মোট ৬ টি পদে নিয়োগের জন্য ২০২২ খ্রিষ্টাব্দের ১৮ ডিসেম্বর স্থানীয় পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেয় প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ। ৬টি পদে ৪৫ জন চাকরিপ্রত্যাশী আবেদন করেন। স্থানীয় অবিভাবকদের অভিযোগ ৫ টি পদে নিয়োগের জন্য প্রার্থীদের কাছ থেকে ইতোমধ্যে ১০ লাখ টাকা থেকে ১৫ লাখ টাকা করে ঘুষ নেয়া হয়েছে।
কয়েকজন চাকরিপ্রত্যাশী অভিযোগ করেন, তাদেরও কাছে একেকটি পদে চাকরির জন্য ১০ লাখ থেকে ১৫ লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেন প্রতিষ্ঠানটির ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ। তবে চাহিদামত ঘুষ দিতে রাজি না হওয়ায় তাদের চাকরি হবে না বলে জানিয়ে দেয়া হয়েছে।
এদিকে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর ওই স্কুলে চাকরির জন্য ঘুষ নেয়া হচ্ছে খবর এলাকার সাধারণ মানুষের মধ্যেও ছড়িয়ে পড়ে। ঘুষের মাধ্যমে চাকরি দেয়া হচ্ছে অভিযোগ তুলে শফিকুল ইসলাম নামের একজন অভিভাবক সম্প্রতি সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত আবেদন করে নিয়োগ বন্ধের দাবি জানান। একইসঙ্গে স্বচ্ছ নিয়োগ বোর্ডে করার দাবি জানান। কিন্ত আবেদনের বিষয়ে কোনো সাড়া না পেয়ে গত ৩১ মে অভিভাবক ও বড়দল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা শফিকুল ইসলাম বাদি হয়ে সাতক্ষীরার আশাশুনি দেওয়ানী আদালতে এক মামলা দায়ের করে। মামলায় কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষসহ ১৪ জনকে বিবাদি করা হয়। মামলায় ২১ দিনের মধ্যে কেনো নিয়োগ বোর্ড স্থগিত করা হবে না তা জানতে চেয়েছে আদালত। স্থানীয় অভিভাবকদের অভিযোগ, আদালতের মামলার কোনো তোয়াক্কা না করে আগামী ১৫ জুন নিয়োগ বোর্ড করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কলেজ কর্তৃপক্ষ।
জানতে চাইলে বড়দল আফতাবউদ্দীন কলেজিয়েট স্কুলের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ বাবলুর রহমান দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, ৬ টি পদের জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেয়া হলেও কারিগরি বিভাগের ১ টা পদে বাদ রেখে ৫ টি পদে নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। আগামী ১৫ জুন সাতক্ষীরা সরকারি কলেজে এ নিয়োগ বোর্ড অনুষ্ঠিত হবে। ৫ টি পদের জন্য অনেকে আবেদন করলেও ৩২টির বৈধতা দেয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে বড়দল আফতাবউদ্দীন কলেজিয়েট স্কুলের পরিচালনা পরিচালনা পরিষদের সভাপতি ডা. মোখলেছুর রহমানের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে একজন নারী রিসিভ করে দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, স্যার (ডা.মোখলেছুর রহমন) এখন কথা বলতে পারবেন না।