স্কুলের জমি দখল করে ছয় দোকান

দৈনিক শিক্ষাডটকম, গোপালগঞ্জ |

গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলায় মাহমুদপুর ইউনিয়নের সাতাশিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জমি দখল করে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। প্রভাবশালী ছয়জন অবৈধভাবে দোকান তুলে বছরের পর বছর ধরে ব্যবসা করে আসছেন। কিন্তু তাদের উচ্ছেদে জোরালো উদ্যোগ নিচ্ছে না প্রশাসন।

বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলছে, ১০ বছর আগে দখলের কার্যক্রম শুরু হয়। স্থানীয় কয়েকজন প্রভাবশালী দোকানগুলো নির্মাণ করেছেন। সরিয়ে ফেলতে অনুরোধ করলেও শুনছেন না। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।

নিম্ন জলাভূমি ও বিল বেষ্টিত উপজেলায় মাহমুদপুর ইউনিয়নের সাতাশিয়া গ্রামটি ছিল পশ্চাৎপদ। অবহেলিত এ অঞ্চলের শিক্ষা বিস্তারে স্কুল কমিটির সভাপতি মাহফুজুর রহমানের দাদা, বাবা, চাচা ও ফুফাতো ভাইয়েরা মিলে ৫৭ শতাংশ জমি দান করেন। সেই জমিতেই ১৯৪৫ সালে সাতাশিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়। বর্তমানে এখানে ৩০০ শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছেন। ১০ বছর আগে শুরু হয় দখলের প্রক্রিয়া। বিদ্যালয়ের ৩ শতাংশ জমি দখল করে দোকানঘর নির্মাণ করেন ছয় দখলদার। তারা হলেন– স্থানীয় প্রভাবশালী রানজু কাজী, ইন্দা মোল্যা, জামসেদ কাজী, ইনামুল মোল্যা, টিটো মোল্যা ও শাহীন মোল্যা। বিদ্যালয়ের উত্তরপাশে প্রবেশমুখে রাস্তা ঘেঁষে দোকানঘর তুলেছেন তারা। সেখানে কেউ ব্যবসা করছেন, অনেকে ঘর তুলে ভাড়া দিয়েছেন। দোকান ঘিরে সারাক্ষণ লোকজনের আনাগোনা। শোরগোলে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া ব্যাহত হচ্ছে। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জমি ছেড়ে দিতে বারবার অনুরোধ করলেও কর্ণপাত করছেন না তারা। বাধ্য হয়ে তাদের উচ্ছেদের জন্য জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মো. মাহফুজুর রহমান।

সভাপতি মাহফুজুর রহমান জানান, দোকানগুলোতে গান-বাজনা চলে। এতে পাশে থাকা বিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। যারা দখল করে আছেন তাদের একাধিকবার নিষেধ করার পরও কোনো কাজ হয়নি। বাধ্য হয়ে প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসক ও ইউএনওকে জানিয়েছেন।

ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক অমিতোষ বিশ্বাস বলেন, ‘আমি এ স্কুলে যোগদানের আগেই ঘর তুলেছেন প্রভাবশালীরা। কাশিয়ানীর সাবেক ইউএনও সাব্বির আহমেদ ২০২০ সালে বিদ্যালয়ের জমি থেকে ঘর সরিয়ে নেওয়ার জন্য তাদের বলেছিলেন। তারা ঘর সরিয়ে নেবেন বলে প্রতিশ্রুতিও দেন। ইউএনও বদলি হয়ে চলে যাওয়ার পর কেউ ঘর সরিয়ে নেননি।

দখলদার টিটো মোল্যা বলেন, জমি ফাঁকা পড়ে ছিল, তাই ঘর তুলে ব্যবসা করছি। সাবেক ইউএনও জায়গা ছেড়ে দিতে বলেছিলেন। তিনি চলে যাওয়ার পর আর কেউ এ বিষয়ে কিছু বলেনি। তাই রয়ে গেছি।

একই কথা বলেন ইন্দা মোল্যা, জামসেদ কাজীসহ অন্য দখলদাররাও। তাদের ভাষ্য, জায়গাটি ব্যবহার হচ্ছে না, তাই ঘর করে ব্যবসা করছেন। সবাইকে উঠিয়ে দিলে তারাও উঠে যাবেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রাসেদুজ্জামান বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। বিদ্যালয়ের জমি থেকে দখলদারদের উচ্ছেদে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
মাদরাসা শিক্ষকরাও অষ্টম গ্রেড পাবেন - dainik shiksha মাদরাসা শিক্ষকরাও অষ্টম গ্রেড পাবেন নেড়ি কুকুরের ভাষণে শিক্ষা অধিদপ্তরের ডিজি নিয়োগ বিত্তান্ত - dainik shiksha নেড়ি কুকুরের ভাষণে শিক্ষা অধিদপ্তরের ডিজি নিয়োগ বিত্তান্ত বাংলাদেশের পাঠ্যবই ভারতে ছাপাতেই হবে কেনো? - dainik shiksha বাংলাদেশের পাঠ্যবই ভারতে ছাপাতেই হবে কেনো? অধ্যক্ষ জুবাইদা রাজশাহী শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান হচ্ছেন! - dainik shiksha অধ্যক্ষ জুবাইদা রাজশাহী শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান হচ্ছেন! ম্যাজিস্ট্রেসি পাওয়ার : সেনাবাহিনী যা যা করতে পারবে - dainik shiksha ম্যাজিস্ট্রেসি পাওয়ার : সেনাবাহিনী যা যা করতে পারবে তিন ক্যাটাগরির গুণী শিক্ষক বাছাইয়ে নাম পাঠানোর আহ্বান - dainik shiksha তিন ক্যাটাগরির গুণী শিক্ষক বাছাইয়ে নাম পাঠানোর আহ্বান মাদকের গডফাদারদের ধরার নির্দেশ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার - dainik shiksha মাদকের গডফাদারদের ধরার নির্দেশ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার শিক্ষা প্রশাসনে বদলি আতঙ্কে নাহিদ-দীপু সিন্ডিকেটের ৯২ কর্মকর্তা - dainik shiksha শিক্ষা প্রশাসনে বদলি আতঙ্কে নাহিদ-দীপু সিন্ডিকেটের ৯২ কর্মকর্তা দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0025689601898193