স্কুলের জমি দখল করে বাড়ি নির্মাণ

নীলফামারী প্রতিনিধি |

ডিমলা উপজেলার দক্ষিণ সোনাখুলি চর কুটিপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টির পাকা ভবন নির্মাণের জন্য সম্প্রতি স্কুলটির জমি ও মাটি পরীক্ষা করেছে শিক্ষা প্রকৌশল বিভাগ। এখন ভবন নির্মাণের বরাদ্দ ও টেন্ডার কার্যক্রমের জন্য প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। এ অবস্থায় আবু রায়হান নামে স্থানীয় এক ব্যক্তি স্কুলের ৩৪ শতক জমির মধ্যে ১২ শতক জমির মালিকানা দাবি করে রাতারাতি স্কুলমাঠে গড়ে তুলেছেন বাড়ি ও গোয়ালঘর। শিক্ষকরা খবর পেয়ে বাধা দিতে গেলে তাদের দেয়া হয় হুমকি। ঘটনাটি রীতিমতো তোলপাড় সৃষ্টি করেছে এলাকায়। এ ঘটনায় প্রশাসনের পক্ষে জমির প্রকৃত কাগজপত্র যাচাই-বাছাই ও সীমানা নির্ধারণের পর আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।

গত বৃহস্পতিবার সরেজমিনে গেলে জানা যায়, দক্ষিণ সোনাখুলি চর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ২০০৫ খ্রিষ্টাব্দে। বিদ্যালয়টি জাতীয়করণ হয় ২০১৪ খ্রিষ্টাব্দে। বর্তমানে এ বিদ্যালয়ে চারজন শিক্ষক ও ২২০ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। ২০০৭ খ্রিষ্টাব্দে বিদ্যালয়ের নামে ৩৪ শতাংশ জমি দান করেছিলেন স্থানীয় বাসিন্দা তায়েজ উদ্দিন ও ফয়েজ উদ্দিন নামে দুই ভাই। তায়েজ উদ্দিন ও ফয়েজ উদ্দিনের দানকৃত ১২ শতক জমি নিয়ে তৈরি হয়েছে জটিলতা। ১২ শতাংশ জমির মালিকানা দাবি করে স্কুলের মাঠজুড়ে বসতবাড়ি ও গোয়ালঘর স্থাপন করেন স্থানীয় বাসিন্দা আবু রায়হান। রায়হানের দাবি ওই জমি তিনি ক্রয় করেছেন জমিদাতার স্বজনদের কাছ থেকে।

আবু রায়হান বলেন, তিনি বৈধ জমিতেই বাড়ি করেছেন। এতে স্কুলের ক্ষতি হলো না লাভ হলো, এটা দেখার বিষয় নয়। আমি তো স্কুলের জমি দখল করিনি। জমির অংশীদারদের থেকে কাগজমূলে কিনে নিয়েছি। জমিদাতা তায়েজ উদ্দিন বলেন, আমরা চার ভাই। পৈতৃক সূত্রে পাওয়া ছয় একর ৬৪ শতাংশ জমির মধ্যে ৩৪ শতক জমি আমরা দুই ভাই স্কুলের জন্য দান করেছি। সমপরিমাণ জমি অন্যত্র ভোগদখল করছেন অপর ভাই ময়েজ উদ্দিন। কিন্তু তার মৃত্যুর পর তার সন্তানরা জোরপূর্বক মালিকানা দাবি করে স্কুলের ১২ শতক জমি বিক্রি করেছেন বলে শুনছি। জমিদাতার স্বজন আব্দুল কুদ্দুস বলেন, পৈতৃক সূত্রে ও রেকর্ডমূলে ওই জমির দাগে আমরা ১২ শতক জমির মালিক। আমাদের অংশ আমরা বিক্রি করে দিয়েছি।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবু তাহের বলেন, বর্তমানে পাঠদানের জন্য দুটি টিনশেড ঘর আমাদের নিয়ন্ত্রণে থাকলেও স্কুলের শহিদ মিনারসহ পুরো মাঠ দখল করে বসতবাড়ি করেছেন আবু রায়হান। তিনি আরও বলেন, অনেক চেষ্টা-তদবিরের পর বিদ্যালয়ের একটি পাকা ভবন নির্মাণের জন্য সম্প্রতি স্কুল মাঠের মাটি পরীক্ষা করেছে শিক্ষা প্রকৌশল বিভাগ। কিন্তু মাঠ দখল করে অবৈধ স্থাপনা করায় বন্ধ হয়ে যেতে পারে ভবনের বরাদ্দ। উপজেলা

প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নূর মোহাম্মদ বলেন, স্কুলের মাঠ বিক্রি করেছে জমিদাতার স্বজনরা। ঘটনাটি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
চলতি মাসে টানা ৪ দিনের ছুটি মিলবে যেভাবে - dainik shiksha চলতি মাসে টানা ৪ দিনের ছুটি মিলবে যেভাবে সিইসিসহ পাঁচ কমিশনারের পদত্যাগ - dainik shiksha সিইসিসহ পাঁচ কমিশনারের পদত্যাগ রাষ্ট্রপতি যেকোনো সময় পদত্যাগ করতে পারেন - dainik shiksha রাষ্ট্রপতি যেকোনো সময় পদত্যাগ করতে পারেন বাতিল কারিকুলামে শিক্ষার্থীরা আরও একবছর ভুগবেন কেন? - dainik shiksha বাতিল কারিকুলামে শিক্ষার্থীরা আরও একবছর ভুগবেন কেন? ডিআইএতে টাকার খেলা, অভিযুক্তরাই স্কুল অডিটে - dainik shiksha ডিআইএতে টাকার খেলা, অভিযুক্তরাই স্কুল অডিটে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই নতুন অ্যাডহক কমিটি হবে - dainik shiksha সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই নতুন অ্যাডহক কমিটি হবে প্রাথমিকে স্বতন্ত্র ক্যাডার সার্ভিস চালুর দাবি - dainik shiksha প্রাথমিকে স্বতন্ত্র ক্যাডার সার্ভিস চালুর দাবি দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0024960041046143