স্কুলের পরিত্যক্ত ভবন গোপনে বিক্রি

শেরপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি |

বগুড়ার শেরপুরে টুনিপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পরিত্যক্ত ভবন ও মালামাল মাত্র ২৬ হাজার টাকায় বিক্রি করে দেয়ার ঘটনা ঘটেছে। নিয়ম ভেঙে প্রচার-প্রচারণা ছাড়াই গোপনে নামমাত্র মূল্যে ভবনটি কিনে নেন স্থানীয় এক প্রভাবশালী ব্যক্তি। পরে তিনি ওই ভবন ও মালামাল অন্য আরেকজনের কাছে দেড় লাখ টাকায় বিক্রি করেন। এ নিয়ে এলাকাবাসীর মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, নিয়ম অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট এলাকায় ঢোল বাজিয়ে কিংবা মাইকযোগে প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে নিলামের কথা থাকলেও এক্ষেত্রে তা মানা হয়নি। এমনকি গণমাধ্যমে কোন বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়নি। ঈদ পরবর্তী ছুটি ও ব্যস্ততাকে কাজে লাগিয়ে কাগজ-কলমে নিলাম দেখিয়ে গোপনে বিদ্যালয় ভবন বিক্রির কাজটি করা হয়। তবে লক্ষাধিক টাকার ভবন এত কম দামে কেন বিক্রি করা হলো সে বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান তারা।

জানা গেছে, ১৯৩১ খ্রিষ্টাব্দে উপজেলার টুনিপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি স্থাপিত হয়। পরবর্তীতে উপজেলার স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের উদ্যোগে তিনটি ক্লাসরুমসহ চাররুম বিশিষ্ট ভবন নির্মাণ করা হয়। এরপর ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ায় ২০১০ খ্রিষ্টাব্দে পরিত্যক্ত ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। পাশেই আরেকটি নতুন ভবন নির্মাণ করে সেখানেই পাঠদান কার্যক্রম শুরু হয়। 

বিদ্যালয়টির পরিত্যক্ত ভবন ও মালামাল গত ১৮ আগস্ট নিলামের মাধ্যমে বিক্রি করে দেয়া হয়েছে। এর আগে নিলাম বিজ্ঞপ্তি জারি করে প্রচার-প্রচারণা চালানোর জন্য স্কুলে চিঠি পাঠায় উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস। তবে সেই চিঠি পাননি দাবি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আরিফা খাতুন বলেন, নিলাম প্রক্রিয়ার সবকিছুই উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস করেছে। আমাকে কেবল একটি রেজুলেশন পাঠাতে বলা হয়েছিল। আমি তাই করেছি। এর বাইরে আর কিছু জানা নেই বলে জানান তিনি।

সরেজমিনে দেখা গেছে, চার-পাঁচজন শ্রমিক ওই ভবন থেকে টিন ও রড খুলছেন। তারা বলেন, উপজেলার বাগড়া গ্রামের নয়ামিয়ার ছেলে মিলনুর রহমান এই ভবন ও ভবনের মালামাল তাদের মহাজন আব্দুল আজিজের কাছে বিক্রি করেছেন। আর সেই মহাজনের নির্দেশে তারা কেবল ভবনটি ভাঙার কাজ করছেন।

আর মিলনুর রহমান জানান, নিলাম ডাকে অংশ নিয়ে পরিত্যক্ত স্কুল ভবনটি ক্রয় করেছি। এতে দোষের তো কিছু দেখছি না।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মিনা খাতুন জানান, কর্মস্থলে নতুন এসেছি। নথিপত্র ঘেটে দেখা গেছে যথাযথ নিয়ম মেনেই নিলাম করা হয়েছে। পরিত্যক্ত ওই ভবনটির সরকারি মূল্য ধরা হয় ২৫ হাজার ২০০ টাকা। মোট তিনজন ব্যক্তি এই নিলাম ডাকে অংশ নেন। সর্বোচ্চ হিসেবে মিলনুর রহমান ২৬ হাজার ২০০ টাকা বলায় তাকেই দেয়া হয়েছে।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. লিয়াকত আলী সেখ বলেন, সরকারি স্থাপনা নিলামের ক্ষেত্রে প্রচার-প্রচারণার পাশাপাশি গণমাধ্যমেও বিজ্ঞপ্তি দিতে হবে। তাই এই নিলামের ক্ষেত্রে সেটি করা হয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হবে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা - dainik shiksha শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা - dainik shiksha রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা ট্রেনে কাটা পড়ে স্কুলশিক্ষকের মৃত্যু - dainik shiksha ট্রেনে কাটা পড়ে স্কুলশিক্ষকের মৃত্যু গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা কাল - dainik shiksha গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা কাল শিক্ষকরাই স্মার্ট নাগরিক গড়ার কারিগর: শিল্পমন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষকরাই স্মার্ট নাগরিক গড়ার কারিগর: শিল্পমন্ত্রী এনটিআরসিএর সার্টিফিকেট সংশোধনের নতুন নির্দেশনা - dainik shiksha এনটিআরসিএর সার্টিফিকেট সংশোধনের নতুন নির্দেশনা মর্নিং স্কুলের ছয় সুবিধা উল্লেখ করলেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা - dainik shiksha মর্নিং স্কুলের ছয় সুবিধা উল্লেখ করলেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা দেড় মাস পর ক্লাসে ফিরছেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা, স্থগিত পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা - dainik shiksha দেড় মাস পর ক্লাসে ফিরছেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা, স্থগিত পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলের সংখ্যা বাড়াতে চায় সরকার - dainik shiksha অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলের সংখ্যা বাড়াতে চায় সরকার দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0023820400238037