ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় রেলওয়ে সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের পাশে আখাউড়া পৌরসভার ময়লার ভাগাড়। বছরের পর বছর ধরে সড়কের পাশে রেলওয়ে ভূমিতে পৌরসভার ময়লা আবর্জনা ফেলা হয়। ময়লার দুর্গন্ধে রেলওয়ে স্কুলসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীসহ হাজার হাজার মানুষ দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। ময়লার উৎকট দুর্গন্ধে শ্রেণিকক্ষে বসে থাকতে পারছে না শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। এ দুর্বিষহ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ প্রায় দেড় মাস আগে আখাউড়া পৌরসভার মেয়রের কাছে চিঠি দিয়ে পদক্ষেপ নেয়ার অনুরোধ করেছেন। জানিয়েছেন ইউএনও এবং শিক্ষা অফিসারকেও। কিন্তু প্রশাসনের কোনো উদ্যোগ না থাকায় এ গন্ধ থেকে মুক্তি মিলছে না কোমলমতি শিক্ষার্থীদের। এদিকে দূর্গন্ধে ক্লাসে বসে থাকতে অসুবিধা হওয়ায় ছাত্র-ছাত্রীদের দরখাস্তের প্রেক্ষিতে ৩ দিন সব ক্লাস শেষ না করেই বিদ্যালয় ছুটি দেয়া হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আখাউড়া-চান্দুরা সড়কের রেলওয়ে স্কুল সংলগ্ন ময়লার ভাগাড় রয়েছে। পৌরশহরের অন্তত ৮টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কয়েক হাজার ছাত্রছাত্রী এ সড়ক দিয়ে যাতায়াত করে। এছাড়া আখাউড়া রেলওয়ে স্টেশন এবং আজমপুর রেলওয়ে স্টেশন হয়ে প্রতিদিন কয়েকশত ট্রেন যাত্রী এ সড়ক দিয়ে যাতায়াত করে। তাছাড়া ব্যবসা-বাণিজ্য, বাজার সদায়সহ বিভিন্ন কাজে প্রতিদিন এই সড়ক দিয়ে হাজার হাজার মানুষ চলাচল করে। ময়লার ভাগাড়ের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় দুর্গন্ধে নাক চাপা দিয়ে যেতে হয়। মানুষের দম বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়ে উঠে। শুকুর দিনভর ময়লা-আবর্জনায় বিচরণ করায় দূর্গন্ধ আরো তীব্র হয়ে উঠে।
রেলওয়ে স্কুলের কয়েকজনের শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা হলে তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, স্কুলের সামনে ময়লা আবর্জনা ফেলার কারণে দুর্গন্ধে আমাদের খুব সমস্যা হচ্ছে। ক্লাসে বসে থাকতে অসুবিধা হয়। অতিরিক্ত দুর্গন্ধের কারণে বিদ্যালয় ছুটি দিয়ে দেয়ার জন্য হেড স্যারের কাছে দরখাস্ত দিয়েছি।
রেলওয়ে সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র সহকারী শিক্ষক হাবিবুর রশিদ দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, আমাদের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের নিয়ে অনেক সমস্যার মধ্যে আছি। প্রতিদিনই কেউ না কেউ অসুস্থ বোধ করছে। আমরা পড়ালেখার জন্য নিরাপদ পরিবেশ চাই।
আখাউড়া রেলওয়ে সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আসাদুজ্জামান খান দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, ময়লার দুর্গন্ধে ছাত্রছাত্রীরা শ্রেণিকক্ষে বসে থাকতে পারে না। দুর্গন্ধে ক্লাস করতে অসুবিধা হয়। ছাত্রছাত্রীরা ২-৩ টি ক্লাসের পর বিদ্যালয় ছুটি দেয়ার আবেদন করে। এজন্য ৩ দিন স্কুল ছুটি দিতে হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, এসএসসি পরীক্ষার আগে পৌরসভার মেয়রকে চিঠি দিয়ে বিষয়টি অবগত করেছিলাম। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ জানিয়েছি। এছাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবং শিক্ষা অফিসারকেও বিষয়টি অবগত করেছি। কিন্তু এ বিষয়ে কোন পদক্ষেপ দেখছি না।
জানতে চাইলে আখাউড়া পৌরসভার মেয়র তাকজিল খলিফা কাজল দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, ময়লা ফেলার জন্য আমরা জায়গা খুঁজছি। জায়গা না পাওয়া পর্যন্ত এখানেই বর্জ্য ফেলা হবে। পৌরসভা থেকে ব্লিচিং পাউডার দেয়া হবে।